দিনাজপুরে জাপা নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধর ও বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভাঙার অভিযোগ
Published: 11th, April 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরামপুরে জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক সাংবাদিকের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফিজুলের (৫৫) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই সাংবাদিক গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান বিরামপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তিনি জাতীয় পার্টির বিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম জাকিরুল ইসলাম (৩২)। তিনি নয়াদিগন্ত ও সকালের সময়ের বিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাকিরুল ইসলাম নিজের কেনা ও পৈতৃক জমিতে ১২ বছরের বেশি সময় বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন। বাড়ির সীমানা নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রতিবেশী মোস্তাফিজুর রহমানের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।
জাকিরুল ইসলামের অভিযোগ, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোস্তাফিজুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে এসে বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলেন। এরপর জোরপূর্বক নতুন একটি সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এতে বাধা দিলে মোস্তাফিজুর রহমান তাঁকে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী এগিয়ে এলে তাঁকেও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন।
জাকিরুল ইসলাম জানান, এর আগে ৯ এপ্রিল সকালে মোস্তাফিজুর রহমান একইভাবে জোর করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের চেষ্টা করেন। পরে ওই দিন দুপুরে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক নুজহাত তাসনিমের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ইউএনও অভিযোগ তদন্তের জন্য পৌরসভার নকশাকার মো.
এ বিষয়ে জানতে মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক বলেন, বসতবাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভাঙার অভিযোগে গতকাল রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হবে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম স ত ফ জ র রহম ন জ ক র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ‘হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া’ অদম্য লিতুন
যশোরের মণিরামপুরে ‘হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া’ সেই অদম্য মেধাবী লিতুন জিরা চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। মণিরামপুর উপজেলার গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন লিতুন জিরা। তার পরীক্ষার কেন্দ্র উপজেলার নেহালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) প্রথম দিনে ইউএনও নিশাত তামান্না পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে লিতুন জিরাকে দেখে অভিভূত হন। লিতুন জিরার এগিয়ে যাওয়ার পথে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাসও দেন ইউএনও।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার সাতনল খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগম দম্পতির দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছোট লিতুন জিরা। বড় ছেলে ঢাকার একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ছেন। লিতুন জিরা পিইসি (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা) ও জেএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর, প্রাথমিকে বৃত্তি লাভ, শ্রেণির সেরা শিক্ষার্থীর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চায়ও রেখেছেন চমক জাগানো অবদান।
লিতুন জিরার একাগ্রতা আর অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা হার মেনেছে। উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি বা পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রমেও স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।
অদম্য ইচ্ছা শক্তিতে সব বাধা টপকে সমাজের অন্যদের মতই এগিয়ে চলেছেন লিতুন জিরা। বরং এক্ষেত্রে স্বাভাবিক শিশুর চেয়েও দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে চলেছেন লিতুন। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে পর পর দুই বছর লিতুন জিরা উপজেলা পর্যায় মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন, ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রচনা প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন, একই সালে জাতীয় শিশু-কিশোর প্রতিযোগিতায় গোল্ড মেডেল অর্জনসহ একই বছরের ৪ জানুয়ারি লিতুন জিরা খুলনা বেতারে গান গাওয়ার সুযোগ পান।
লিতুন জিরার মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ে লিতুন জিরার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় অনেক রাত চোখের পানিতে ভাসিয়েছি। যার দুই হাত-পা নেই; সেই মেয়ে বড় হয়ে কিইবা করতে পারবে- এমন অজানা শঙ্কায় আঁতকে উঠতাম। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের পড়ালেখার প্রবল আগ্রহ ও মেধার স্বাক্ষরতায় সেই আশংকা আজ আশার আলোয় রূপ নিয়েছে।
ঢাকা/রিটন/এনএইচ