‘ইসরায়েলের পণ্য বর্জনের জিহাদ শুরু করতে হবে’
Published: 11th, April 2025 GMT
স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি দাবি করে গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরায়েলের পণ্য বর্জনের মাধ্যমে জিহাদ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নেতারা।
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এ আহ্বান জানান।
ইসলামী ফ্রন্ট ঢাকা মহানগর আয়োজিত, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল হাকিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আইন সচিব অ্যাডভোকেট ইকবাল হাছান।
আরো পড়ুন:
গাজায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলা, নিহত ৩৫
গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ করায় ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর ৯৭০ কর্মীকে বহিষ্কারের হুমকি
তিনি বলেন, “এই বর্বরতা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ট উদহারণ। ফিলিস্তিনের গাজার মুসলমানদের ওপর ইহুদিদের পরিকল্পিত বর্বরোচিত হামলায় নারী-শিশুসহ মুসলিম নিধন করছে। ইহুদিরা ফিলিস্তিনকে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এখনও মুসলিম বিশ্ব নীরব। নীরব জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থা।”
তিনি বলেন, “ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে আমাদের সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অন্তত পণ্য বর্জনের মাধ্যমে জিহাদ শুরু করতে হবে।”
এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনার সিনিয়র সহসভাপতি ক্যানসার গবেষক অধ্যক্ষ ডাক্তার এম সরওয়ার।
এ সময় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর ইসলামী ফ্রন্ট নেতা কাজী শাহেদ আলম চৌধুরী, কাজী মোহাম্মদ তৈয়ব আলী, অ্যাডভোকেট লিংকন, বুলবুল আহমদ মোমেনশাহীসহ যুবসেনা ও ছাত্রসেনা নেতারা।
সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলে ‘লাখো শহীদের রক্তের ঋণ’, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘ফিলিস্তিনে হামলা কেন? জবাব চাই দিতে হবে,’ ‘বিশ্ব মুসলিম এক হও, ফিলিস্তিন রক্ষা করো’ স্লোগানে স্লোগানে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রকম্পিত হয়ে উঠে।
এ সময় নেতারা ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা, ফিলিস্তিনের নাগরিকদের ওপর চালানো গণহত্যার প্রতিবাদ ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবি তুলেন। বিক্ষোভকারীরা গাজাবাসীর নিরাপত্তা, আল আকসা পুনরুদ্ধার, মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জিহাদের আহ্বান জানান।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাইব্যুনালে ৩৩৯ অভিযোগ, ২২ মামলায় গ্রেপ্তার ৫৪
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ৩৩৯টি অভিযোগ জমা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৪১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭০ বেসামরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৬২ ও ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন। ইতোমধ্যে ৫৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা, আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো, চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ড ও রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা ব্যক্তিকে গুলি করা মামলায় তদন্ত শেষ পর্যায়ে। শিগগির এগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এক হাজারের বেশি মানুষের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। পরোয়ানা জারির পরও ৮৭ আসামি পলাতক।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড, সুপিরিয়র কমান্ড, সরাসরি সম্পৃক্ত এবং যাদের কারণে রাষ্ট্র এমন হয়েছে, তাদের আগে বিচার করতে চাই। আমরা ভুক্তভোগীদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিচার কার্যক্রমে গতি আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বেশ কিছু ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটি হতে পারে। যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। কবে নাগাদ বিচার শুরু করা যাবে– প্রশ্নে তিনি বলেন, সময় বেঁধে দিয়ে বিচার করা যাবে না। সেটি যুক্তিযুক্তও নয়।
মতবিনিময়ের শুরুতে তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেড়-দুই হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। ২৫ হাজারের মতো ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। সব ঘটনার জলজ্যান্ত প্রমাণ রয়েছে। ট্রাইব্যুনালে আমরা সেটি প্রমাণ করতে সক্ষম হবো এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোপন বন্দিশালা থেকে টাইম বোমা উদ্ধার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমিসহ গুমের মামলার তদন্তে যাওয়া দলের সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে টাইমার বোমা রাখা হয়েছিল। তবে ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত যেন ফাঁস না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, গুমের বিষয়ে আমরা উত্তরায় একটা বড় বন্দিশালায় তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক কিছু আমরা আবিষ্কার করেছি। টাইমার বোমা দেখেছি। হয়তো এ বোমা রাখা হয়েছিল তদন্তকারী দলকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে। আমাদের পরিদর্শনের ঠিক দু’দিন পর সেখানে প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শন করার কথা ছিল। তিনি অন্য জায়গায় গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন।
মতবিনিময় সভায় প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।