দিনাজপুরের ট্রাক্টরচালক হৃদয়চন্দ্র যেভাবে ‘ইংলিশম্যান’ হয়ে উঠলেন
Published: 10th, April 2025 GMT
সুধীরচন্দ্র–রাধা রানী দম্পতির দুই ছেলের মধ্যে হৃদয় ছোট। তাঁর বাবাও ছিলেন ট্রাক্টরচালক। বাবার কাছ থেকেই ট্রাক্টর চালনায় তাঁর হাতেখড়ি। বয়সের ভারে বাবা এখন আর কাজ করতে পারেন না। হৃদয় ও তাঁর ভাইয়ের কাঁধেই এখন সংসারের ভার। বছর দু–এক আগে ঋণ করে একটি ট্রাক্টর কিনেছেন। দুই ভাই সেটি চালান। যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে সাতজনের সংসার।
ট্রাক্টর চালনা ও কৃষিকাজের পাশাপাশি ঘুরে বেড়ানো, ইংরেজি সিনেমা দেখা ও গান শোনার প্রতি হৃদয়ের ঝোঁক আছে। কিন্তু ইংরেজিতে কথা বলে ভিডিও বানানোর শুরুটা কীভাবে হলো? কীভাবে হৃদয় হয়ে উঠলেন ইংলিশম্যান? বিস্তারিত জানতে হৃদয়দের দোচালা টিনের বাড়িতে গিয়েছিলাম ৯ এপ্রিল।
যেভাবে রপ্ত হলো ইংরেজিমাধ্যমিকে পড়ার সময়ই তৈরি হয় ইংরেজির প্রতি আগ্রহ। স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে ছোট ছোট বাক্যে ইংরেজি বলার চেষ্টা করতেন হৃদয়চন্দ্র রায়। ২০১৮ সালে সেতাবগঞ্জ মডেল পাইলট স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৪.
ভালো ইংরেজি জানেন, এমন কারও সন্ধান পেলেই তাঁর কাছে ছুটতেন হৃদয়। রাতে টেলিভিশনে ইংরেজি সংবাদ শুনতেন। সপ্তাহে দুই দিন ইংরেজি পত্রিকা কিনে পড়তেন। হৃদয় বলেন, ‘সংবাদের দিকে যতখানি মনোযোগ থাকত, তার চেয়ে বেশি মনোযোগ থাকত ইংরেজি ভাষা শেখার প্রতি। ভাষাটা টুকটাক আয়ত্তে আসতে লাগল। কিন্তু একা একা এটা হয় না। পার্টনার লাগে। অধিকাংশ সময় বড় ভাই পাশে থাকে। সে–ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে আর পড়েনি। ভাইয়ের সঙ্গেই কথা বলার চেষ্টা করতাম। এই কয়েক বছরে ইংরেজিতে ভাইয়েরও উন্নতি হয়েছে। আমার মতো অনর্গল বলতে না পারলেও সবকিছু বোঝে।’
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামে হৃদয়ের বাড়িউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন বুধবার, গুরুত্ব পাবে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, শুল্ক ও মিয়ানমার পরিস্থিতি
যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিন দিনের সফরে আগামী বুধবার ভোরে ঢাকায় আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম প্রতিনিধিদলের এই সফরে বাংলাদেশে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ, রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তা এবং মিয়ানমারের পরিস্থিতিসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে নিয়োজিত বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার প্রথমে ঢাকায় পৌঁছাবেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক। পরে আরেকটি ফ্লাইটে আসবেন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপ। বাংলাদেশে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরের প্রথম দিনের শুরুতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর তাঁরা পর্যায়ক্রমে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। আগামী বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
# গণতান্ত্রিক উত্তরণ, শুল্ক ও মিয়ানমার পরিস্থিতি গুরুত্ব পাবে# বুধবার পৃথক ফ্লাইটে ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটি হতে যাচ্ছে দেশটির উচ্চপর্যায়ের কোনো প্রতিনিধিদলের প্রথম বাংলাদেশ সফর। ফলে দুই দেশের সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। প্রাসঙ্গিকভাবে ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সফরের সময় নিকোল চুলিক অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংস্কারপ্রক্রিয়া বিশেষ করে গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন। চলমান সংস্কার নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার সময় যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তা জানতে চাইবেন। তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারেন।
অন্যদিকে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি গুরুত্ব পাবে। মিয়ানমারের কিছু এলাকা ছাড়া দেশটির বাকি অংশে জান্তা সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। মিয়ানমার মাদক চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অপহরণ করে আটকে রাখা, নারী ও শিশুসহ মানব পাচারের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তো রয়েছেই। ফলে অ্যান্ড্রু হেরাপের ঢাকা সফরে পুরো পরিস্থিতিই আলোচনায় আসবে।