বাংলা নববর্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের মতামত উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্র ইউনিয়নের চারুকলা অনুষদ শাখা। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রশাসনের এমন স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ অভিযোগ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ঐতিহাসিকভাবে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের কর্মযজ্ঞ শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রয়াসে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু এবারের আয়োজনের শুরু থেকেই চারুকলার শিক্ষকদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে।

আরও পড়ুনএবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার যা থাকছে অন্যতম আকর্ষণ ০৯ এপ্রিল ২০২৫

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো শুরু থেকেই এই আয়োজনে হস্তক্ষেপ করেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়। সেখানে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে তরমুজের ফালি নির্মাণের প্রস্তাব দিলে গোয়েন্দা সংস্থার অনুমোদনের দোহাই দিয়ে সেটিও বাদ দেয়া হয়। মোটিফ তৈরিতে তারা শিক্ষার্থীদের মত উপেক্ষা করলে পরে গণরোষের মুখে সেটি পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়।

মঙ্গল শোভাযাত্রা এরশাদ সরকারের অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের হাতিয়ার ছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী শাসনামলে এই আয়োজন প্রচণ্ড হস্তক্ষেপের শিকার হয়। সে সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আয়োজনে যেভাবে বিরোধী মতকে দমন করা হতো, চারুকলার বর্তমান প্রশাসন পতিত শক্তির সেই অপতৎপরতা কাঁধে নিয়ে হাঁটছে। মঙ্গল শোভাযাত্রার ওপর শিক্ষার্থীদের কর্তৃত্ব কেড়ে নিয়ে প্রশাসনিক ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার গণবিরোধী পরিকল্পনা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।

আরও পড়ুননববর্ষে শোভাযাত্রা আরও বড় পরিসরে ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার লক্ষ্য২৪ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ র কল

এছাড়াও পড়ুন:

বর্ষবরণ ও চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজন রবীন্দ্রসরোবরে

সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারা’র চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণের দুটি অনুষ্ঠানই হবে এবার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে। গতকাল শনিবার বিকেলে রবীন্দ্রসরোবরে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পীদের জন্য কয়েক ধাপে মঞ্চ তৈরি করছেন শ্রমিকেরা। বাঁশ, কাঠ, কাপড়ে তৈরি হচ্ছে চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণের মঞ্চ। গত বছর এই আয়োজন হয়েছিল চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে।

এবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘ইস্পাহানি চ্যানেল আই-সুরের ধারার বর্ষবরণ ১৪৩২’ শিরোনামে। ২০১২ সাল থেকে এ আয়োজন ‘সুরের ধারা চ্যানেল আই হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ’ শিরোনামে আয়োজিত হয়ে আসছিল।

সুরের ধারার ভাইস চেয়ারম্যান ও শিক্ষক স্বাতী সরকার প্রথম আলোকে গতকাল জানিয়েছেন, এবারের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে সুরের ধারার শিল্পীসহ সারা দেশের প্রায় সাড়ে তিন শ শিল্পী অংশ নেবেন। তিনি বলেন, ভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর শিল্পীরাও সংগীত পরিবেশন করবেন এবারের আয়োজনে। রাঙামাটির ১২ জন শিল্পী অংশ নেবেন পরিবেশনায়।

বর্ষবিদায় বা চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজনে অংশগ্রহণ করবেন আড়াই শ শিল্পী। আয়োজনটি সার্বিকভাবে সুরের ধারার। সুরের ধারার এবারের বর্ষবিদায়ের প্রতিপাদ্য ‘স্বদেশ’।

সুরের ধারার শিক্ষক ও আয়োজনের সহকারী কেশব সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এবারের আয়োজনে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণ দুটো অনুষ্ঠানই আগের মতো সরাসরি সম্প্রচারের কথা রয়েছে চ্যানেল আইয়ের। বর্ষবরণের আয়োজনে থাকছে পঞ্চকবির গান।

বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায়ের আয়োজনের মহড়া ঈদের আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানালেন সুরের ধারার শিক্ষকেরা। বাংলা নতুন বছর ১৪৩২-এর প্রথম দিন সকাল ছয়টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলবে। এর আগের দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে চৈত্রসংক্রান্তি বা বাংলা বছরকে বিদায়ের অনুষ্ঠান। বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার উদ্যোগে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সংগীতচর্চা প্রতিষ্ঠান সুরের ধারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ