রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিস্তারিত আসছে.

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র পর য় ন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অভিন্ন চেয়ারম্যানের অবস্থান ভিন্ন

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের হেমন্তগঞ্জ গ্রামের কৃষক জজ মিয়ার মৃত্যু নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। পুলিশ ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, ঈদুল ফিতরের আগের দিন বাজারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে তাঁর পরিবার ও ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, দুই পক্ষের হাতাহাতি থামাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে জজ মিয়ার।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করছেন। তিনি এ ঘটনার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীর ওপর দায় চাপিয়ে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টা করছেন।
কেওয়ারজোড় ইউপি চেয়ারম্যান হলেন আবুল কাসেম। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মিঠামইনে বিএনপির অফিস ভাঙচুর ও লুটপাটসহ মারধরের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। মামলার বাদী উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক লোকমান মিয়া। মামলার পরে আত্মগোপনে থাকার পর গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি আদালতে হাজিরা দেন চেয়ারম্যান কাসেম। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠান। ১ মাস জেলে থাকার পর ঈদের ১ সপ্তাহ আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, বাড়িতে ফিরে এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকেন চেয়ারম্যান কাসেম। এ নিয়ে ৩০ মার্চ ইউপি চেয়ারম্যান কাসেম ও ইউপি যুবদলের আহ্বায়ক সজিব আহমেদের অনুসারীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। সজিব মিয়া বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জেল থেকে বেরিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলার জন্য তাদের (যুবদলের নেতাকর্মী) দায়ী করে আসেছন। এজন্য জজ মিয়ার মৃত্যুর দায় তাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন তিনি। 
জজ মিয়ার (৬৫) ছেলে মুনাফ মিয়া কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। চেয়ারম্যান কাসেম সম্পর্কে জজ মিয়ার ভাতিজা। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন করেছেন।
সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিতে গত সোমবার বিকেলে হেমন্তগঞ্জ গ্রামে যান এ প্রতিবেদক। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দর্জি কারিগর আইনুল হক বলছিলেন, ঈদের আগের দিন আসরের নামাজের পর জজ মিয়া পা পিছলে পড়ে গেলে দু’জন লোক ধরাধরি করে তাঁকে মসজিদে নিয়ে আসেন। সেখানে তাঁর মাথায় পানি দেওয়া হয়। কোনো ঝগড়াবিবাদ হয়নি।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী শহীদ মিয়ার ভাষ্য, ইফতারের আগে জজ মিয়া তাঁর সামনেই দাঁড়ানো ছিলেন। হঠাৎ দেখতে পান, তিনি মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মাথায় পানি দেওয়া হয়। নেওয়া হয় চিকিৎসকের কাছে। 
সেদিন কোনো ঝগড়াঝাটি হয়নি জানিয়ে শহীদ মিয়া বলেন, অথচ চেয়ারম্যান (কাসেম মিয়া) বলে বেড়াচ্ছেন জজ মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
একই ভাষ্য আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মদন মিয়ারও। তিনি বলেন, ইফতারের আগে জজ মিয়া মুসল্লিদের সঙ্গেই ছিলেন। হঠাৎ পড়ে যান। তাঁকে কোলে করে মসজিদের দুয়ারে এনে মাথায় পানি দেওয়া হয়। পরে পরিবারের লোকজন এসে তাঁকে নিয়ে যান।
তবে জজ মিয়ার ছেলে আলি আজগর দাবি করছেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে যান তাঁর বাবা। তখন বুকে আঘাত লেগে তিনি মারা যান। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে তিনি এর বিচার দাবি করেন।
পল্লি চিকিৎসক হাবিবুর রহমান জানান, ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় জজ মিয়াকে তাঁর কাছে আনা হয়। তখন পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন তিনি আর বেঁচে নেই। 
হেমন্তগঞ্জ গ্রামের আরও অনেকের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তাদের সবার বক্তব্য, সেদিন এলাকায় কোনো সংঘর্ষ হয়নি।
মিঠামইন থানার ওসি শফিউল আলম জানান, পূর্ব শত্রুতাবশত দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। তবে এতে কেউ আহত হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে একটি মসজিদের সামনে পা পিছলে পড়ে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা যান জজ মিয়া। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ