‘মরে গেলে কি হবে, বেঁচে থাকতেই চল্লিশা করে নিলাম’
Published: 10th, April 2025 GMT
মৃত্যুর পর চল্লিশা হবে কি না, সন্তানরা পারবে কি না- এই ভেবে আর বসে থাকেননি বানেছা বেওয়া। জীবিত থাকতে নিজেই আয়োজন করে ফেললেন নিজের চল্লিশা। বানেছার বয়স এখন ৯৬। রাজশাহীর খড়খড়ি বাইপাস কমলাপুর গ্রামের প্রয়াত ইনছার আলীর স্ত্রী তিনি।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গ্রামে সাজানো হয় বিশাল প্যান্ডেল। নীল-সাদা সামিয়ানা, গরু-ছাগল জবাই, আর দেড় হাজার মানুষের জন্য রান্না। দুপুর থেকেই আশপাশের গ্রাম, এমনকি দূরের মানুষও ছুটে আসেন এই ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী হতে। চল্লিশার খাবার খেতে বসেন সবাই, আর চেয়ে থাকেন বানেছা বেওয়া।
১২ সন্তানের মা বানেছা বেওয়া। এ আয়োজনে বানেছার ৮ ছেলে, ৪ মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ প্রায় ৬০ জন পরিবারের সদস্য একত্রিত হন। সবাই দোয়া করেন বানেছার জন্য।
বানেছা বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও মনটা আজও টগবগে। ঘুরে ঘুরে সবার খাওয়া দেখলেন। বললেন, “মরার পরে যদি কেউ চল্লিশা না করে, তাই আগেই করলাম, তাতে সবাইকে খাওয়ানোও হলো, দোয়াও পেলাম। এখন মনে শান্তি লাগছে। মরার পরে না, বেঁচে থাকতেই মানুষের দোয়া পাওয়া যে কত সুন্দর!”
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে ২৮০০ পরিবারে ডিগনিটি কিট বিতরণ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দুর্যোগপ্রবণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে মর্যাদাসম্পন্ন, সুস্থ ও নিরাপদ জীবনযাপনে সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জলবায়ু অভিযোজন প্রকল্প-ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপটেশন (সিসিএ) প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নিম্ন আয়ের ২৮০০ পরিবারের মাঝে ডিগনিটি কিট বিতরণ করা হয়।
প্রতিটি কিটে স্যানিটারি ন্যাপকিন, সাবান, ঢাকনাসহ বালতি, টর্চ, অন্তর্বাসসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসম্মত সামগ্রী রয়েছে যা নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, পরিচ্ছন্নতা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসাথে নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস ও মাসিক স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুমিলপাড়া কাউন্সিলর অফিস মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল প্রফেসর ডা. মো. আজিজুল ইসলাম (অব.) এসব কীট প্রদান করেন।
এসময় তিনি বলেন, “বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি দেশের অন্যতম বৃহৎ মানবিক সংগঠন হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্যোগ ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর পাশে থেকে কাজ করে আসছে। আজকের ডিগনিটি কিট বিতরণ কার্যক্রম তারই একটি বাস্তব উদাহরণ। নারীদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা এবং আত্মসম্মান রক্ষায় এই কিট একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক উপকরণ। এটি শুধু উপকরণ নয় বরং সম্মানজনক জীবনের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।”
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ডিসিআরএম বিভাগের পরিচালক ইমাম জাফর সিকদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রেজারার মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সম্মানিত সদস্য ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মহাসচিব ড. কবির মো: আশরাফ আলম, এনডিসি ও নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আলমগীর হুসাইন। অনুষ্ঠানের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে বৃটিশ রেড ক্রস। আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ বিতরণ কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপটেশন (সিসিএ) প্রকল্পের আওতায় ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সুমিলপাড়া, চর সুমিলপাড়া ও ঋষিপাড়া এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন সহনশীলতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সচেতন ও মর্যাদাসম্পন্ন সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতেই এই ডিগনিটি কিট বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।