মৌলভীবাজারে শাহ নিমাত্রার (রহ.) দরগাহের ওরস বন্ধের দাবিতে কর্মসূচির ঘোষণা, উত্তেজনা
Published: 11th, April 2025 GMT
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা বাজারে হজরত শাহ নিমাত্রার (রহ.) দরগাহের ওরস নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। একটি পক্ষ ওরস বন্ধের দাবিতে আজ শুক্রবার বাদ জুমা উপজেলা সদরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে গত বুধবার রাতে ওরসের দাবিতে ফুলতলা বাজারে মিছিল হয়। আজ সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে ওরস শুরু হয়েছে। ।
উপজেলার ফুলতলা বাজারের এক পাশে হজরত শাহ নিমাত্রার দরগাহ। প্রতিবছর সেখানে ওরস অনুষ্ঠান হয়। এতে অনেক লোকজনের সমাগম ঘটে। এবার ১১ থেকে ১৩ এপ্রিল তিন দিনব্যাপী ৫৪তম বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এবার ওরসের পোস্টারে কোনো কাফেলায় (ভক্তদের আসর) নারী অথবা নারী শিল্পী রাখা যাবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন ধরে ওরসের প্রস্তুতি চলছে। এ উপলক্ষে সেখানে অন্তত শতাধিক দোকানপাট বসেছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার স্থানীয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর করা একটি আবেদন দেওয়া হয়, যাতে ওরস বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। ওই আবেদনে বলা হয়েছে, ফুলতলা বাজারে অবস্থিত ফুলতলা বশির উল্লাহ উচ্চবিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র। ওরসে উচ্চস্বরে গান-বাজনা ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে পরীক্ষার পরিবেশ বিনষ্টের আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা সদরে মাইকিং করা হয়। এতে ফুলতলায় ওরসে অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবিতে আজ বাদজুমা উপজেলা সদরের জাঙ্গিরাই চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে গত বুধবার ফেসবুকে খবর ছড়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওরস স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ওরস আয়োজনের পক্ষে লোকজন বুধবার রাতে ফুলতলা বাজারে মিছিল বের করেন। এ সময় সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
দরগাহ পরিচালনা কমিটির কার্যকরী সদস্য ও ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইমতিয়াজ গফুর বলেন, গতকাল থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরের পরীক্ষা ১৫ এপ্রিল। ওরস এর আগেই সম্পন্ন হয়ে যাবে। তাই ওরসের কারণে পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কার বিষয়টি সঠিক নয়। ওরস নিয়ে কিছু লোক অপপ্রচার করছেন। প্রতিবারের মতো এবারও ওরস হবে।
ওরসকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে, সে ব্যাপারে প্রশাসন তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও বাবলু সূত্রধর।
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ওরস নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁরা তৎপর আছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন ধ র দ ব পর ক ষ উপজ ল র ওরস দরগ হ ফ লতল ওরস র
এছাড়াও পড়ুন:
শনিবার সোহরাওয়ার্দীতে ‘মার্চ ফর গাজা’
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। শনিবার শাহবাগ থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত এই ‘মার্চ’ হওয়ার কথা ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কাল দুপুর তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েত করা হবে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে যাত্রা করা হবে না।
প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে ‘মার্চ ফর গাজা’ নামে একটি ইভেন্ট তৈরি করেছে।
এই কর্মসূচির আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের পক্ষে ঢাকায় এটিই হবে সবচেয়ে বড় জমায়েত। তারা দল–মতনির্বিশেষে সবাইকে এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুহাম্মাদ আবদুল মালেক এই জমায়েতে সভাপতিত্ব করবেন বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন।
ঢাকায় বিনিয়োগ সম্মেলনে আসা অতিথিদের চলাচল ও ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে ওই পরিবর্তন আনা হয়েছে।
প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্টের গণমাধ্যম সমন্বয়ক শেখ ফজলুল করীম মারুফ বলেছেন, শনিবার দুপুর দুইটায় পাঁচটি পয়েন্ট থেকে মার্চ শুরু করে তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েত হবে। বাংলামোটর, কাকরাইল মোড়, জিরো পয়েন্ট, বকশিবাজার মোড় ও নীলক্ষেত মোড় থেকে মিছিল উদ্যানে ঢুকবে।
শুক্রবার তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুটি বিশেষ নির্দেশনা ও চারটি সাধারণ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ নির্দেশনা দুটি হলো—শনিবার টিএসসির মেট্রোস্টেশন বন্ধ থাকবে ও সব পরীক্ষার্থীর জন্য রাস্তা বিশেষভাবে উন্মুক্ত থাকবে। আর সাধারণ নির্দেশনাগুলো হলো—গণজমায়েতে অংশগ্রহণকারীরা নিজ দায়িত্বে ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সামগ্রী (পানি, ছাতা, মাস্ক) সঙ্গে রাখবেন ও পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখবেন; যেকোনো পরিস্থিতিতে ধৈর্য–শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী–স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন; রাজনৈতিক প্রতীকবিহীন সৃজনশীল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড, শুধু বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা বহনের মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করার অনুরোধ এবং দুষ্কৃতকারীদের অপতৎপরতা প্রতিহত করতে সক্রিয় থাকতে হবে, প্রতিরোধ গঠনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিতে হবে।
এদিকে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্টের ফেসবুক পেজে ‘মার্চ ফর গাজা’র পক্ষে সংহতি জানিয়ে পরিচিত রাজনীতিক, আলেম ও তারকাদের ভিডিও বার্তা পোস্ট করা হচ্ছে।
আজ বিকেল পর্যন্ত রাজনীতিকদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (মঞ্জু), খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, আপ বাংলাদেশের প্রধান উদ্যোক্তা আলী আহসান জুনায়েদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ প্রমুখের ভিডিও বার্তা ওই পেজে পোস্ট করা হয়েছে।
ওই পেজে আলোচিত ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ মহিউদ্দিন, ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম আবরার, দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাহিদ রানা ও তাইজুল ইসলাম, বুয়েটের প্রভাষক ও জনপ্রিয় ইউটিউবার এনায়েত চৌধুরী, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মোক্তার আহমেদ, ডা. জাহাঙ্গীর কবির, ইসলামি বক্তা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, ঝালকাঠি নেছারাবাদ দরবার শরিফের পীর ছাহেব আল্লামা খলিলুর রহমান নেছারাবাদী, উপস্থাপক আরজে কিবরিয়া, উদ্যোক্তা মাহমুদুল হাসান সোহাগ, অভিনেতা তামিম মৃধা, টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিকের ভিডিও বার্তাও দেখা গেছে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক মো. আবু সাদিক কায়েম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদও ‘মার্চ ফর গাজা’র পক্ষে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।