আমিরাতে বসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে ৮০ জন
Published: 11th, April 2025 GMT
বাংলাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য ও জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুটি কেন্দ্রে শুরু হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৮০ শিক্ষার্থী।
দেশটির রাজধানী আবুধাবির শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল থেকে ৫৩ জন ও রাস আল খাইমাহ বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল থেকে ২৭ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
আরো পড়ুন:
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে দাখিল পরীক্ষা দিল ছেলে
এসএসসি পরীক্ষা: কুমিল্লায় ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী বেশি ২৯ হাজার
আবুধাবির শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল থেকে অংশ নিয়েছে ৫৩ জন পরীক্ষার্থী। এরমধ্যে ৫২ জন বিজ্ঞান বিভাগের এবং একজন ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী। ছাত্র-ছাত্রী অনুপাতে ২৪ জন ছাত্র ও ২৯ জন ছাত্রী অংশ নিচ্ছে এ বছরের পরীক্ষায়। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত ৪৬ জন এবং অনিয়মিত ৭ জন।
শেখ খলিফা স্কুল ছাড়াও রাস আল খাইমাহ প্রদেশে বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের আরো একটি কেন্দ্রে একই সঙ্গে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। যেখানে আমিরাত প্রবাসী শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পরীক্ষা দিচ্ছে।
এই প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১৫ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ১২ জন পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১৬ জন ছাত্র ও ১১ জন ছাত্রী রয়েছে।
প্রথম দিনের পরীক্ষা সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে যথাযথ নিরাপত্তা ও পরীক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই ও উত্তর আমিরাতের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর আশিষ কুমার সরকার বলেন, “অত্যন্ত মনোরম ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে মিল রেখে একই দিনে পরীক্ষা দিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শিক্ষার্থীরা। প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্ম তাদের নিজ দেশের পাঠ্যক্রমের সঙ্গে বেড়ে উঠছে, যা আমাদের জন্য আশা জাগানিয়া।”
দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষার্থীরা সারা বছর কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং ভালো ফলাফলের জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রতি গর্বিত। তারা প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও অধ্যবসায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে পড়াশোনা করেছে।
অভিভাবকরা বলছেন, প্রবাসে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বোর্ড পরীক্ষার এই সুযোগ তাদের মাতৃভূমির সঙ্গে শিক্ষাগত সংযোগ বজায় রাখতে সহায়তা করে।
ঢাকা/মুহাম্মদ শাহ জাহান/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এসএসস পর ক ষ র থ জন ছ ত র ন পর ক ষ আম র ত
এছাড়াও পড়ুন:
নিখোঁজ এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের সন্ধানে কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা
ছেলের বড় একটি ছবি বুকের সঙ্গে ধরে নাটোর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এজাজুল হক। তাঁর চোখ ফটকের দিকে। অপেক্ষা ছেলের জন্য। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরও তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে।
এজাজুল হক জানান, তাঁর ছেলে মুনতাহা এহসান (মুগ্ধ) নাটোর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। আজ বৃহস্পতিবার বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত সোমবার বিকেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ। নানা চেষ্টার পরও তার খবর পায়নি পরিবার।
এজাজুল হক বলেন, তাঁর ধারণা ছিল, ছেলে অন্তত পরীক্ষা মিস করবে না। যেখানেই থাকুক আজ পরীক্ষায় অংশ নেবে সে। সেই আশায় তিনি কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ছেলে আসেনি। তিনি বলেন, ‘ছেলের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আশা শেষ হয়েছে। কিন্তু ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা তো শেষ হয়নি। নানা রকমের দুশ্চিন্তায় আমি, ওর মা ও বড় বোন প্রতিটি মুহূর্ত পার করছি।’
মা মাহফুজা খাতুন বলেন, ‘মুগ্ধ আমার একমাত্র ছেলে। সে বিদ্যালয় ও মসজিদ ছাড়া বাড়ির বাইরে আর কোথাও যেত না। ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও সে বিদ্যালয়ের টেস্ট পরীক্ষায় খারাপ করে। সে এটা মানতে পারছিল না। খুব মন খারাপ করেছিল। আমরা তাকে বুঝিয়েছি, বোর্ড পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। বকঝকা করিনি। সে পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। হঠাৎ এভাবে নিখোঁজ হয়ে যাবে, ভাবতেও পারছি না।’
নাটোর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক আকরাম হোসেন বলেন, পরীক্ষার আগমুহূর্তে মুগ্ধ এভাবে নিখোঁজ হওয়ায় শিক্ষকদেরও মন খারাপ। তাঁরাও ভেবেছিলেন, হয়তো সে এসে পরীক্ষা দেবে। কিন্তু পরীক্ষার হলে তার আসন ফাঁকা ছিল।
নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক জামাল উদ্দিন মুগ্ধর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখছি। ওর ব্যাপারে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করছি। বিভিন্ন থানায় বেতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তার সন্ধানে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’