পুনর্গঠনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা (বিবিধ মামলা) হয়েছে। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামি করা হয়েছে ১৪১ জনকে। আসামিদের মধ্যে ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৮৭ জন পলাতক।

আজ বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয় এসব তথ্য জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তপ্রক্রিয়ার অগ্রগতিবিষয়ক আপডেট’–বিষয়ক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রসিকিউটর (প্রশাসন) গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ট্রাইব্যুনালের পুনর্গঠন হলে এখানে এখন পর্যন্ত অভিযোগ এসেছে ৩৩৯টি। চলমান তদন্ত কার্যক্রম ৩৯টি। তদন্তের প্রাথমিক সত্যতার আলোকে মামলা (বিবিধ মামলা) হয়েছে ২২টি। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত মোট অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৪১ জন। তাঁদের মধ্যে ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আছেন ৮৭ জন।

১৪১ আসামির মধ্যে ৭০ জন বেসামরিক, ৬২ জন পুলিশ (র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর) সদস্য এবং অবসরপ্রাপ্ত বা বরখাস্ত করা সামরিক কর্মকর্তা ৯ জন।

শেখ হাসিনাসহ চারটি মামলার তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে

চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের উপস্থাপন করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ পর্যন্ত তদন্ত শেষ বা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে—এমন মামলা চারটি। এর মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলা, সাভারের আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলা, রাজধানীর চানখাঁরপুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা এবং রাজধানীর রামপুরায় কার্নিশে ঝুলে থাকা ব্যক্তির ওপর গুলির ঘটনায় হওয়া মামলাটি রয়েছে।

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, এসব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দাখিল করা হতে পারে। তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনাল গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিক বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে।

এক হাজার ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত এক হাজার ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিডিও ও ডিজিটাল সাক্ষ্য সংগ্রহ (এক হাজারের বেশি ভিডিও), পর্যালোচনা, যাচাই–বাছাই ও জিও লোকেশন যাচাইয়ের কাজ চলমান।

গুমবিষয়ক তদন্ত কার্যক্রমে ঢাকা শহরের তিনটি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়া জেলায় গুমের তিনটি কেন্দ্র (আয়নাঘর, হাসপাতাল, এলআইসি ইত্যাদি বিভিন্ন কোডনেমে পরিচিত) পরিদর্শন ও সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ১৫টি জেলায় তদন্ত পরিচালনার উদ্দেশ্যে একাধিকবার পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্তকাজে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়-মাদ্রাসা পর্যায়ে এ পর্যন্ত চারটি গণশুনানি গ্রহণ করা হয়েছে। তাতে আট শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর ধ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রী-ছেলেসহ তিন খুনের দায় স্বীকার, ১০ দিনের রিমান্ড

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. ইয়াসিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করেছে। শনিবার বিকেলে তাকে তোলা হয় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেলায়েত হোসেনের আদালতে। সেখানে ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।

শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ময়লার স্তূপ খুঁড়ে ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২২), চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান লাবিব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই এলাকাবাসী ইয়াসিনকে (২৪) ধরে পুলিশে দেন। সে মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার মো. দুলালের ছেলে। আগে ইয়াসিন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাত। পুলিশ জানিয়েছে, ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবেও পরিচিত সে।
শুক্রবার রাতেই লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ইয়াসিন ছাড়াও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে। মুনমুন জানিয়েছেন, লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ৫ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বড় বোন স্বপ্নাও লামিয়ার সঙ্গে পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৭ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসায় বোনদের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। এর পর থেকে তাদের মুঠোফোনটি বন্ধ ছিল।

মামলায় মুনমুন উল্লেখ করেছেন, মাদকাসক্ত ইয়াসিন কোনো কাজ করত না। প্রায় সময় টাকার জন্য লামিয়াকে মারধর করত ও হত্যার হুমকি দিত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ