তিনি মোগল সম্রাটদের মতো পোশাক পরেন। নিজেকে তাঁদের একজন বলে দাবি করেন। এই ব্যক্তির নাম হচ্ছে প্রিন্স ইয়াকুব হাবিবউদ্দিন টুসি। থাকেন ভারতের হায়দরাবাদে। তিনি সাধারণ কোনো মানুষ নন। তিনি এমন একজন, যিনি নিজেকে মোগল বংশের উত্তরসূরি বলে দাবি করেন।

প্রিন্স ইয়াকুব এখানেই থেমে থাকেননি। নিজেকে তিনি একজন মোগল প্রিন্স বলেই পরিচয় দেন। তিনি দাবি করছেন, তিনি বাহাদুর শাহ জাফরের ষষ্ঠ প্রজন্ম। তিনি বিশ্বাস করেন, ভারতীয় ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন তাজমহলের প্রকৃত মালিক তিনি।

নিজের দাবির পক্ষে প্রিন্স ইয়াকুব হায়দরাবাদের আদালতে নিজের ডিএনএ প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন। স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতি ধরে রাখতে মোঘল সম্রাট শাহজাহানের তৈরি এই স্মৃতিসৌধ–সংক্রান্ত যেকোনো সরকারি নথি দেখাতে ২০১৯ সালে প্রিন্স ইয়াকুব জয়পুরের রাজপরিবারের প্রিন্সেস দিয়া কুমারীকেও চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।

প্রিন্স ইয়াকুব বলেছিলেন, ‘যদি তোমার ‘পথিখানা’-তে (জয়পুরের পথিখানা জাদুঘর) আসল নথিপত্র থেকে থাকে, তাহলে তা দেখাও। যদি তোমার দেহে রাজপুত রক্তের একটি ফোঁটাও থেকে থাকে, তবে সেই নথি সামনে আনো।’

তাজমহলই একমাত্র জায়গা নয়, যেটি নিয়ে প্রিন্স ইয়াকুব দাবি তুলেছেন। একসময় অযোধ্যায় অবস্থিত বাবরি মসজিদের জমির মালিকানা নিয়েও ওয়াক্‌ফ বোর্ডের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রিন্স ইয়াকুব। তিনি বলেছিলেন, যদি ওই জমির মালিকানা বাবরের হয়, তাহলে একজন মোগল বংশধরের উত্তরাধিকার হিসেবে ওই জমি তাঁরই পাওয়া উচিত।

অবশ্য এই প্রিন্স ইয়াকুব পরে সেখানে রামমন্দির নিমাণকে সমর্থন করেছিলেন। তাতেই তিনি থেমে থাকেননি। মন্দিরের জন্য ১ কোটি ৮০ লাখ রুপি দামের সোনার ইটও উপহার দিয়েছিলেন।

ওই সময় টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, তখন প্রিন্স ইয়াকুব বলেছিলেন, ‘আমি যেহেতু ওই সম্পত্তির মালিক, তাই সেখানে রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই।’

প্রিন্স ইয়াকুব বর্তমানে মহারাষ্ট্র রাজ্যে অবস্থিত সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধির মোতোয়ালি ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সপ্তদশ শতাব্দীর মোগল সম্রাটের এই সমাধি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোর ধ্বংসের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ভারতের নৃতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে এটিকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিলাসপুরে কারা–কীভাবে–কোথায় ককটেল বানান, কত টাকা পান

বালতিতে করে ককটেল নিয়ে ‘খইয়ের মতো’ ফুটিয়ে সংঘাতে জড়ানো শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়নে নতুন ঘটনা নয়। এ চিত্র অন্তত ২০ বছরের। প্রতিবছর ছয় থেকে আটবার এমন ‘ককটেল সংঘাত’ হয়। ককটেলগুলো বানানো হয় বিলাসপুরের বিভিন্ন গ্রামে। ককটেল বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে গত ১৫ বছরে একজনের প্রাণহানি এবং ৩০ জনের অঙ্গহানি হয়েছে, এমন তথ্য স্থানীয় ব্যক্তি ও পুলিশের।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ককটেল তৈরি করা, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে লুটপাট করা, সংঘর্ষে জড়ানো ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা কুদ্দুস ব্যাপারী ও জলিল মাতবর। ওই দুই পক্ষের আছে ককটেল তৈরির প্রশিক্ষিত লোক। বিলাসপুরে তৈরি করা ককটেল শুধু যে বিলাসপুরেই ব্যবহৃত হয়, এমন নয়। এসব ককটেল বিক্রি করা হয় জেলার বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের কাছে। জেলার যেখানেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, সেখানেই বিলাসপুরের ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বিলাসপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পদ্মা নদীর তীরবর্তী। ওই এলাকায় জেগে ওঠা চরের জমি দখলে নেওয়া, পদ্মা নদীর নৌপথ নিয়ন্ত্রণ, বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ, মাছ শিকার নিয়ন্ত্রণ, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সহিংসতা হয়। বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কুদ্দুস ব্যাপারী এবং পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাতবর দুটি বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তাঁদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ আছে সাবেক সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক ও ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে।

ককটেল বানান পাচু খাঁরকান্দি এলাকার এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তিনি তাঁর নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে তিনি কুদ্দুস ব্যাপারীর লোকজনকে ককটেল তৈরি করে দেন। ওই পক্ষের লোকজন গোলাবারুদ (বিস্ফোরক) এনে দেন। সেটা দিয়ে তিনি ককটেল তৈরি করেন। গোলাবারুদের সঙ্গে বাসমতী চাল, কাচ ভাঙা ও লোহার টুকরা ব্যবহার করেন। পরে এসব উপকরণ টিনের একটি কৌটায় ভরে তা স্কচটেপ দিয়ে মুড়িয়ে ককটেল বোমা তৈরি করেন। একেকটি অর্ডারে কমপক্ষে ৫০টি করে ককটেল তৈরি করা হয়। এর জন্য পারিশ্রমিক পান ২০ হাজার টাকা। গ্রামের নির্জন স্থানে, বাগানে, পদ্মা নদীর চরে বা নৌকায় বসে এ কাজ করেন।

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। শনিবার সকালে বিলাসপুর ইউনিয়নের দূর্বাডাঙ্গা এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজার জন্য সমব্যথী নারী
  • তৃণমূলের একজন কর্মীকেও হারাতে দেয়া যাবে না : রিয়াদ চৌধুরী
  • শেখ হাসিনার সন্ধান চেয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
  • কক্সবাজারের মেয়েটি
  • নড়াইলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত
  • আত্মপ্রকাশ করল নতুন দল গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি
  • ওল্ড ইজ গোল্ড, আবেগতাড়িত ভক্ত-অনুরাগীরা
  • আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের পর মা-বাবা জানলেন ভ্রূণটি অন্যের ছিল
  • বিলাসপুরে কারা–কীভাবে–কোথায় ককটেল বানান, কত টাকা পান