১৩ বছর বয়সে গ্রেপ্তার করা ফিলিস্তিনি কিশোরকে ১০ বছর পর মুক্তি দিল ইসরায়েল
Published: 11th, April 2025 GMT
১০ বছর আগে হামলার একটি ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। ৯ বছর ৬ মাস বন্দিজীবন কাটিয়ে ফেরা কিশোরটি এখন ২৩ বছরের তরুণ।
মুক্তি পাওয়া এই ফিলিস্তিনির নাম আহমেদ মানাশ্রা। ২০১৫ সালে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের এক প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে মানাশ্রার বিষয়ে নজর রেখেছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এর মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, ‘নির্জন কারাবাসে রাখাসহ এই কিশোরের সঙ্গে মর্মপীড়াদায়ক অসদাচরণ করা হয়েছে। এতে মানসিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে।’২০১৫ সালে কিশোর মানাশ্রার হামলা চালানো নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তাঁর সঙ্গে ১৫ বছর বয়সী রক্তসম্পর্কীয় ভাই হাসান। দুজন ইসরায়েলের অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের এক ইহুদি বসতিতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত ছুরি নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। এ সময় হাসান ইসরায়েলি একটি কিশোর ও এক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর আক্রমণ করে বসেন। এতে তাঁরা আহত হন। পরে মানাশ্রাকে গ্রেপ্তার ও হাসানকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে মানাশ্রার বিষয়ে নজর রেখেছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এর মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, ‘নির্জন কারাবাসে রাখাসহ এই কিশোরের সঙ্গে মর্মপীড়াদায়ক অসদাচরণ করা হয়েছে। এতে মানসিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে।’
আহমেদ মানাশ্রার আইনজীবী খালেদ জাবারকা বিবিসিকে বলেন, কারাভোগ শেষে মানাশ্রা ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
আরও পড়ুনইসরায়েলের কারাগারে ‘অপুষ্টিতে’ ফিলিস্তিনি কিশোরের মৃত্যু০৬ এপ্রিল ২০২৫ছুরিকাঘাতে দুই ইসরায়েলি আহত হওয়ার ওই ঘটনার পর মানাশ্রা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান এবং একটি গাড়ি তাঁকে চাপা দেয়। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া একটি গ্রাফিক ভিডিওতে দেখা যায়, ‘কিশোর মানাশ্রা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এবং এক ইসরায়েলি পথচারী তাকে ঠাট্টাবিদ্রূপ ও গালিগালাজ করছেন।’
এই ভিডিও ফুটেজ ওই সময় আরব বিশ্বে ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, মানাশ্রা মারা গেছেন। তবে এ ঘটনার কয়েক দিন পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার ছবি প্রকাশ করে।
পরবর্তী সময়ে হত্যাচেষ্টায় অভিযুক্ত করে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি কিশোর মানাশ্রাকে সাড়ে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
কারাভোগ শেষে আহমেদ মানাশ্রা ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্যের কী অবস্থা, এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এ মূহূর্তে তাঁর সুচিকিৎসা করাই স্বজনদের অগ্রাধিকার।খালেদ জাবারকা, মানাশ্রার আইনজীবীচিকিৎসকেরা বলেছেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় মানাশ্রা মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হন এবং নিজের ও অন্যদের ক্ষতি করার চেষ্টা করেন।
মানাশ্রাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বারবারই আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে ইসরায়েল তা নাকচ করে দেয়। এখন মানাশ্রা মুক্তি পেলেও তাঁর পরিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন‘গায়ে আগুন দেওয়ার পর তা নেভাতে আমি পশুর মতো এদিক-ওদিক ছুটছিলাম’ ০৮ এপ্রিল ২০২৫আইনজীবী খালেদ বলেন, আহমেদের স্বাস্থ্যের কী অবস্থা, এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এ মূহূর্তে তাঁর সুচিকিৎসা করাই স্বজনদের অগ্রাধিকার।
২০১৫ সালে ছুরিকাঘাতে দুই ইসরায়েলি আহত হওয়ার ওই ঘটনার পর মানাশ্রা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান এবং একটি গাড়ি তাঁকে চাপা দেয়। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া একটি গ্রাফিক ভিডিওতে দেখা যায়, ‘কিশোর মানাশ্রা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এবং এক ইসরায়েলি পথচারী তাকে ঠাট্টাবিদ্রূপ ও গালিগালাজ করছেন।’মানাশ্রার ঘটনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও ইসরায়েলের বেসরকারি সংগঠন আদালাহ দেশটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ এনেছে।
আরও পড়ুনইসরায়েলের কারাগার: কেউ বেরোচ্ছেন নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে, কেউ ধর্ষণের শিকার বা মানসিক রোগী হয়ে০১ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুন৬৭ বছরের জীবনে ৪৫ বছর কারাগারে, মুক্তিকামী নেতা নায়েল বারগুতি অবশেষে মুক্ত২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র হওয় ইসর য় ল র অবস থ হওয় র আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী-ছেলেসহ তিন খুনের দায় স্বীকার, ১০ দিনের রিমান্ড
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. ইয়াসিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করেছে। শনিবার বিকেলে তাকে তোলা হয় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেলায়েত হোসেনের আদালতে। সেখানে ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।
শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ময়লার স্তূপ খুঁড়ে ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২২), চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান লাবিব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই এলাকাবাসী ইয়াসিনকে (২৪) ধরে পুলিশে দেন। সে মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার মো. দুলালের ছেলে। আগে ইয়াসিন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাত। পুলিশ জানিয়েছে, ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবেও পরিচিত সে।
শুক্রবার রাতেই লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ইয়াসিন ছাড়াও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে। মুনমুন জানিয়েছেন, লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ৫ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বড় বোন স্বপ্নাও লামিয়ার সঙ্গে পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৭ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসায় বোনদের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। এর পর থেকে তাদের মুঠোফোনটি বন্ধ ছিল।
মামলায় মুনমুন উল্লেখ করেছেন, মাদকাসক্ত ইয়াসিন কোনো কাজ করত না। প্রায় সময় টাকার জন্য লামিয়াকে মারধর করত ও হত্যার হুমকি দিত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।