বিনিয়োগকারীদের আমরা আশ্বস্ত করেছি, রাজনৈতিক দল হিসেবে সব সময় ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করব বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে বিনিয়োগ সম্মেলনে এনসিপির প্রতিনিধিদল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত রাজধানীতে বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। সেখানে যায় এনসিপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বড় বড় দেশগুলো যারা বাংলাদেশকে ইনভেস্টমেন্ট হাব হিসেবে বেছে নিয়েছে, তারা আমাদের সাথে কথা বলেছে। বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যে ভঙ্গুর করে দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য তারা রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি চেয়েছে। আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে সেই প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছি। সেই সঙ্গে বলেছি আগামীতে বাংলাদেশ বিনিয়োগের স্বর্গে পরিণত হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করতে চাই।’ 


এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশকে ৫০–এ উন্নীত করার কথা আমরা বলেছি। আমরা আরও বলেছি, আমাদের যে বার্ষিক এফডিআই ফ্লো এখন ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন, এটিকে আমরা ১৫ বিলিয়ন ডলারে রূপান্তরিত করব।’

বিনিয়োগকারীরা নবায়নযোগ্য শক্তি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা আমাদের কনট্রিবিউশনকে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছি। বেকারত্ব কমিয়ে আনার ব্যাপারে কথা বলেছি। কৃষিপ্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য শক্তি, স্বাস্থ্যসেবা বিষয়গুলোতে আমরা জোর দিয়েছি। এ ছাড়া কীভাবে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে রূপান্তরিত করা যায়, সে বিষয়ে কথা বলেছি। আমাদের বড় একটি শক্তি সুনীল অর্থনীতি, সে বিষয়েও কথা বলেছি।’

বিগত ১৫ বছরের অনিয়ম এবং নীতি জটিলতার কথা বিনিয়োগকারীরা সমনে এনেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি এনসিপি সরকারে গেলে আমরা ওয়ান–স্টপ সল্যুশনে যাব। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন করে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে তরুণ প্রজন্ম তাদের সহায়ক হবে।’

বিরোধী দলে গেলে এনসিপি হরতাল–অবরোধ ডেকে ব্যবসার পরিবেশ বিঘ্নিত করবে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘সরকার এবং বিরোধী দল মিলেই রাষ্ট্র। আমরা বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছি, রাজনৈতিক দল হিসেবে সব সময় ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘গতকাল আমরা লক্ষ করেছি, যখন সম্মেলন চলছিল, মানুষ উৎফুল্ল তখন কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা এটা নিয়ে উপহাস করছিল। আমরা তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমাদের সমনে একটি সম্ভাবনা এসেছে, সেটিকে কাজে না লাগালে বংলাদেশ আবারও পিছিয়ে যাবে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম, যুগ্ম সদস্যসচিব সাগুফতা বুশরা মিশমা, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল ফয়সাল প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প ন স র দ দ ন প টওয় র ন শ চ ত কর এনস প র আম দ র ত করব

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের শুল্ক থেকে অব্যাহতি পেল স্মার্টফোন-কম্পিউটার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং কিছু ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিকে সম্পূরক শুল্কের আওতা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। চীন থেকে এসব পণ্য আমদানিতে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।

ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রোল এক নোটিশে বলেছে, বেশিরভাগ দেশের ওপর ট্রাম্প যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, সেই শুল্ক এবং চীনের ওপর আরোপিত উচ্চ হারের সম্পূরক শুল্কের আওতার বাইরে থাকবে এসব পণ্য।

বিবিসি লিখেছে, এ সিদ্ধান্তকে চীনের ওপর ট্রাম্পের শুল্কের প্রথম উল্লেখযোগ্য ছাড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। একজন বাণিজ্য বিশ্লেষক একে ‘গেইম-চেঞ্জার পরিস্থিতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

শনিবার রাতে মিয়ামি সফরের সময় ট্রাম্প বলেন, আগামী সপ্তাহের শুরুতে তিনি ছাড়ের বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানাবেন।

এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা খুব নির্দিষ্ট করে জানাব। কিন্তু আমরা অনেক টাকা নিচ্ছি। দেশ হিসেবে আমরা অনেক টাকা নিচ্ছি।

নতুন শুল্কনীতির কারণে বিভিন্ন গ্যাজেটের দাম আকাশচুম্বী হতে পারে বলে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো উদ্বেগ প্রকাশের পর এই পদক্ষেপ নিল ট্রাম্প প্রশাসন। কারণ এসব গ্যাজেটের বেশিরভাগই তৈরি হয় চীনে।

৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়া এই ছাড়ের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল, মেমোরি কার্ডসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং উপাদানও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি গবেষণার বৈশ্বিক প্রধান ড্যান আইভস এক্স পোস্টে বলেছেন, প্রযুক্তি বিনিয়োগকারীদের জন্য শুল্ক ছাড় হচ্ছে স্বপ্নের মত। চীনা শুল্কের ক্ষেত্রে স্মার্টফোন, চিপ বাদ দেওয়া একটি গেইম-চেঞ্জার পরিস্থিতি।

অ্যাপল, এনভিডিয়া, মাইক্রোসফটের মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানি এবং বিশাল প্রযুক্তি খাত এই সপ্তাহান্তে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, আইফোনের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র, সেখানে গত বছর অ্যাপলের অর্ধেকের বেশি স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করা অ্যাপলের ৮০ শতাংশ আইফোন চীনে তৈরি, বাকি ২০ শতাংশ তৈরি ভারতে।

সহযোগী স্মার্টফোন জায়ান্ট স্যামসাংয়ের মত অ্যাপল চীনের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা এড়াতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। নতুন উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে এগিয়ে রয়েছে ভারত ও ভিয়েতনাম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ