পাটগ্রাম উপজেলায় থামছে না বোমা মেশিনের তাণ্ডব। অবৈধ এ যন্ত্রের মাধ্যমে ধরলা, সানিয়াজান ও সিঙ্গিমারী নদীসহ জমি থেকে দেদার তোলা হচ্ছে বালু ও পাথর। অননুমোদিত ও অপরিকল্পিতভাবে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তা বন্ধ হচ্ছে না। এ কারণে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতীরের গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্কও বিরাজ করছে।
বোমা মেশিন মূলত পাওয়ার পাম্প আর পাইপ দিয়ে তৈরি একটি যন্ত্র। চলার সময় এটি বোমা বিস্ফোরণের মতো বিকট শব্দ হয়। তাই এর নাম ‘বোমা মেশিন’। প্রশাসন নিষিদ্ধ এ যন্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। প্রশাসনের নজর এড়াতে জড়িতরা গভীর রাতে বালু-পাথর তুলছে।  
পাটগ্রাম পৌরসভার বেংকান্দা এলাকার মজিবর রহমান বলেন, বোমা মেশিনে বিকট শব্দ হয়। গভীর রাতে মেশিন চালু করলেই ঘুম হারাম। এছাড়া এ মেশিনের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও ফসলি জমির ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তা-ঘাট ভেঙে যাচ্ছে।
হাতীবান্ধা মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক স্থানীয় বাসিন্দা ইফতেখার আহম্মেদ বলেন, ‘পাটগ্রামে ২০০ থেকে ২৫০টি বোমা মেশিন চলছে। প্রশাসনের লোকজন অভিযানের সময় মেশিনগুলো আংশিক ভাঙে। পরে মেরামত করে আবারও চালানো হয়। এভাবে নাটক সাজিয়ে প্রশাসন অবৈধ এ কাজে জড়িতদের সহায়তা করছে। অথচ তারা চাইলেই বোমা মেশিন বন্ধ করা সম্ভব।’
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুজ্জামান সরকার বলেন, ‘একটি মহল রাতের আঁধারে নদী থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন করছে। খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পাটগ্রামে বোমা মেশিন বন্ধ আছে।’ 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

৬ বছর পর পাবিপ্রবির বর্ষবরণে বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া

৬ বছর পর পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ এর আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ছিল উৎসবের রঙ, বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া।  

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় আয়োজনের অংশ হিসেবে শুরু হয় বর্ণাঢ্য আনন্দ  শোভাযাত্রা।

পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস.এম আব্দুল-আওয়ালের নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

আনন্দ শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মূল মঞ্চে এসে শেষ হয়। মহিশের গাড়ি, পালকি, মুখোশ, গ্রামীণ খেলনা, রঙিন ব্যানার, পটচিত্র ও বাদ্যযন্ত্রে মুখর ছিল পুরো আয়োজন।

দিনব্যাপী বর্ষবরণের আয়োজনে আরো ছিল স্বাধীনতা চত্ত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলা। এতে উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি বিভাগের শিক্ষার্থী,  শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, পাবিপ্রবি প্রেসক্লাব, ছাত্র ও ছাত্রী হলকে স্বতন্ত্রভাবে বর্ণিল সাজে সজ্জিত দোকানে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার অংশগ্রহন করতে দেখা যায়।

ইইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফ খান রাচি বলেন, “এই প্রথমবার আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখতে পারছি। শুনেছি এর আগে ২০১৯ সালে আমাদের ক্যাম্পাসে এরকম উৎসব মুখর পরিবেশে এমন আয়োজন হয়েছিল। নিজেদের হাতে স্টল সাজানো, পিঠা বানানো, বিক্রি করা। সব মিলিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা। বাংলা সংস্কৃতির এমন প্রাণবন্ত আয়োজন আমাদের মন ছুঁয়ে গেছে।”

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব বলেন, “সারাদিন ক্যাম্পাসে একটা অন্যরকম অনুভূতি ছিল। সবাই যেন একে অপরের আপন। এই ধরনের আয়োজন আমাদের মধ্যে বন্ধন গড়ে তোলে, সংস্কৃতির সঙ্গে জুড়ে দেয়।”

৬ বছর আগে ২০১৯ সালে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষের উৎযাপন করা হলেও মাঝখানে করোনা, রোমজান থাকার কারনে গত কয়েকবছর এই উৎসব পালন করা সম্ভব হয়নি।

ঢাকা/আতিক/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ