সংকট না থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির লিমিটেডে (সিইউএফএল) হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছে কর্ণফুলী গ্যাস ড্রিস্টিবিউশন লিমিটেড। ফলে বন্ধ হয়েছে সিইউএফএলের সার উৎপাদন। এতে দৈনিক ৩ কোটি টাকার সার উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

আজ শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) পরিচালনাধীন এ কারখানা। তবে দেশীয় কারখানাটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করলেও গ্যাস সরবরাহ সচল রেখেছে বিদেশি বিনিয়োগের কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানির লিমিটেডে (কাফকো)। 

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) নির্দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছে বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আমিনুর রহমান। তিনি জানান, বিসিআইসিসির নির্দেশনা মোতাবেক সার কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়। গ্যাস সংকটে সিইউএফএলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়নি। বিসিআইসিসির নির্দেশ বন্ধ করা হয়েছে। আবার চালু করার সিদ্ধান্ত জানালে চালু করা হবে। 

জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোবাংলার গ্যাস বিতরণ প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) থেকে ইউরিয়া উৎপাদনে গ্যাস নেয় সিইউএফএল। সিইউএফএলে দৈনিক ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেওয়া হয়। অপরদিকে কাফকোকে দেওয়া হয় ৪২ থেকে ৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট।

কারখানার উৎপাদন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমান সমকালকে বলেন, আজ সকাল ৬টা থেকে কারখানায় হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধের কারণে সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। উৎপাদন বন্ধ থাকলে দৈনিক তিন কোটি টাকার সার উৎপাদন ব্যাহত হয়। 

কি কারণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড জানাতে পারবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সচল থাকলে দৈনিক এক হাজার ৭০০ মেট্রিকটন সার উৎপাদিত হয় কারখানাটিতে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ইউএফএল স র উৎপ দ ব স আইস ব উশন

এছাড়াও পড়ুন:

গরমে লোডশেডিং হলে আগে ঢাকায় হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে যাতে লোডশেডিং কম হয় সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সরকার। যদি লোডশেডিং হয়, আগে ঢাকা শহরে হবে। পরে দেশের অন্য জায়গায় হবে। আগের মতো শুধু গ্রামে হবে না।

শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।

গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুতের লোডশেডিং সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দুইটি কারণে বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে। উৎপাদন কম হলে যদি লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন সেটি লোডশেডিং। আর ঝড় বৃষ্টিসহ কোনো কারণে যদি ফিউজ চলে যায়, ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেটি বিদ্যুৎ বিভ্রাট।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। রমজানের মতো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়তো সম্ভব হবে না। তবে আমরা চেষ্টা করবো। তবে লোডশেডিং যদি হয়, এমন হবে না যে শুধু গ্রামে লোডশেডিং হবে। ঢাকাতে প্রথমে লোডশেডিং হবে। পরে অন্য জায়গায় হবে।

তিনি বলেন, তাপমাত্রা বাড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। এ জন্য আমরা এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রিতে রাখতে বলেছি। এটা রাখতে পারলে এক-দুই হাজার চাহিদা কমবে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান উপদেষ্টা।

খাল-নালায় ময়লা ফেললে জেল-জরিমানা
এবার চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা আগের তুলনায় অনেকাংশে কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। বৃষ্টির পরিমাণ কেমন হবে তা একটা বড় ফ্যাক্টর। তবে এই দুর্ভোগ এবার অনেকটা লাঘব হবে।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন কাজের কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তবে একটা জিনিস দেখে খারাপ লাগছে, কিছুদিন আগে খাল পরিষ্কার করা হলেও সেখানে এখন আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে এই কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারি নাই। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হবে। মানুষকে সচেতন করা হবে। ময়লা রাখার বিন দেওয়া হবে। এরপরেও যদি ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানাসহ শাস্তি দেওয়া হবে।

কক্সবাজার সড়ক ছয় লেন হবে
এদিকে দুর্ঘটনাপ্রবণ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্রশস্ত করা হবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এই মহাসড়ক ছয় লেন করা হবে। তবে তা সময়সাপেক্ষ। এখানে জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সব মিলিয়ে দুই-তিন বছরের আগে হবে না। তবে এই সময় সড়কে দুর্ঘটনারোধে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অংশে সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। সতর্ক করে সাইন পোস্ট দেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতা বাড়ানো হবে। চালকদের সচেতন করা হবে।

এই সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। এরপর ডিসেম্বরে ডিপিপি প্রণয়ন করা হবে। আগামী জানুয়ারিতে জাপানের দাতা সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণ চুক্তি করার কথা রয়েছে।

রেলের শত্রু রেলের কর্মীরা
এদিকে ব্রিফিংয়ের সময় রেলওয়ে প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, রেলের শত্রু রেলের কর্মীরা। সিটি করপোরেশন রাস্তা করতে চাইলে, ওয়াসা পানি দিতে চাইলেও রেল নিতে চায় না। তবে এখন থেকে তা হবে না। সিটি করপোরেশন সিআরবিতে রাস্তা করে দেবে। ওয়াসা পানি সরবরাহ করবে। রেলের কাজ হচ্ছে ট্রেন পরিচালনা করা। প্রতিনিয়ত সেবার মান বাড়ানোর কাজ করতে হবে। রাস্তা করা ও পানি সরবরাহ করা রেলের কাজ নয়। এসব করতে গিয়ে রেলের দক্ষতা নষ্ট হয়। অর্থের অপচয় হয়।

রেল উপদেষ্টা বলেন, রেলের এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা খরচ হয়। এভাবে হলে চলবে না। এটি দুই টাকার নিচে নিয়ে আসতে হবে। আর ট্রেনের ইঞ্জিন ও কোচ সংকটে সরকার কাজ করছে।

এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সরবরাহ কমে লোডশেডিং বেড়েছে
  • পানি নেই ঝিরি-ঝরনায় সংকটে দুর্গম গ্রামবাসী
  • আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট ১৭ ঘণ্টা পর চালু
  • আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, লোডশেডিং বাড়তে পারে
  • গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত
  • যুক্তরাষ্ট্র-চীন শুল্কযুদ্ধে কতটা বাড়বে আইফোনের দাম
  • রংপুরে পাইপলাইনে গ্যাস কতদূর
  • গরমে লোডশেডিং হলে আগে ঢাকায় হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
  • গ্যাস–সংকটে সিইউএফএলে সার উৎপাদন বন্ধ