নববর্ষের শোভাযাত্রা নাম বদল করছি না, পুরোনো নাম–ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি: ঢাবি উপাচার্য
Published: 11th, April 2025 GMT
পয়লা বৈশাখে ফি বছর চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নাম পরিবর্তন করছি না। আমরা পুরোনো নাম এবং ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি, যেটা দিয়ে চারুকলার এই কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।’
আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলা নববর্ষের এই শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন বিষয়ে এমন মন্তব্য করেন উপাচার্য। পয়লা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদ্যাপনের বিভিন্ন দিক জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুনমঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলে গেল১ ঘণ্টা আগেসংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়, শোভাযাত্রার নতুন নাম হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। আগে নাম ছিল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।
এ প্রসঙ্গে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্যে দুটো মেসেজ (বার্তা) আছে। একটি হচ্ছে একটি নিবর্তনমূলক স্বৈরাচারী ব্যবস্থার অবসান। রাজনৈতিক ও সামাজিক নিবর্তনমূলক স্বৈরাচারী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ, সেই বিষয়টি তুলে ধরা। কিছু মোটিফ সেই কাজটি করছে। আর দ্বিতীয় যে অংশটি আছে, সেটি হচ্ছে মূলত ঐক্যের ডাক, সম্প্রীতির ডাক।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই শোভাযাত্রায় এই দুটো বার্তাকে তাঁরা একসঙ্গে দিতে যাচ্ছেন।
চারুকলা ১৯৮৯ সাল থেকে পয়লা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে। শুরুতে নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’।
আরও পড়ুনমঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলে গেল১ ঘণ্টা আগেনব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে শোভাযাত্রার নামকরণ হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।
জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চারুকলায় আগুনে পুড়ল ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি`
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে পয়রা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য নির্মাণাধীন ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ আগুনে পুড়ে গেছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর পৌনে ৫টার দিকে আগুন লাগে। আগুনে শান্তির পায়রা মোটিফেরও কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত চারুকলার এক শিক্ষার্থী বলেন, “এটার (‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতির’) নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছিল। আজকের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যেত। এটা নিঃসন্দেহে ষড়যন্ত্র।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল বলেন, “ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতির টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে। ওই আকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে। একইসাথে পায়রার অবয়বটাও পুড়ে গেছে।”
তিনি আরো বলেন, “আগুনটা ফজরের নামাজের সময় লাগানো হয়েছে। আমরা এর পরেই খবর পাই। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে ওটা পুড়ে যায়। আগুনটা ইচ্ছে করেই লাগানো হয়েছে। তবে কে বা কারা করেছে তা জানা যায়নি৷ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল শেখ রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের ১০টায় একটা মিটিং আছে। আমরা একটা বিজ্ঞপ্তিও রেডি করেছি। মিটিংয়ের পরে আমরা অফিসিয়ালি বিবৃতিতে জানিয়ে দেব। মিটিংয়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব।”
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে এবার নববর্ষের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারকার প্রধান মোটিফ ছিল ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’। এটিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি ধারণা করে কিছু দিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে চলছিলো আলোচনা-সমালোচনা। বর্ষবরণের ঠিক দুদিন আগেই যা আগুনে পুড়ল।
ঢাকা/সৌরভ/ইভা