রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত এবং বিনা অনুমতিতে ভিডিও ধারণের অভিযোগে দুই বহিরাগত শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর সংলগ্ন রাস্তায় ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনা ঘটে।

আটক দুই বহিরাগত হলেন, বরেন্দ্র কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব এবং শাহ মখ্দুম কলেজের একই বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়াম আল হাসান।

আরো পড়ুন:

এসএসসি পরীক্ষা: কুমিল্লায় ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী বেশি ২৯ হাজার

ইউএনওকে প্রত্যাহারে ডিসির কাছে শিক্ষার্থীদের আবেদন

ভুক্তভোগী ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গতাকল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই ছাত্রী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক পার হয়ে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে দিকে এগোলে তিনটি মোটরসাইকেলে আসা বহিরাগতরা ওই ছাত্রীকে অনুসরণ করেন। এতে তিনি ভয় পেয়ে চিৎকার দেন। 
অভিযোগ অনুযায়ী,  তখন মোটরসাইকেলে থাকা কয়েকজন ওই ছাত্রীকে শিক্ষার্থীকে জানান, পেছন থেকে একটি ছেলে তার ভিডিও করছিল। পরে তারা ভিডিও ধারণকারী দুজনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে যায়। সেখানে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ভুক্তভোগী, মোটরসাইকেল আরোহী ও অভিযুক্তদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। 

মোটরসাইকেল আরোহীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ইভটিজিং করা ও ভিডিও ধারণকারী দুজনকে মতিহার থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, “আমার ক্যাম্পাসকে আমি নিজের বাড়ি মনে করি। কিন্তু বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে হাঁটার সময় দুজন ছেলে পেছন থেকে বাজেভাবে আমার ভিডিও ধারণ করেন। এতে আমি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যাই। তখন আমি চিৎকার করি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করার ঘটনায় তিনজনকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং ভিডিও ধারণকারীদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকগুলোতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।

নগরের মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।”

ঢাকা/ফাহিম/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক ওই ছ ত র দ জনক

এছাড়াও পড়ুন:

রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন

এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।

আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ