পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বিএনপির স্থানীয় এক নেতাসহ দুজনকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের মৈশাদি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মৈশাদি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির কর্মী মো.

মফিজ হাওলাদারের (৫৫) সঙ্গে ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সভাপতি মো. হান্নান হাওলাদারের (৪৫) বিরোধ চলে আসছে। গতকাল বুধবার ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মফিজকে মারধর করেন হান্নান হাওলাদারের লোকজন। ওই ঘটনার জেরে আজ দুপুরে মফিজের আত্মীয় (স্ত্রীর বড় ভাই) উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল হান্নান হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে হামলা করেন। পরে হান্নানের স্বজনেরাসহ স্থানীয় লোকজন তাঁদের বাধা দেন। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিএনপি নেতা জহির উদ্দিনসহ দুজনকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে পিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জহির উদ্দিনসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় পুলিশ।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জহির উদ্দিন (৬০), তাঁর ছেলে মো. তানভীর (২৯) ও কর্পূরকাঠী গ্রামের মো. ফকরুল ইসলামকে (৪৫) প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং কবির হোসেন নামের একজনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিএনপি নেতা জহিরের আত্মীয় মফিজ হাওলাদার বলেন, গতকাল হান্নান ও তাঁর লোকজন তাঁকে (মফিজ) মারধর করেন। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে তাঁর স্বজনেরা আজ হান্নানের বাড়িতে গেলে ওই বাড়ির লোকজন অতর্কিতে হামলা করেন।

আহত কবির হোসেন বলেন, মফিজুর অন্য এলাকার ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে তাঁদের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও মারধর করেন। এলাকাবাসী তাঁদের পিটুনি দিয়ে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেন।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, পুলিশ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ঘর ষ ব উফল উপজ ল ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রী-ছেলেসহ তিন খুনের দায় স্বীকার, ১০ দিনের রিমান্ড

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. ইয়াসিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করেছে। শনিবার বিকেলে তাকে তোলা হয় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেলায়েত হোসেনের আদালতে। সেখানে ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।

শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ময়লার স্তূপ খুঁড়ে ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২২), চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান লাবিব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই এলাকাবাসী ইয়াসিনকে (২৪) ধরে পুলিশে দেন। সে মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার মো. দুলালের ছেলে। আগে ইয়াসিন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাত। পুলিশ জানিয়েছে, ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবেও পরিচিত সে।
শুক্রবার রাতেই লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ইয়াসিন ছাড়াও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে। মুনমুন জানিয়েছেন, লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ৫ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বড় বোন স্বপ্নাও লামিয়ার সঙ্গে পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৭ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসায় বোনদের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। এর পর থেকে তাদের মুঠোফোনটি বন্ধ ছিল।

মামলায় মুনমুন উল্লেখ করেছেন, মাদকাসক্ত ইয়াসিন কোনো কাজ করত না। প্রায় সময় টাকার জন্য লামিয়াকে মারধর করত ও হত্যার হুমকি দিত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ