ঝালকাঠিতে রাতে বাবার লাশ দাফনের পর সকালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মেয়ে সাবরিয়ান ইসলাম সেতু।  

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) জেলার কাঠালিয়া সদর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে সেতু আরবী প্রথমপত্র বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়।  

সেতুর বাবা সিরাজুল ইসলাম ইসমাইল (৫০) উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম আউরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে অফিস সহকারি পদে কর্মরত ছিলেন। 

গত বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে সিরাজুল ইসলাম ইসমাইল ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো.

বাদল মাহমুদ বলেন, “সিরাজুল ইসলাম পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি। তার বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। তাকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবারটি।”

সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সাহিদা বেগম স্বামীকে হারিয়ে এখন পাগল প্রায়। স্বামীর লাশের পাশে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন।

কাঠালিয়া সদর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো.আবুল কালাম আজাদ বলেন, “সাবরিয়ান ইসলাম সেতু আমার মাদ্রাসা থেকে এ বছর মানবিক শাখায় দাখিল পরীক্ষা অংশ নিচ্ছে। বাবার মৃত্যুতে তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেমে নেই। এ ঘটনায় আমরা শোকাহত।”

ঢাকা/অলোক/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স র জ ল ইসল ম পর ক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল রিপোর্টে শিশুর জীবন বিপন্ন

সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড ফজর আলী গার্ডেন সিটি ভবনে এস আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মাইমুনা সুলতানা নামে ৪ বছরের এক শিশুর রক্তের ইনফেকশন পরিমাণ নির্ণয় পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। ফলে শিশুটির জীন বিপন্ন হওয়ার পথে। 

জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি পাইনাদী এলাকার বাসিন্দা মো. শফিকের ৪ বছরের মেয়ে মাইমুনা সুলতানা জ¦রে আক্রান্ত হলে তাকে ১৫ এপ্রিল হাতুড়ে ডাক্তার ফিরোজ আলমের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

তখন ডাক্তার ফিরোজ আলম  শিশুটিকে হেমাটোলজি ও সেরোলজি পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। পরে শিশুটিকে নিয়ে তার পিতা এস. আলম ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা করান। 

সেরোলজি পরীক্ষায় শিশুটির সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন(সিআরপি) পরীক্ষার রিপোর্টে রক্তের পেণ্টামেরিক প্রোটিন ৫০ দশমিক ২ এম.জি/এল পরিমাণ দেখানো হয়।

রিপোর্টে এম.ফিল সি প্যাথলজি ডাক্তার মো. শাহাদাত হোসেন ও ডিপ্লোমা ইন ল্যাবরেটরি মেডিসিন ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার সাকিল পারভেজের স্বাক্ষর রয়েছে।

সে রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে হাতুড়ে ডাক্তার ফিরোজ আলম শিশুটিকে ইনজেকশন ও ওষুধ দেন। এতে শিশুটির শারীরিক অবস্থা চরম অবনতি হয়। 

শিশুর পিতা শফিকুল বলেন, মেয়ের অবস্থা খারাপ হলে আমি অন্য একজন ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাই। তখন এ রিপোর্ট দেখে ওই ডাক্তার অবাক হয়ে বলেন, মানুষের রক্তে ইনফেকশনের পরিমান কখনো ৫০ দশমিক ২ এম.জি/এল হতে পারে না।

তাই তিনি আবার পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। তখন আমি ১৭ এপ্রিল মেয়েকে সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে আবার পরীক্ষা করাই। 

সেখানে পরীক্ষা রিপোর্টে রক্তের পেণ্টামেরিক প্রোটিন পরিমাণ আসে ১৫ দশমিক ১ এমজি/এল। তখন আমি প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের রিপোর্টে স্বাক্ষরকারী ডাক্তার মো. মামুন অর রশিদ ও রেহানা আক্তার সোনিয়াকে এস. আলম ডায়গনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট দেখালে তারাও অবাক হয়ে বলেন এটা অসম্ভব। রিপোর্টটি সঠিক হয়নি। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এস.আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক একাডেমিক শিক্ষাগত ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার, ডিপ্লোমা প্রাপ্ত নার্স ও রোগী দেখার জন্য নিয়মিত এমবিবিএস ডাক্তার নেই।

প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কর্মকর্তারা নিজেরাই মনগড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা রিপোর্ট তৈরি তাদের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক নামি-দামি সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের এমবিবিএস ডাক্তার ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তারের সিল স্বাক্ষর দিয়ে রোগীদের হাতে ধরিয়ে দেয়। তাদের এ ভুল রিপোর্টে চিকিৎসা করে রোগীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, একদিন আগে পরের রিপোর্ট কিছু ব্যবধান হতেই পারে। তাই বলে ৩৫ পার্সেন্ট প্রশ্ন করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে এড়িয়ে গিয়ে ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার সাকিল পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

ডাক্তার সাকিল পারভেজ বলেন, আমাদের রিপোর্ট ভুল নয়। আমাদের রিপোর্টের দুদিন পর ওই রিপোর্ট করা হয়েছে। দুদিন ওষুধ সেবন করায় শিশুটির রক্তের প্রোটিন পরিমাণ কমে গেছে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ