ছোটবেলা থেকেই মারি পার্ল জালমার রবিনসন বুঝতে পেরেছিলেন যে তাঁর চোয়াল জোড়া ঠিক অন্যদের মতো নয়, খানিকটা আলাদা। যে কারণে তিনি অস্বাভাবিক বড় ‘হা’ করতে পারেন। তিনি ‘হা’ করলে কেউ কেউ ভয়ও পেয়ে যেত বলে জানান তিনি।
রবিনসন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের কেটিকানের বাসিন্দা। এই নারীই এখন সবচেয়ে বড় ‘হা’ করতে পারার বিশ্ব রেকর্ডের মালিক। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তথ্যানুযায়ী, রবিনসন যখন ‘হা’ করেন, তাঁর ওপরের মাড়ি থেকে নিচের মাড়ির মাঝখানের ব্যবধান দাঁড়ায় ২ দশমিক ৯৮ ইঞ্চি।
এই নারী বলেন, এমন কোনো রেকর্ড যে হতে পারে, তা তিনি আগে জানতেন না। একদিন তিনি একটি ভিডিও দেখতে পান। ভিডিওটি সবচেয়ে বড় ‘হা’ করতে পারার রেকর্ডের আগের মালিক সামান্থা রামসডেলের। ২০২১ সালে রামসডেল ওই রেকর্ড গড়েছিলেন, ২ দশমিক ৫৬ ইঞ্চি বড় ‘হা’ করে।
গিনেস রেকর্ড কর্তৃপক্ষকে রবিনসন বলেন, ‘কয়েকবার ভিডিওটি দেখেই আমার মনে হয়, আরে, এটা তো বেশ মজার। আমিও তো এসব জিনিস আমার মুখের ভেতর ঢুকিয়ে ফেলতে পারি। কেমন হবে, যদি আমি তাঁকে হারিয়ে দিই?’
যে কথা, সেই কাজ। রবিনসন তাঁর দাঁতের চিকিৎসকের কাছে ছোটেন। দাঁতের চিকিৎসক মেপে দেখেন, রবিনসন ‘হা’ করলে তাঁর মুখের মাঝখানের ব্যবধান হয় ২ দশমিক ৯৮ ইঞ্চি।
কেটিকান ডেইলি নিউজকে রবিনসন বলেন, ‘আমি সব সময় জানতাম যে আমার মুখ অনেক বড়। আমি প্রচুর কথা বলি এবং বাস্তবে আমার একটি বড় মুখ আছে, কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কখনো কিছু ভাবিনি। এটা নিয়ে সব সময় মজা করেছি।’
কিন্তু বড় হওয়ার পর রবিনসন মানুষের সামনে নিজের মুখ খুব একটা খুলতেন না। তিনি বলেন, ‘যখন আমি হা করতাম, লোকজন কেমন ভয় পেয়ে যেত। ওগুলো গা শিরশির করে ওঠা চোয়াল!’
রবিনসন বলেন, সবচেয়ে বড় মুখের রেকর্ড গড়া তাঁর জন্য সান্ত্বনা পুরস্কারের মতো। ২০১৩ সালে এই নারীর বিশ্বের সর্ববৃহৎ ওয়েলিংটন বুট রেসে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছুটি না পাওয়ায় তিনি ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেননি।
রবিনসন বলেন, ‘এখন আমি বাকিদের সঙ্গে যোগ দিতে পারব এবং শহরের আরও অনেক লোকের সঙ্গে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের খেতাব অর্জন করতে পারব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর ড ন বল ন সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
গরম তেল ঢেলে স্ত্রীকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ড
দুই বছর আগে রাজধানীর কদমতলী থানার খালপাড় এলাকায় গায়ে গরম তেল ঢেলে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মিজান সরদার নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। রোববার সকালে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার আগে আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত মিজান পিরোজপুরের নাজিরপুর থানার বাবুরহাট গ্রামের মৃত আওয়াল সরদারের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মীম আক্তার রুপার সঙ্গে ঘটনার ১২ বছর আগে মিজান সরদারের বিয়ে হয়। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। কদমতলীর খালপাড়ের ‘ইসলাম টাওয়ার’ নামে একটি বহুতল ভবনের সপ্তম তলায় বসবাস করতেন তারা। যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী তার স্বামীর নির্যাতনের শিকার হন। এর আগে আসামি মিজান তার শ্বশুরের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি এবং সাত লাখ টাকা মূল্যের একটি দোকান যৌতুক হিসেবে নেন।
২০২৩ সালের ৬ মে রাত ১০ টার দিকে মিজান সরদার ভুক্তভোগী রুপার কাছে আরও যৌতুকের টাকা দাবি করলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ কারণে মিজান তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। রাত তিনটার দিকে যখন ভুক্তভোগী ও তাদের সন্তানরা ঘুমাচ্ছিল তখন মিজান সরদার একটি ফ্রাইং প্যানে সয়াবিন তেল গরম করে তার ওপর ঢেলে দেন। এতে গুরুতর দগ্ধ হয়ে ভুক্তভোগী চিৎকার করেন। এ সময় বিল্ডিংয়ের কেয়ারটেকার গিয়ে ভুক্তভোগী ও তার সন্তানদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যায়। যেখানে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রুপার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ৯ মে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে ২৫ মে ভুক্তভোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুর আগে ভুক্তভোগী ১৪ মে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের কাছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দেন। একই আদালতে আসামি মিজান সরদার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
তদন্ত শেষে পুলিশের উপ-পরিদর্শক সরোজিৎ কুমার ঘোষ একই বছরের ৩১ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার বিচার চলার সময় আদালত ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।