ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়য় ইসরায়েলি  হামলায় আরও ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এসব ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান। এর মধ্যে গাজা নগরীতে নিহত হন ১১ জন। গতকাল বুধবার ইসরায়েলের হামলায় আরও ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।

গাজায় ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে প্রথম যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলের হামলায় ১ হাজার ৫২৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৮৩৪ জনা।

এদিকে আরও ৮০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাঁরা সবাই গাজা উপত্যকার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রগুলো বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে এই তথ্য জানিয়েছে।

সূত্রটি আরও জানায়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের কিসুফিম ক্রসিংয়ে এসব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। ক্রসিংটি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়া বন্দিদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ কারণে তাদের দের আল–বালাহ শহরের আল–আকসা মার্টারস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বন্দিদের মুক্তি দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাসপাতালটির কর্মীরা। কারণ এসব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আগে তাদের কোনো তথ্য জানানো হয়নি। সাধারণত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা সম্পৃক্ত থাকে।

বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার পর তাদের স্বজনেরা হাসপাতালে ছুটি আসেন। সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে গিয়ে দীর্ঘদিন পর বাবার সঙ্গে দেখা হয় ফারাহ নামের এক তরুণীর।

আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব মিসর-কাতারের৩০ মার্চ ২০২৫

ফারাহ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ভেবেছিলেন তাঁর বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাঁর সম্পর্কে কোনো তথ্যই জানতে পারেননি। তিনি ইসরায়েলের কুখ্যাত সাদি তেইমান কারাগারে ছিলেন।

 ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের হিসাব অনুসারে এ হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। পাল্টা হিসেবে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজা উপত্যকা অনেকটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, এসব হামলায় এরইমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হামলায় গাজা উপত্যকার বেশির ভাগ বাড়িঘর ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩০, বেশির ভাগ নারী ও শিশু১৮ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন দ দ র ম ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

সাভারে দায়িত্বে অবহেলা, দুই এএসআইকে প্রত্যাহার 

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক পুলিশ টাউন ও  ব্যাংক টাউন এলাকায় একাধিকবার  চলন্ত বাসে দিনে দুপুরে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে নগদ টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকার ছিনতাইয়ের নড়ে চড়ে বসেছে পুলিশ। পুলিশের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট । গতকাল  রোববার সকালে পুলিশ টাউন এলাকায়  পুলিশের একটি চেক পোষ্ট বসানো হয় । সেখানে যানবাহন তল্লাশির নির্দেশনা থাকলেও তা সঠিকভাবে পালন না করায়  সাভার মডেল থানার সহকারী দুই উপ-পরিদর্শককে (এএসআই ) দায়িত্বে অবহেলার কারণে সাভার মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

তারা হচ্ছেন সহকারী উপ-পরিদর্শক সারোয়ার হোসেন ও আব্দুস সাত্তার। বর্তমানে তাদেরকে ঢাকাজেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। রাত ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা ।  

তিনি সমকালকে জানান, মহাসড়কে অপরাধ দমনে পুলিশ নিয়মিত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে পুলিশ টাউন এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছিল। সেখানে যাত্রীবাহী বাসসহ শতভাগ যানবাহনে তল্লাশীর নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে তাদের দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে। পরে বিষয়টি ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো: আনিসুজ্জামানকে জানানো হয়। তার নির্দেশে ওই দুই পুলিশ সদশ্যকে সাভার মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে । 

প্রসঙ্গত গত শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে সাভার পরিবহনের একটি  যাত্রীবাহী বাস ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ব্যাংটাউন ব্রিজের উপরে ওঠামাত্রই বাসের ভিতরে থাকা ছিনতাইকারীদের একজন  চালককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাসটি থামিয়ে ফেলে। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন ছিনতাইকারী যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণলংকার ছিনিয়ে নেয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ