ওনানার মারাত্মক দুই ভুলে ইউরোপায় ড্র করল ইউনাইটেড
Published: 11th, April 2025 GMT
ম্যাচের আগে নেমানিয়া ম্যাটিচ বলেছিলেন, “আন্দ্রে ওনানা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে গোলরক্ষক।” সেই কথাটাকেই যেন সত্য প্রমাণ করলেন ক্যামেরুন জাতীয় দলের এই কিপার। তাঁর করা বড় দুটি ভুলেএ মাশুল দিতে হয়েছে রেড ডেভিলদের। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ইউরোপা লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে অলিম্পিক লিওর বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের।
পার্ক অলিম্পিক লিওনিসে ওনানার প্রথম ভুলে ম্যাচের ২৫ মিনিটে গোল হজম করে রেড ডেভিলরা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে সেই গোল শোধ করেন ইউনাইটেড ডিফেন্ডার লেনি ইউরো। নাটকে ভরা ম্যাচের ৮৮ মিনিটে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। তবে যোগ করা সময়ের পঞম মিনিটে দ্বিতীয়বার মারাত্বক ভুল করে বসেন ওনানা। তাতে ২-২ গোলে ড্র করে ফিরতে হয় রুবেন আমোরিমের শিষ্যদের।
ওনানা ম্যাচের আগে বলেছিলেন, “লিওর তুলনায় ইউনাইটেড অনেক ভালো দল”, যা দুই পক্ষের মধ্যে বাকযুদ্ধের সৃষ্টি করে। এই কথার প্রেক্ষিতে সাবেক ইউনাইটেড এবং বর্তমান লিও মিডফিল্ডার ম্যাটিচ বলেছিলেন, “আন্দ্রে ওনানা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে গোলরক্ষক।” ম্যাটিচের ধারণা যে ভুল না, তা প্রমাণ ক্রেছে ওনানার পারফরম্যান্স।
যদিও ইউনাই টেডের পর্তুগিজ আমোরিমকে ম্যাচ শেষে খুব একটা বিচলিত মনে হচ্ছিলেন না। কারণ তিনি জানেন যে গ্রীষ্ম দলবদল আসার আগ পর্যন্ত এই গোলরক্ষককে নিয়েই তাঁর চালতে যেতে হবে। আমোরিম বলেন, “ফুটবলে অনেক ম্যাচ খেলতে হয়, ভুল হতেই পারে। যদি পুরো মৌসুম দেখি, তাহলে আমিও গত কয়েক মাসে ওদের চেয়ে বেশি ভুল করেছি। এখন আমাদের সামনে আরেকটা ম্যাচ আছে, সেখানেই মন দিতে হবে। ইউরোপে অ্যাওয়ে ম্যাচে ড্র করাও কঠিন।”
ইউনাইটেডের ভালো পারফরম্যান্স ওনানার ভুলে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। রেড ডেভিলদের কোচ তাঁর গোলরক্ষককের পাশে দাঁড়ালেও হতাশা গোপন করতে পারেননি, “সবচেয়ে ভালো উপায় হলো গোলগুলো দেখা, সব অ্যাকশন বিশ্লেষণ করা। এটাই একজন খেলোয়াড়কে সাহায্য করার সেরা উপায়। আমার এখন ওনানাকে বলার কিছুই নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বাভাবিক থাকা এবং যখন সময় আসবে, আমি সেরা একাদশ বেছে নেব। তবে আমি ওর (ওনানা) ওপর যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড র কর গ লরক ইউন ই
এছাড়াও পড়ুন:
এবার জিমন্যাস্টিকসে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী!
ইংল্যান্ডপ্রবাসী হামজা দেওয়ান চৌধুরীর আবির্ভাবের পর বাংলাদেশের ফুটবলের চেহারা বদলে গেছে। প্রিমিয়ার লিগ খেলা এ তারকার লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর পর কানাডাপ্রবাসী সামিত সোমও আগ্রহ দেখিয়েছেন। ইতোমধ্যে তাঁর পাসপোর্ট করার কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। ফুটবলের বাইরে অন্য ফেডারেশনগুলোতে প্রবাসী খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করার জন্য চিঠি দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তাদের চিঠি দেওয়ার আগে জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন খুঁজে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী জ্যাক আশিকুল ইসলামকে। বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখা এ অ্যাথলেটের পাসপোর্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন। ইতোমধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে চিঠিও দিয়েছে তারা।
ছেলেদের ছয়টি ইভেন্টের মধ্যে জ্যাক আশিকুল তিনটিতে বেশ ভালো। পোমেল হর্স, ফ্লোর এবং ভল্টিং ইভেন্টে তিনি অসাধারণ শৈলী দেখিয়ে মুগ্ধ করেছেন বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন কর্তাদের। ভিডিওতে তাঁর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হলেও পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এ অ্যাথলেটকে ঢাকায় এনে ট্রায়াল দিতে চায় ফেডারেশন। ‘আগে তার পাসপোর্ট হোক। তার পরই দেশে এনে তাকে আমরা দেখব। ভিডিওতে যা দেখেছি, আশা করি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের তারকা সে হতে পারবে’–আত্মবিশ্বাসের সুরে গতকাল সমকালকে জানান বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জামিল।
তবে কবে নাগাদ জ্যাক আশিকুলকে পাওয়া যাবে, সেটি এখনই বলতে পারছেন না জামিল। সামনে কমনওয়েলথ, এশিয়ান গেমসে তাকে পাওয়া যাবে বলে বিশ্বাস জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের, ‘এটি বলা যাচ্ছে না। কারণ, সবকিছু নির্ভর করছে তার পুরো প্রক্রিয়ার ওপরে। প্রক্রিয়াগুলো একটু জটিল। অনেক ধাপ আছে। এশিয়ান গেমসের মতো আসরগুলোতে তাকে পাওয়া গেলে আমাদের দলটা শক্তিশালী হবে।’ প্রতিনিয়ত আশিকুলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন জামিল। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এ জিমন্যাস্টও বাবার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে মুখিয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন জামিল, ‘বাংলাদেশে খেলার জন্য সে খুবই আগ্রহী। তার মধ্যে অন্যরকম রোমাঞ্চ কাজ করছে। আমার সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখে চলেছে সে।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ যাতে ভালো করে সেই জন্য সরকারও চাচ্ছে ভালো মানের প্রবাসীরা যেন এই দেশে আসেন। স্বপ্ন জাগিয়েও নিউজিল্যান্ডপ্রবাসী জিমন্যাস্ট আলী কাদের বেশি দিন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেননি। ২০২২ কমনওয়েলথ এবং একই বছর তুরস্কে অনুষ্ঠিত ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে অংশ নেওয়া আলী কাদের পরবর্তীতে হারিয়ে যান। এরপর থেকেই বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন নতুন প্রবাসীর সন্ধানে নামে। তারই ধারাবাহিকতায় খুঁজে পায় জ্যাক আশিকুল ইসলামকে। ১৮ বছর বয়সী এ তরুণ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। তাঁর বাবা আশিকুল ইসলামের বাড়ি রংপুরে। মা আমেরিকান। মূলত চাচার মাধ্যমে জ্যাক আশিকুলের সন্ধান পায় বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন। আশিকুলের খেলার ভিডিওগুলো দেখে ভালো লেগেছে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জামিলের।
গতকাল সমকালের সঙ্গে নতুন এ প্রবাসী সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গত বছরের মে মাসের দিকে যোগাযোগ হয়েছে। তার পরে দেশের পট পরিবর্তনের কারণে অনেক দিন যোগাযোগ বন্ধ ছিল। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। এখন কাজটা দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ার সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। এখন তার পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আমি যতটুকু তার পারফরম্যান্স দেখেছি তাতে সন্তুষ্ট বলা যায়। আমি বলব না, একেবারে অলিম্পিক লেভেলের। সাইক সিজার যখন খেলছিল সে অন্য লেভেলের ছিল। জ্যাক ইসলামের মাত্র ১৮ বছর বয়স। এখনও ইয়ং। তার মধ্যে ভালো সম্ভাবনা আছে। পারফরম্যান্স যতটুকু দেখলাম, আমাদের জাতীয় দল যেটা করছে, তাদের মতোই কিংবা তাদের চেয়ে একটু ভালো বলা যায়।’
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আলোচিত অ্যাথলেট ছিলেন জিমন্যাস্ট সাইক সিজার। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এ অ্যাথলেট ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তিনি ভোল্ট, ফ্লোর এবং অলরাউন্ড ইভেন্টে পারদর্শী ছিলেন। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের জিমন্যাস্ট দলের সহকারী কোচ ছিলেন সিজার। তাঁর মতো প্রতিভাবান না হলেও জ্যাক আশিকুল ইসলামকে নিয়ে আশাবাদী জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন।