বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক তরুণী ও তাঁর বোনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকার দোহার উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার রামনাথপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পারভীন আক্তার অভিযোগ করেন, ঘটনার পর দোহার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রাতেই ওই ঘটনার কথা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পারভীনের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায়। বর্তমানে তিনি বোনের বাড়ি দোহারের রামনাথপুরে থাকেন।

পারভীন আক্তার বলেন, বিলাশপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দেওয়া শাজাহান মাঝি দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। রাজি না হওয়ায় তিনি বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে শাজাহান তাঁর দুলাভাই মো.

আদিলের বাড়িতে আসেন এবং তাঁকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর বোন ও দুলাভাই বাধা দিলে শাজাহান মাঝি তাঁদের গালিগালাজ করেন ও মারধর করেন। শাজাহান মাঝি তাঁদের তিনজনকে কিলঘুষি ও চড়থাপ্পড় মেরে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়ে চলে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাজাহান মাঝি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। বিয়ের প্রস্তাব অনেক আগেই দিয়েছিলাম, এখন আর কোনো চাপ দিচ্ছি না। এটা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ।’

ঘটনার পর পারভীন আক্তার দোহার থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। মো. আদিল অভিযোগ করেন, পুলিশ ব্যবস্থা না নিয়ে মীমাংসার কথা বলেছে।

দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি বাইরে থাকায় এখনো তা দেখা হয়নি। বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন

এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।

আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ