ভারত যতটা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করে, অন্য কোনো দেশ ততটা করে না: জয়শঙ্কর
Published: 10th, April 2025 GMT
বাংলাদেশের মঙ্গল ভারত যতটা কামনা করে, আর কোনো দেশ ততটা করে না। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই মঙ্গল কামনা ভারতের ডিএনএতে রয়েছে। তাই এত খোলামেলা আমরা আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারি।’
ভারতীয় গণমাধ্যম সিএনএন নিউজ১৮ আয়োজিত ‘উত্থিত ভারত’ সম্মেলনে অংশ নিয়ে গতকাল বুধবার এ মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দুই প্রতিবেশী দেশের অনন্য ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত আশা করে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর সেখানকার পরিস্থিতি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, ‘দুই দেশের মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটাই মুখ্য। ওটাই সম্পর্কের মৌলিক আধার। এই অনন্য সম্পর্ক অন্য কোনো দেশের সঙ্গে নেই। এই সত্য আমাদের স্বীকার করতে হবে। দুই নেতার বৈঠকে ওই বার্তাই ছিল প্রধান।’
ব্যাংককে মোদি–ইউনূস বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে মোটামুটি চারটি বার্তা দেওয়া হয়। উত্তেজক মন্তব্য পরিহার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা–সম্পর্কিত উদ্বেগ, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন এবং গঠনমূলক আলোচনা।
অন্যদিকে বৈঠকে মোদির কাছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গ তুলেছেন অধ্যাপক ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট যতগুলো ইস্যু আছে, তার সব কটি নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব কটি বিষয় আলোচনায় তুলেছেন। আলোচনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, ভারতে বসে তিনি যেসব উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, সে প্রসঙ্গ; সীমান্ত হত্যা বন্ধ, গঙ্গার পানি চুক্তির নবায়ন এবং তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গ এসেছে।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশের কোনো কোনো মহল থেকে উত্তেজক মন্তব্য করা হচ্ছে। এতে ভারত উদ্বিগ্ন। মৌলবাদী প্রবণতাও উদ্বেগের আরেকটি বিষয়। সংখ্যালঘুদের প্রতি আক্রমণও চিন্তার বিষয়। এসব উদ্বেগ প্রকাশের ক্ষেত্রে ভারত খুবই খোলামেলা।
পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগের ওপর জোর দিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশের মঙ্গল ভারতের চেয়ে বেশি আর কেউ চায় না। এটা আমাদের ডিএনএর অঙ্গ। একজন হিতাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধু হিসেবে আমরা চাই, দেশটা ঠিক কাজ করুক, ঠিক দিকে এগিয়ে যাক।’
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আশা করি, নির্বাচন শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে। দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য আছে। আর গণতন্ত্রে নির্বাচন জরুরি। নির্বাচনই অধিকার অর্পণ করে। আশা করি, বাংলাদেশও সেই পথেই এগোবে।’
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বার্তায় ‘শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক’ বাংলাদেশকে ভারতের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত প রসঙ গ র বল ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা ভারতের ডিএনএতে রয়েছে: জয়শঙ্কর
বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করা ভারতের ডিএনএতে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি দাবি করেছেন, ভারতের চেয়ে বেশি কোনো দেশ বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করে না।
বুধবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সম্প্রতি থাইল্যান্ডে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাক্ষাৎ করেন। এরপর গতকাল বুধবার ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নয়াদিল্লিতে রাইজিং ভারত সামিটে ভাষণ দেওয়ার সময় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করলেন।
আরো পড়ুন:
মেয়ের বয়স ১৮ হলে সম্পর্কে জড়াব: পবন কল্যাণের প্রাক্তন স্ত্রী
তামান্নার নতুন আইটেম গানের শুটিংয়ের ভিডিও ফাঁস
নিউজ১৮ আয়োজিত সামিটের দ্বিতীয় দিনে ড. ইউনূস-মোদির সাম্প্রতিক বৈঠক সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “আমি মনে করি আমাদের পক্ষ থেকে বৈঠকে যে প্রধান বার্তাটি বেরিয়ে এসেছে তা হলো, ঐতিহাসিক কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই অনন্য। এটি মূলত জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ, সম্ভবত অন্য যেকোনো সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশি। এবং এটিই আমাদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, “দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে যে বক্তব্য বেরিয়ে আসছে তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। আমরা যে মৌলবাদী প্রবণতা দেখছি তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। এবং আমি মনে করি আমরা সেই উদ্বেগগুলো প্রকাশের বিষয়ে খুব খোলামেলা ছিলাম।”
জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেন, “ভারত বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।” তিনি দাবি করেন, “একটি দেশ হিসেবে, আমাদের (ভারতের) চেয়ে বেশি কোনো দেশ বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করে না। এটা আমাদের ডিএনএতে রয়েছে। একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে, একজন বন্ধু হিসেবে, আমি মনে করি আমরা আশা করি তারা সঠিক পথে চলবে এবং সঠিক কাজ করবে।”
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, তিনি আশা করেন যে- বাংলাদেশে শিগগিরই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি দাবি করেন, “গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অধিকারী একটি দেশ হিসেবে, গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন প্রয়োজন। এভাবেই ম্যান্ডেট দেওয়া হয় এবং ম্যান্ডেট পুনর্নবীকরণ করা হয়। তাই আমরা আশা করি তারা সেই পথেই যাবে।”
ঢাকা/ফিরোজ