এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিন বৃহস্পতিবার ঝড়বৃষ্টির মধ্যে কেন্দ্রে পৌঁছাতে ভোগান্তির শিকার হয়েছে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রংপুর ও পঞ্চগড়ের পরীক্ষার্থীরা। এর মধ্যে কয়েকটি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতির আলোয় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এতে অনেকে উত্তরপত্রে লিখতে সমস্যায় পড়ে। কিছু কেন্দ্রে মোমবাতিও মেলেনি। বিকল্প আলোর ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পরীক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, সকাল থেকে বৃষ্টি ও ঝড় শুরু হয়। ফলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ঝাড়বাড়ী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিদ্যুৎ চলে যায়। ১০টায় পরীক্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে মোমবাতির ব্যবস্থা করে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। পরে মোমবাতি জ্বালিয়ে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা দেয় ৬৫০ শিক্ষার্থী।
দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম জানান, বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে গাছ পড়ে বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জন্য লোডশেডিং দিতে হয়েছে।
এদিকে ঝড়বৃষ্টির কারণে ঠাকুরগাঁওয়ের অধিকাংশ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর পর পরই বিদ্যুৎ চলে যায়। আবার অনেক কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বিপাকে পড়ে পরীক্ষার্থীরা। ফলে মোমবাতি জ্বেলে আধাঘণ্টা উত্তরপত্রে লিখতে হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী কাউসার বলে, ‘আমাদের রুমে মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। আলো কম থাকায় প্রশ্ন পড়া ও উত্তর লিখতে সমস্যা হয়েছে।’
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ঝড়বৃষ্টির কারণে কেন্দ্রে বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক পরীক্ষার্থী অন্ধকারে খাতা নিয়ে বসে ছিল। কিছু কেন্দ্রে মোমবাতির ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট পর বিদ্যুৎ এলে স্বস্তি ফেরে।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের কালীগঞ্জ এম পি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হয়েছে।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছে সংশ্লিষ্ট অফিস ও প্রতিনিধি)
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ক ষ এসএসস পর ক ষ র থ র ম মব ত র
এছাড়াও পড়ুন:
নিখোঁজ এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের সন্ধানে কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা
ছেলের বড় একটি ছবি বুকের সঙ্গে ধরে নাটোর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এজাজুল হক। তাঁর চোখ ফটকের দিকে। অপেক্ষা ছেলের জন্য। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরও তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে।
এজাজুল হক জানান, তাঁর ছেলে মুনতাহা এহসান (মুগ্ধ) নাটোর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। আজ বৃহস্পতিবার বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত সোমবার বিকেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ। নানা চেষ্টার পরও তার খবর পায়নি পরিবার।
এজাজুল হক বলেন, তাঁর ধারণা ছিল, ছেলে অন্তত পরীক্ষা মিস করবে না। যেখানেই থাকুক আজ পরীক্ষায় অংশ নেবে সে। সেই আশায় তিনি কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ছেলে আসেনি। তিনি বলেন, ‘ছেলের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আশা শেষ হয়েছে। কিন্তু ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা তো শেষ হয়নি। নানা রকমের দুশ্চিন্তায় আমি, ওর মা ও বড় বোন প্রতিটি মুহূর্ত পার করছি।’
মা মাহফুজা খাতুন বলেন, ‘মুগ্ধ আমার একমাত্র ছেলে। সে বিদ্যালয় ও মসজিদ ছাড়া বাড়ির বাইরে আর কোথাও যেত না। ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও সে বিদ্যালয়ের টেস্ট পরীক্ষায় খারাপ করে। সে এটা মানতে পারছিল না। খুব মন খারাপ করেছিল। আমরা তাকে বুঝিয়েছি, বোর্ড পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। বকঝকা করিনি। সে পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। হঠাৎ এভাবে নিখোঁজ হয়ে যাবে, ভাবতেও পারছি না।’
নাটোর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক আকরাম হোসেন বলেন, পরীক্ষার আগমুহূর্তে মুগ্ধ এভাবে নিখোঁজ হওয়ায় শিক্ষকদেরও মন খারাপ। তাঁরাও ভেবেছিলেন, হয়তো সে এসে পরীক্ষা দেবে। কিন্তু পরীক্ষার হলে তার আসন ফাঁকা ছিল।
নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক জামাল উদ্দিন মুগ্ধর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখছি। ওর ব্যাপারে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করছি। বিভিন্ন থানায় বেতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তার সন্ধানে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’