মেসি ম্যাজিকে সেমিতে ২ গোলে পিছিয়ে পড়া মিয়ামি
Published: 10th, April 2025 GMT
কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে লস অ্যাঞ্জেলস এফসির কাছে ১-০ গোলে হেরে পিছিয়ে পড়েছিল ইন্টার মায়ামি। তবে দ্বিতীয় লেগে ঘুরে দাঁড়ালেন লিওনেল মেসিরা। শুরুতে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টাইন মহাতারকার জাদুতে ৩-১ গোলের জয় তুলে নিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে মায়ামি।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ম্যাচে নবম মিনিটেই অ্যারন লংয়ের গোলে এগিয়ে যায় লস অ্যাঞ্জেলস। তবে ৩৫ মিনিটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান মেসি। প্রথমার্ধে সমতা ফিরে আসার পর দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি আধিপত্য দেখায় মায়ামি। ৬১ মিনিটে অ্যালেনের চিপ করা বল থেকে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করেন রেদোনদো। দুই লেগ মিলিয়ে তখন ম্যাচে সমতা ফিরে এলেও অ্যাওয়ে গোলের নিয়মে এগিয়ে ছিল এলএএফসি। ৬৭ মিনিটে সুয়ারেজের করা একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়।
শেষ মুহূর্তে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন মেসি। ৮৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোলটি করেন তিনি। ম্যাচের শেষ দিকে গোলরক্ষক অস্কার করেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেভ, যা মায়ামির জয় নিশ্চিত করে।
এই জয়ের ফলে চ্যাম্পিয়ন্স কাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ইন্টার মায়ামি। তাদের প্রতিপক্ষ হতে পারে মেক্সিকান ক্লাব পুমাস অথবা কানাডিয়ান ক্লাব ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস। মেসির দুর্দান্ত ফর্মে দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে এখন শেষ চারে চোখ রাখছে মায়ামি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইন ট র ম য ম
এছাড়াও পড়ুন:
জিআই পণ্য প্রদর্শনী ও বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ নিয়ে মুক্ত আলোচনা
বাংলাদেশ ইনস্টিটিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের (বিআইএম) ঢাকার সোবহানবাগ ক্যাম্পাসে সোমবার সকালে বাংলাদেশে নিবন্ধিত বেশিরভাগ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জিআই) পণ্যের সমাবেশ ঘটিয়ে ‘জিআই পণ্য প্রদর্শনী ও এর বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ’ বিষয়ে একটি মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেধাস্বত্ব বিষয়ে স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদানকারী দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান, বিআইএমে এ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে পুনর্জ্জীবিত করতে প্রাথমিক কার্যক্রম হিসেবে, জিআই পণ্যের বাণিজ্যিকায়নের সম্ভাবনা, জনপ্রিয়তা ও সাংস্কৃতিক মূল্যকে প্রাধান্য দিয়ে, দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক দিবস পহেলা বৈশাখে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইএম-এর মহাপরিচালক রশিদুল হাসান। মুক্ত আলোচনা সঞ্চালন করেন বিআইএম-এর গবেষণা বিভাগের প্রধান সাঈদুর রহমান। আলোচনার শুরুতে সঞ্চালক অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। এতে বলা হয়,
দেশে জিআই পণ্য সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়ানো এবং আরও বেশি সংখ্যক জিআই পণ্য নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ করা; বিআইএমের স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা ইন সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের প্রাক্তন ও বর্তমান অংশগ্রহণকারীদের জিআই পণ্য নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী করে তোলা; স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে জিআই পণ্যের বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের সম্ভাবনার ওপর গবেষণা কার্যক্রমের গবেষণা পরিধি চিহ্নিত ও অন্বেষণ করা এবং মেধাস্বত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষণ পুনরায় চালু করার ঘোষণা এবং সে ব্যাপারে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করা দরকার।
ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের পেটেন্ট ডিজাইনের সহকারী পরিচালক বেলাল হোসেন জিআই নিবন্ধনের বিভিন্ন কারিগরি দিক তুলে ধরেন। এরপর শিল্প সচিব সরাসরি বিভিন্ন আলোচক ও অংশগ্রহণকারীদর সঙ্গে আলোচনা করেন। শেষে বিআইএমের মহাপরিচালকের বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা শেষ হয়। আলোচনার আগে অংশগ্রহণকারীরা জিআই পণ্য দ্বারা প্রস্তুত নাস্তা করেন এবং প্রধান অতিথি জিআই পণ্য প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।
আলোচনা থেকে জানা যায়, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান সময়ে মেধাস্বত্বের বিষয়ে সাধারণের আগ্রহ বড়েছে। এ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সাধারণের আগ্রহের ক্ষেত্রে অন্যান্য মেধাস্বত্বের তুলনায় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য শীর্ষ স্থানীয় যা নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত স্বাতন্ত্র হতে উদ্ভূত। মৌলিকত্ব বিবেচনায় জিআই পণ্যগুলো ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, বা মানব উৎপাদনশীলতার বিশেষত্বকে প্রতিফলন করে এবং উচ্চতর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অবদান রাখতে পারে। বিশ্বাসযোগ্যতা বিবেচনায় জিআইপণ্যগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া একটি আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো অনুসরণ করে থাকে এবং অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো কাজে লাগানোর জন্য এ সকল পণ্যের উৎপাদকদের একটি যৌথ ব্যবস্থাপনা কাঠামো প্রয়োজন হয়ে থাকে।
নিবন্ধিত জিআই পণ্যের সংখ্যা প্রায়শই জাতীয় গর্বের স্ংস্কৃতিক উপাদান হিসাবে প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই নিবন্ধনের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা এবং এ বিষয়ে মিডিয়া কাভারেজ নির্দিষ্ট ধরনের মেধাস্বত্ব হিসেবে জিআই পণ্যের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি করেছ। জামদানি শাড়ি ২০১৫ সালে বাংলাদেশের প্রথম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন লাভ করে। পরে পর্যায়ক্রমে ইলিশ মাছ, রংপুরের শতরঞ্জি, বাংলাদেশ কালিজিরা চাল, বিজয়পুরের সাদা মাটি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহী সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জিসহ ৫৬টি পণ্য বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে জিআই নিবন্ধন পেয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি পণ্য পেটেন্ট, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে নিবন্ধনের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ সকল পণ্যের অর্থনৈতিক গুরুত্বের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক মূল্য অপরিসীম। জিআই পণ্যের সম্প্রসারিত বহুবিধ ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য জিআই সম্পর্কিত ওয়েব কনটেন্ট প্রস্তুত, জিআই গিফট বক্স, জিআই ম্যেনু প্রণয়ন এবং জিআই ট্যাগের ব্যবহার বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়।