মডেল মেঘনা আলমকে অপহরণের যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি)। তাঁকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়ার কারণ জানিয়ে শুক্রবার গণমাধ্যমে একটি বার্তা পাঠিয়েছে ডিএমপি।

এতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্ক মিথ্যাচার ছড়ানোর মাধ্যমে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতির অপচেষ্টা এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মেঘনা আলমকে সকল আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁকে অপহরণ করার অভিযোগ সঠিক নয়। আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার তাঁর রয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে মেঘনা আলমের লাইভ চলার মধ্যেই তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী বাসার ‘দরজা ভেঙে’ পুলিশ পরিচয়ধারীরা ভেতরে প্রবেশের পরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়। ১২ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা লাইভটি এরপর ডিলিটও হয়ে যায়। ওই দিন রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাসা থেকে তাঁকে আটকের পর কারাগারে পাঠানো হয়। মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী এ মডেলকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার রাতে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন। শুক্রবার আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিটেনশন আইনে সরকার কোনো ব্যক্তিকে আদালতের আনুষ্ঠানিক বিচার ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আটক বা বন্দি করতে পারে। এ ধরনের আইন সাধারণত জননিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে প্রয়োগ করা হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ১০টায় মেঘনা আলমকে আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। পরে ডিবি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতের আদেশের বরাতে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২ (এফ) ধারায় জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত করার জন্য এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(১) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে মেঘনা আলমকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আটকাদেশ স্বাক্ষরের দিন থেকে ৩০ দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেওয়া হয়। পরে তাঁকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। 

তাকে আটকের বিষয়ে ভাটারা থানার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বুধবার মেঘনা আলমকে আটকের জন্য বসুন্ধরা এলাকায় এসেছিলেন। সঙ্গে ভাটারা থানার পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন। প্রথমে তিনি দরজা খুলতে চাননি। পরে তাকে আটক করে মিন্টো রোডে নিয়ে যাওয়া হয়।

মডেল ও মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেঘনা আলম ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর মিস আর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপহরণ ড এমপ র জন য আটক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমকে কারাগারে পাঠানোয় অ্যামনেস্টির উদ্বেগ

বিশেষ ক্ষমতা আইন ব্যবহার করে মডেল মেঘনা আলমকে আটকের পর কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। শুক্রবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অফিস নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে।

পোস্টে বলা হয়েছে, এ কালো আইন ঐতিহাসিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে অভিযোগ ও বিচারিক তত্ত্বাবধান ছাড়াই নির্বিচার আটকের জন্য ব্যবহার করা হয়ে আসছে। এসব কাজের মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়াগত সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মান ও প্রয়োগ গুরুতরভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটির পোস্টে আরও বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেঘনা আলমকে গোপনীয়তার সঙ্গে আটক করা হয়েছে। তাঁকে আটক করার পরোয়ানা ছিল না বলেও অভিযোগ রয়েছে। এটা পদ্ধতিগত সুরক্ষার উদ্বেগজনক লঙ্ঘন।

অ্যামনেস্টি বলছে, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের আহ্বান, হয় মেঘনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অপরাধের অভিযোগ আনুন অথবা তাঁকে মুক্তি দিন।’ সেই সঙ্গে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ব্যবহার বন্ধ এবং আইনটি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এর আগে বুধবার রাতে মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে। মেঘনা তখন ফেসবুক লাইভ এসে দাবি করেন, তিনি নিরপরাধ।

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন অনুযায়ী, ক্ষতিকর কাজ থেকে নিবৃত্ত রাখার জন্য সরকার যেকোনো ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দিতে পারে।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের যেসব ক্ষতিকর কাজে যুক্ত ব্যক্তিকে আটক আদেশ দেওয়া যায়, সেগুলো হলো দেশের সার্বভৌমত্ব বা প্রতিরক্ষার ক্ষতি, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সংরক্ষণের ক্ষতি, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বা জননিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ক্ষতি, বিভিন্ন সম্প্রদায়, শ্রেণি বা গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণাবোধ বা উত্তেজনা সৃষ্টি, আইনের শাসন বা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ বা উৎসাহ প্রদান বা উত্তেজিত করা।

আরও পড়ুনমডেল মেঘনা আলমকে ‘নিরাপত্তা হেফাজতে’ রাখার কারণ হিসেবে যা বলল পুলিশ১২ ঘণ্টা আগে

ক্ষতিকর কাজের মধ্যে আরও রয়েছে জনসাধারণের জন্য অত্যাবশ্যক সেবা বা অত্যাবশ্যক দ্রব্যাদি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি, জনসাধারণ বা কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি বা আতঙ্ক সৃষ্টি এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বা আর্থিক ক্ষতি করা।

আরও পড়ুনমডেল মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ৮ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতি প্রশ্নবিদ্ধ
  • স্কুলছাত্রী অপহরণের মামলা করায় পরিবারকে হুমকি
  • মেঘনা আলমের পূর্বপরিচিত দেওয়ান সমির ৫ দিন রিমান্ডে
  • মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কারাগারে পাঠানোয় অ্যামনেস্টির উদ্বেগ
  • বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমকে কারাগারে পাঠানোয় অ্যামনেস্টির উদ্বেগ
  • মেঘনা আলমকে অপহরণের অভিযোগ সঠিক নয়: পুলিশ
  • অভিনেত্রী মেঘনা আলম ডিটেনশন আইনে কারাগারে
  • অভিনেত্রী মেঘনা আলম  ডিটেনশন আইনে কারাগারে
  • সুন্দরবনে অপহৃত ছয় নারীসহ ৩৩ জেলে উদ্ধার