রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে বহিরাগত দুজনকে পুলিশে সোপর্দ
Published: 11th, April 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত এবং বিনা অনুমতিতে ভিডিও ধারণের অভিযোগে বহিরাগত দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরসংলগ্ন রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
আটক দুজন হলেন বরেন্দ্র কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব এবং শাহ মখ্দুম কলেজের একই বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়াম আল হাসান।
ভুক্তভোগী ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ওই ছাত্রী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক পার হয়ে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে দিকে আগালে তিনটি মোটরসাইকেল ওই ছাত্রীকে অনুসরণ করে। এতে ওই নারী শিক্ষার্থী ভয় পেয়ে চিৎকার করেন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা কয়েকজন ওই শিক্ষার্থীকে জানান, পেছনে থেকে একটি ছেলে তাঁর ভিডিও করছেন। পরে ক্যাম্পাসের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সহায়তায় তাঁরা ভিডিও ধারণকারী দুজনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে যান। সেখানে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ভুক্তভোগী ছাত্রী, মোটরসাইকেল আরোহী ও অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। পরে মোটরসাইকেল আরোহীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া উত্ত্যক্ত ও ভিডিও ধারণকারী দুজনকে মতিহার থানা-পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করার ঘটনায় তিনজনকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং ভিডিও ধারণকারীদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকগুলোতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।
নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মালেক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দুজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফে অগ্নিকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত চায় ঢাবি ছাত্রদল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা উদ্যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফ আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে ঢাবি ছাত্রদল। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি এ দাবি জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আগুন লাগার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
ঢাবি ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান— এই প্রতিপাদ্যে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে পয়লা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদ্যাপনের লক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রার অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিকৃতি তৈরির কাজে যুক্ত আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিছুদিন ধরে আনন্দমুখর পরিবেশে এ কার্যক্রম চললেও শনিবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে কিছু দুর্বৃত্ত অনুষদ প্রাঙ্গণে নির্মিতব্য ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও শান্তির পায়রার প্রতিকৃতিতে অগ্নিসংযোগ করে তা ভস্ম করে দিয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা এবং ক্যাম্পাসে ফ্যাসিস্টদের মুক্ত পদচারণার বিষয়ে ঢাবি ছাত্রদল এর আগে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি তার সত্যতা প্রমাণ করে প্রতি একটি ভয়াবহ বার্তা দিয়ে গেল।’
ঢাবি ছাত্রদল বলেছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এবং ফ্যাসিবাদী শাসনামলের বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলাকারীরা এখনো আবাসিক হলগুলোতে বহাল তবিয়তে অবস্থান করছে। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিনা বাধায় চলাফেরা করছে। ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে দেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করছে। তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চরম উদাসীনতা দেখিয়েছে। এই অগ্নিসংযোগের ঘটনার মাধ্যমে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করছে ঢাবি ছাত্রদল।