সৌদি আরবের দুটি সিদ্ধান্ত এবার বেসরকারি হজযাত্রীদের পবিত্র হজ পালনের ক্ষেত্রে ভোগান্তির কারণ হতে পারে। দেশটির সরকার বলেছে, এ বছর প্রতিটি হজ এজেন্সিকে সর্বনিম্ন এক হাজার ব্যক্তিকে হজ পালনের উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতে হবে; আগে যা ছিল সর্বনিম্ন ২৫০ জন।

এ ছাড়া ১৫ বছরের কম বয়সীদের হজ পালনে সৌদি সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর ফলে ১৫ বছরের কম বয়সী ৬০০ নিবন্ধিত হজযাত্রীর অভিভাবকেরা টাকা জমা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন। আবার হজ এজেন্সিগুলো এই টাকা খরচ করে এখন চাপে পড়েছে।

সৌদি সরকারের এই দুটি সিদ্ধান্ত ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় মেনে নেওয়ায় এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সদস্য আল কুতুব হজ ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী হাবীবুল্লাহ মোহাম্মদ কুতুবউদ্দিন আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, একদিকে মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত শিশু হজযাত্রীদের টাকা ফেরত দিতে এজেন্সিগুলোর ওপর চাপ তৈরি করছে। আবার শিশু হজযাত্রীর পরিবর্তে প্রাক্‌-নিবন্ধিত হজযাত্রী প্রতিস্থাপন করার কথা বলছে।

কুতুবউদ্দিন বলেন, ‘এই সময়ে প্রাক্‌-নিবন্ধিত হজযাত্রী আমরা কোথায় পাব। তা ছাড়া শিশু হজযাত্রীর কাছ থেকে আমরা যে টাকা নিয়েছি, তার বড় অংশ সৌদি সরকারের কাছে গেছে। কিছু টাকা বাড়ি ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক কাজে জমা হয়েছে। সেটা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আমরা ওই টাকা কীভাবে ফেরত দেব।’

হাব সূত্র জানিয়েছে, এ বছর নিবন্ধিত হজ এজেন্সির সংখ্যা ৭৫৩। কিন্তু ‘কোটা’র কারণে এবার মাত্র ৭০টি এজেন্সিকে প্রায় ৮২ হাজার হজযাত্রীর সেবা দেওয়ার বিশাল দায়িত্ব পালন করতে হবে, যা খুবই কঠিন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এমন পরিস্থিতিতে হজ-সংশ্লিষ্ট অনেকের আশঙ্কা, সৌদি সরকারের নতুন বিধিনিষেধের কারণে এবার নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে আবাসন, পরিবহন, খাওয়া এবং শারীরিক অসুস্থতায় হজযাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হতে পারেন। সৌদি সরকারের নতুন আইনে এজেন্সিপ্রতি কোটা এক হাজার নির্ধারণ করে দেওয়ায় এবার হাজিরা উপযুক্ত সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজে যাবেন। এর মধ্যে বেসরকারিভাবে ৮১ হাজার ৯০০ জন এবং সরকারিভাবে ৫ হাজার ২০০ জন হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। এজেন্সিপ্রতি এক হাজার হাজির কোটার কারণে এবার ৭০টি লিড এজেন্সির মাধ্যমে প্রায় ৮২ হাজার ব্যক্তি হজে যাচ্ছেন। ৭০টি এজেন্সির জন্য এত বিপুলসংখ্যক হজযাত্রীর দেখাশোনা, থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসাসহ সার্বিক সেবাদান জটিল আকার ধারণ করতে পারে। ২৯ এপ্রিল থেকে হজযাত্রা শুরু হবে।

হাব সূত্র জানিয়েছে, এ বছর নিবন্ধিত হজ এজেন্সির সংখ্যা ৭৫৩। কিন্তু ‘কোটা’র কারণে এবার মাত্র ৭০টি এজেন্সিকে প্রায় ৮২ হাজার হজযাত্রীর সেবা দেওয়ার বিশাল দায়িত্ব পালন করতে হবে, যা খুবই কঠিন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

মন্ত্রণালয়ের নীতিমালায় আছে, প্রতিটি এজেন্সি ন্যূনতম ১০০ থেকে ৩০০ হজযাত্রী নিতে পারবে। এখন তা হয়ে গেল সর্বনিম্ন এক হাজার। এতে হাজিদের সেবার মান কী হবে, সে প্রশ্ন উঠেছে।ফরিদ আহমেদ মজুমদার, হাবের মহাসচিব

হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘হজযাত্রীদের নিবন্ধন শেষ হওয়ার পর সৌদি সরকার কোটা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এ ব্যাপারে আমাদের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোনো গাইডলাইন ছিল না। মন্ত্রণালয়ের নীতিমালায় আছে, প্রতিটি এজেন্সি ন্যূনতম ১০০ থেকে ৩০০ হজযাত্রী নিতে পারবে। এখন তা হয়ে গেল সর্বনিম্ন এক হাজার। এতে হাজিদের সেবার মান কী হবে, সে প্রশ্ন উঠেছে।’

৭০টি লিড এজেন্সির অধীন ৮২ হাজার হজযাত্রী

এত দিন একেকটি হজ এজেন্সি নিম্নে আড়াই শ থেকে তিন শ-সাড়ে তিন শ বা তারও বেশি হাজি নিত। এ বছর তিন-চার-পাঁচটি এজেন্সি মিলে একটিকে ‘লিড এজেন্সি’ ধরে হজযাত্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করছে। এ বছর বেসরকারিভাবে যে ৮১ হাজার ৯০০ জন হজে যাবেন; সৌদি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তাঁদের যাবতীয় কাগজপত্র ওই ৭০টি ‘লিড এজেন্সির’ নামে হচ্ছে।

রাজধানীর বিজয়নগরের ‘হাজারি হজ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’–এর স্বত্বাধিকারী হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবাই তো চায় তার এজেন্সির মাধ্যমে হাজি যাক। ফলে সবাই “লিড এজেন্সি” হতে চায়। এ অবস্থায় আমরা লটারির মাধ্যমে লিড এজেন্সি ঠিক করেছি। আমার এজেন্সি থেকে এ বছর ১৮৮ জন হজে যাবেন। এক হাজারের কোটা পূরণ করতে আমরা চারটি এজেন্সি মিলে এবার হজযাত্রী পাঠাচ্ছি।’

এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজে যাবেন। এর মধ্যে বেসরকারিভাবে ৮১ হাজার ৯০০ জন এবং সরকারিভাবে ৫ হাজার ২০০ জন হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন নিয়মে হজযাত্রী পাঠানোর সম্ভাব্য ঝুঁকি কী কী, সে সম্পর্কে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মহলে নানা ধরনের আলোচনা চলছে। আগে প্রতিটি হজ এজেন্সির পক্ষে একজন ‘মোনাজ্জেম’ (কন্ট্রাক্ট পারসন) সৌদি সরকারের অনুমোদন ও ভিসা পেত। এই মোনাজ্জেম নির্ধারণ বাধ্যতামূলক। কারণ, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য মোনাজ্জেম ঠিক করা, সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করা, বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য কাজের জন্য মোনাজ্জেমদের সৌদি আরব যেতে হয়। হজযাত্রীদের সেবা ও ব্যবস্থাপনার জন্যও তাঁদের থাকতে হয়। অতীতে কয়েক শ হজ এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়া হজযাত্রীরা মোনাজ্জেমদের মাধ্যমে নানা ধরনের সেবা পেতেন। এবার ৭০টি এজেন্সির পক্ষে মাত্র ৭০ জন মোনাজ্জেম নির্দিষ্ট হওয়ায় প্রায় ৮২ হাজার হজযাত্রী প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো.

মঞ্জুরুল হক (হজ অধিশাখা) প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোনাজ্জেমের সংখ্যা কমলেও প্রতি ৪৬ জন হজযাত্রীর জন্য আমরা একজন করে গাইড দিচ্ছি। তাঁদের আলাদা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এর সঙ্গে এজেন্সির মালিকেরাও থাকছেন।’

কোটা কেন করল সৌদি

সৌদি সরকার কেন এই এজেন্সি কোটা নির্ধারণ করে দিচ্ছে? এ বিষয়ে হজ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও এ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কার্যত হজের সময় দাপ্তরিক কাজের চাপ বা ঝামেলা এড়াতে সৌদি সরকার এই কোটা নির্ধারণ করেছে। হজযাত্রীদের জন্য সেবাদানকারী কোম্পানি নির্বাচন, তাঁবুর এলাকা সংরক্ষণ, মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি-হোটেল ভাড়া, ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। এজেন্সি সংখ্যা থাকলে এসব কাজে তাদের হিমশিম খেতে হয়। এ বছর প্রতিটি এজেন্সিকে ন্যূনতম এক হাজার জন হাজির কোটা নির্ধারণ করে দিয়ে কার্যত সৌদি সরকার ‘মোনাজ্জেম’ সংখ্যা কমিয়েছে। এই মোনাজ্জেমরাই হজযাত্রীদের বিষয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে আনুষঙ্গিক নানা বিষয়ে যোগাযোগ রক্ষা করেন। এতে সৌদি সরকারের কাজ সহজ হয়েছে, কিন্তু ঝামেলা বেড়েছে হজ এজেন্সি ও যাত্রীদের।

গত ৯ ডিসেম্বর সৌদি সরকারের হজমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত অনুরোধসহ ডিও লেটার পাঠান। তার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি সরকার এজেন্সি কোটা দুই হাজার থেকে কমিয়ে এক হাজার নির্ধারণ করে। আ ফ ম খালিদ হোসেন, ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা

জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে সৌদি সরকার এজেন্সিপ্রতি বড় সংখ্যায় কোটা নির্ধারণের চেষ্টা করছিল। কিন্তু সৌদি সরকারের হজ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের আগের কর্তৃপক্ষের নিবিড় যোগাযোগ ও চেষ্টা-তদবিরে তা থামানো গেছে। এবার সরকার বা হাব-এর নতুন কর্তৃপক্ষের দিক থেকে সে ধরনের কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান ছিল না।

অবশ্য এ বিষয়ে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের বলেছেন, এজেন্সি কোটা ন্যূনতম ৫০০ করার জন্য তিনি সৌদি সরকারের হজমন্ত্রীর সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক, ডিও লেটার দিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। তদুপরি সৌদি সরকার এজেন্সি কোটা দুই হাজার নির্ধারণ করে চিঠি দেয়। এ পর্যায়ে তিনি সর্বশেষ গত ৯ ডিসেম্বর সৌদি সরকারের হজমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত অনুরোধসহ ডিও লেটার পাঠান। তার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি সরকার এজেন্সি কোটা দুই হাজার থেকে কমিয়ে এক হাজার নির্ধারণ করে।

হজ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যেসব কর্মকর্তা ঢাকায় এবং সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছেন, তাঁদের অনেকের অনিয়ম ও অবহেলায় বর্তমান সংকটের তৈরি হয়েছে।

হাব-এর সদস্য হাবীবুল্লাহ মোহাম্মদ কুতুবউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে আমার কাছে মনে হচ্ছে, সরকারের কর্মকর্তারা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ হোক, তাঁরা চান না।’

অবশ্য মন্ত্রণালয়ের হজ অধিশাখার কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কোটা নির্ধারণের বিষয়টা পুরোপুরি সৌদি সরকারের। ধর্ম উপদেষ্টা দুবার চিঠি লিখে সৌদি সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা বিনয়রে সঙ্গে ‘না’ করেছেন।

বর্তমানে কোটা নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে এবং হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে যেসব কথা বলা হচ্ছে, তাতে হজ ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের দায় দেখেন না মঞ্জুরুল হক।

এখনো বাড়িভাড়া হয়নি সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রীর

গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছিলেন, ১০ হাজার ৪৮৭ জন হজযাত্রীর বাড়িভাড়া ও পরিবহন চুক্তি হয়নি। তাঁদের হজে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। তিনি হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, যদি কোনো এজেন্সি নিবন্ধিত ব্যক্তিকে হজে পাঠাতে না পারে, তাদের লাইসেন্স বাতিল, জামানত বাতিল ও ফৌজদারি মামলা করা হবে। বিষয়টির দ্রুত সমাধানের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে হাবের শীর্ষ নেতৃত্ব ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, নয়টি এজেন্সিকে সৌদি আরবের মক্কায় ও মদিনায় ১০ হাজার ৪৮৭ জন হজযাত্রীর বাড়িভাড়া ও পরিবহন চুক্তি না করায় আটবার তাগিদপত্র দিয়ে সর্বশেষ গত ৮ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয় জরুরি নোটিশ দেয়। এর মধ্যে হাব-এর বর্তমান সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারওয়ারের চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসও ছিল। গত রাত পর্যন্ত নয়টি এজেন্সির মধ্যে ছয়টি তাদের হজযাত্রীর বাড়িভাড়া ও পরিবহন চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এখনো তিনটি এজেন্সির সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রীর বাড়িভাড়া হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সংকটের জন্য ‘মোনাজ্জেম’ জটিলতা অনেকাংশে দায়ী। কারণ, এত দিন শত শত হজ এজেন্সি হাজি নিত। প্রতিটি হজ এজেন্সির পক্ষে একজন করে নির্ধারিত ‘মোনাজ্জেম’ হিসেবে সহজে সৌদি আরবের ভিসা পেতেন। তাঁরা সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি, বাড়িভাড়া ও পরিবহন চুক্তি সম্পন্ন করতেন। এবার ৭০টি লিড এজেন্সির কারণে সে সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। নিবন্ধিত হজ এজেন্সির মালিক হয়েও অনেকে ভিসা জটিলতায় পড়ে হজযাত্রীদের নানা সেবা এখনো নিশ্চিত করতে পারেননি।

হাব-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার মনে করেন, এবার যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, এর কারণ কিন্তু ওই কোটা। হজযাত্রীর বাড়িভাড়া ও পরিবহন চুক্তির দায়িত্ব তো লিড এজেন্সির। সে কারণে সমন্বয়কারী এজেন্সি সেভাবে সহযোগিতা করতে পারছে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ জ র হজয ত র র ও পর বহন চ ক ত প র য় ৮২ হ জ র হজয ত র দ র হজয ত র র ব সরক র র হজ প রথম আল ক সরক র ভ ব কর মকর ত দ র জন য এক হ জ র উপদ ষ ট ন য নতম ব সরক র জ মদ র হ ব এর জ র জন এ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

চাল না পেয়ে জেলেদের ইউপি পরিষদ ঘেরাও

বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল না পেয়ে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ জেলে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার জালিয়াঘাটাস্থ সরল ইউপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন জেলেরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ওই ইউপি কার্যালয় ঘেরাও করেন তারা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জেলেরা সরল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তারের অপসারণ ও বিচার দাবি করেন।

জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে ৬৯১ জন জেলের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে দুই মাসের জন্য ৮০ কেজি করে ৩৩ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার ২৬ টন চাল উত্তোলন করে বাকি চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নুরুল ইসলাম নামের এক জেলে। রোববার জেলেদের চাল বিতরণের নির্ধারিত তারিখ ছিল। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে কয়েকশ জেলে পরিষদে চাল নিতে গেলে তাদের ফেরত দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা।

জেলে নুরুল ইসলাম জানান, জেলেদের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে ৮০ কেজি চাল বরাদ্দ হলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একবার ৩২ কেজি চাল দিয়ে বাকি চাল আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে অনেক জেলে সেই ৩২ কেজিও পাননি। চাল না পেয়ে তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সরল ইউনিয়নের জেলে মনির উদ্দিন, মোহাম্মদ তৈয়ব, বাবুল দাশ, আবদুল আজিজ, মোহাম্মদ হাসানের ভাষ্য, মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও কাউকে কাউকে ২৮ কেজি ও ৩২ কেজি চাল দেন। অধিকাংশ জেলেকে চাল না দিয়ে ফেরত দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিবের জন্য বরাদ্দ করা ভিজিএফের চাল অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, সরল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তারকে অনিয়ম দুর্নীতিতে সহযোগিতা করছেন সরল থেকে বদলি করা ইউপি সচিব হারুন। কিছু দিন অরুণ জয় ধর নামে শীলকূপ ইউনিয়নের সচিবকে সরল ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলেও বর্তমানে রহিম উল্লাহ নামে একজনকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরও পাসওয়ার্ডসহ পুরো নিয়ন্ত্রণ হারুনের হাতে। সরলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজেকে সরকারের একজন সচিবের চাচি বলেও পরিচয় দিচ্ছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার জানান, জেলেদের জন্য তিনি ২৮ কেজি করে চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। তিনি ৩৮ কেজি করে দিয়েছেন। যেসব জেলে এখনও চাল পাননি, তারাও চাল পাবে। সেলিম নামে একজন ইউপি সদস্য লোকজনকে উস্কে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেন তিনি।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামশেদুল আলম জানান, সরল ইউনিয়নে জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ