এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ‘বাড়তি চাপ’ না দেওয়ার অনুরোধ শিক্ষা উপদেষ্
Published: 10th, April 2025 GMT
পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা নানা রকম চাপের মধ্যে থাকেন, জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) বলেছেন, কোনো বাড়তি অন্যায় চাপ যেন সৃষ্টি না করা হয়, সেজন্য সবার কাছে আমি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর দিন বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন কি না, তা নিয়ে কিছু জানায়নি মন্ত্রণালয়। তবে, আকস্মিকভাবে কোনো কেন্দ্রে তিনি যেতে পারেন বলে গুঞ্জন ছিল। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ শিক্ষা উপদেষ্টা রাজধানীর মতিঝিল বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। তার সঙ্গে অল্প কয়েকজন কর্মকর্তাকে দেখা যায়। খুব বেশি সময় তিনি কেন্দ্রে অবস্থান করেননি।
কেন্দ্র থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সারা দেশে এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ২৯ লাখ ২৮ হাজার ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ৩০ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৩ হাজার ৮১৫ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। এটি বিশাল কর্মযজ্ঞ।
তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করেছি এটি সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে। আমরা মনে করি, পরীক্ষার শেষ দিন পর্যন্ত এ পরিবেশ বজায় থাকবে। আশা করি, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।”
গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম পাবলিক পরীক্ষা এবং প্রশ্ন ফাঁসের মতো বিষয়ে এ পরীক্ষাকে টার্গেট করা হতে পারে, এজন্য বাড়তি কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অবশ্যই বিবেচনার মধ্যে ছিল। সে হিসেবে যে সূত্র থেকে, প্রশ্নফাঁস তো অতীতে হয়েছে বলে জানা গেছে। আমরা চেষ্টা করেছি, সেই সূত্রগুলো প্লাক করা। সেখান থেকে যেন না হতে পারে, আমরা আশা করি, আমরা সফল হব। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা অবশ্যই টপ প্রায়োরিটি এরিয়া হিসেবে আমরা দেখেছি এবং কার্যকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ায়, এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করব, তারা বিরত থাকবেন। দেশের মঙ্গলের জন্য আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান বা পছন্দ থাকতে পারে; পরীক্ষা এমন একটা বিষয়, এটা অনেক প্রস্তুতির পর নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের নানা রকমের মানসিক চাপ এখানে থাকে। অভিভাবক ও শিক্ষকদের মানসিক চাপ থাকে। তো এটার সাথে বাড়তি অন্যায় চাপ যেন সৃষ্টি না করেন, সকলের কাছে আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, প্রশ্নফাঁসের তথ্য পেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগে জানাতে হবে। যাতে তারা যাচাই-বাছাই করতে পারে। কিন্তু, আপনি একটা বিষয় পেলেন, সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেন, তার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই আপনাকে নিতে হবে। এর মাধ্যমে কিন্তু অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। তাই, আমাদের আবেদন থাকবে, আপনারা এসব থেকে বিরত থাকবেন।
পরীক্ষা শেষে দুই মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের একটা রেওয়াজ আছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, যদি রেওয়াজ থেকে থাকে, আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব।
উপদেষ্টা জানান, পরীক্ষার তারিখ ইস্টার সানডে-তে পড়েছিল। আমরা সেটা বিবেচনার মধ্যে নিয়েছি। সেটি পরিবর্তন করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের ছাড়াই বেলা ১১টার দিকে পরীক্ষা কেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষ পরিদর্শন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আপনারা সকলেই বাইরে ছিলেন, যার ফলে ভেতরে ছাত্রছাত্রীরা যে পরিবেশে পরীক্ষাটা দিচ্ছে, সেখানে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।” এজন্য সাংবাদিকদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। শেষ হয় দুপুর ১টায়। আগামী ১৩ মে শেষ হবে পরীক্ষা। ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ১৫ থেকে ২২ মে পর্যন্ত।
এদিকে, সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা আয়োজনের লক্ষ্যে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
ঢাকা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র উপদ ষ ট ন র পর
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে নববর্ষেও স্কুলে পাঠদান, প্রধান শিক্ষক বললেন অপরাধের কিছু নেই
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পহেলা বৈশাখের দিন সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারের বিভিন্ন দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করলেও সোনারগাঁয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বৈদ্যেরবাজার নেকবর আলী (এনএএম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে পাঠদান।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে এই স্কুলে ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে দেখা গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, যেহেতু বিদ্যালয়টি বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র তাই বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। তাই শিক্ষার্থীদের পড়া যেন পিছিয়ে না যায় সেজন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করানো হচ্ছে। এতে তো অপরাধের কিছু নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ বৈদ্যেরবাজার নেকবর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস পরিহিত অবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত চলছে পাঠদান কর্মসূচি।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন হাতে বেত নিয়ে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাইমুনা ইসলাম জানান, আমাদের শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসতে বললে তো আসতেই হবে। আমাদের ক্লাস করানো হবে বলে বই-খাতা নিয়ে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর আমাদের এসএসসি পরীক্ষা তাই শিক্ষকরা ক্লাস করানো হবে বলে জানিয়েছেন।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান জানান, রোববার শিক্ষকরা ক্লাস করানো হবে জানিয়ে আমাদের বই-খাতা নিয়ে স্কুলে আসতে বলেছে তাই আজকে আসছি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক বশির উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হচ্ছে। এখানে আমরা চাকরি করি তাই তাদের নির্দেশনা পালন করতে হবে।
ক্লাস করানোর সময় আরেকজন শিক্ষক জানান, এবার বই দিতে অনেক বিলম্ব হয়েছে। তাই ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে রয়েছে। এজন্য আজকে ক্লাস করানোর নিয়ম না থাকলেও শিক্ষার্থীদের নিয়ে এসে ক্লাস করানো হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই, আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পারলাম। এমন একটি দিনে ক্লাস করানো ঠিক হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।