কুমিল্লায় ৪ হাজার টাকার ইনজেকশন, ৩৪ হাজারে বিক্রির অভিযোগ!
Published: 11th, April 2025 GMT
কুমিল্লা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর শরীরে দেওয়া হলো ৩৪ হাজার টাকা দামের ইনজেকশন। তবে ইনজেকশন দেওয়ার পর বোতলের লেবেল খুলে দেখা গেল, ভেতরে আছে মাত্র চার হাজার টাকার একটি ওষুধ।
কুমিল্লার ‘মুন স্পেশালাইজড হসপিটাল’-এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যা নিয়ে জেলা জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়।
ভুক্তভোগী রোগীর মেয়ে ফারজানা আক্তার বিথী জানান, তিনি ছয় মাস ধরে তার মাকে ডা.
চিকিৎসক Aclasta 5mg নামের একটি ইনজেকশন প্রেস্ক্রাইব করেন, যার দাম বাজারে প্রায় ৩৮ হাজার টাকা বলে তিনি দাবি করেন। তবে চিকিৎসকের সহকারী বিজয় সরকার ইনজেকশনটি ৩৪ হাজার ৫০০ টাকায় সরবরাহ করবেন বলে জানান। চিকিৎসক তার সহকারীর মোবাইল নম্বরটি প্রেসক্রিপশনের পিছনে লিখে দেন এবং তার মাধ্যমেই ইনজেকশন প্রয়োগের কথা বলেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সকালে রোগীকে নিয়ে তারা হাসপাতালে যান। কিছু ওষুধ কিনে আনার পর চিকিৎসকের সহকারী বিজয় সরকার ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। তবে ইনজেকশনের আসল বোতল না দিয়ে মোড়ক দেখিয়ে বলেন, ‘এটাই প্যাকেট, ছবি তুলে পাঠিয়ে দিন। ইনজেকশন দিয়ে ফেলি, আমার তাড়া আছে।’
ইনজেকশন প্রয়োগের পর যখন রোগীর মেয়ে ফারজানা আক্তার বিথী ইনজেকশনের বোতলটি চেয়ে নেন, তখন দেখা যায় সেটি Aclasta নয়, বরং অন্য একটি ইনজেকশন যার বাজারমূল্য মাত্র ৪ হাজার ৮০০ টাকা। এসময় তারা বোতলটি জোর করে নিয়ে নেন এবং মোবাইলে ভিডিও করে পুরো প্রক্রিয়া ধারণ করেন।
পরবর্তীতে তারা ডা. আশরাফ উল মতিন ও হাসপাতাল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ তেমন সাড়া দেননি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ওষুধ একই, শুধু নামের পার্থক্য। প্রকৃতপক্ষে বোতলের ওপর নতুন স্টিকার লাগিয়ে ভুয়া ওষুধ চালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর পরিবারের।
এ বিষয়ে ডা. আশরাফ উল মতিন বলেন, “ঘটনার সময় আমি চেম্বারে ছিলাম না। ঘটনাটি আমার সহকারী নিজেই ঘটিয়েছে। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মুন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আব্দুল বাকি আনিসকে ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মো. বশির আহমেদ বলেন, “আমার কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/রুবেল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইনজ কশন প র র ইনজ কশন র সহক র চ ক ৎসক
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে ছুরিকাঘাত ও সংঘর্ষে দুই প্রাণহানি, আহত ৩০
নড়াইল সদরে ছুরিকাঘাতে বাসের সুপারভাইজার ও কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকালে নড়াইল শহরের নতুন বাস টার্মিনালে নড়াইল এক্সপ্রেস পরিবহনের সুপারভাইজারকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। আর কালিয়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের সময় হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুট করেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। পুলিশ ২০ জনকে আটক করেছে।
জানা যায়, নড়াইল এক্সপ্রেস পরিবহনের ওই সুপারভাইজারের নাম মোশারফ মুন্সী মুসা (৪৫)। গতকাল সকাল ৬টার দিকে তিনি নতুন বাস টার্মিনালে বসে ছিলেন। এ সময় কয়েক দুর্বৃত্ত এসে তাঁকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মুসা সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের দলজিৎপুর এলাকার শামসুর রহমান মুন্সীর ছেলে। নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, জড়িতদের শনাক্ত করতে চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, কালিয়ার কাঞ্চনপুরে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মিলন মোল্যার পক্ষের সানোয়ার মোল্যাকে মারধর করে আফতাব মোল্যার লোকজন। এর জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মিলন মোল্যার লোকজন আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। আহত ফরিদ মোল্যা (৫৭) রাত ৯টার দিকে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ২০টি বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন দেয় প্রতিপক্ষ। রাতেই যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে উভয় পক্ষের ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্য মোতায়েন রয়েছে।