লংকাবাংলা ফিক্সড ইনকাম ফান্ডের ট্রাস্ট ডিড অনুমোদন
Published: 10th, April 2025 GMT
বে-মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড লংকাবাংলা ফিক্সড ইনকাম ফান্ডের খসড়া ট্রাস্ট ডিড অনুমোদন করেছে পুঁজিবাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৫০তম কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বুধবার (১০ এপ্রিল) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো.
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কমিশন বে-মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড লংকাবাংলা ফিক্সড ইনকাম ফান্ডের খসড়া ট্রাস্ট ডিড ও খসড়া ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট এগ্রিমেন্ট অনুমোদন প্রদান করেছে। ট্রাস্ট ডিডটি রেজি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট, ১৯০৮ এর অধীনে নিবন্ধন হওয়া সাপেক্ষে আলোচ্য মিউচ্যুয়াল ফান্ডের নিবন্ধন সনদ প্রদান করা হবে মর্মেও সিদ্ধান্ত হয়।
ফান্ডটির প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২৫ কোটি টাকা এবং ইউনিট প্রতি অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপক লংকাবাংলা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। ফান্ডের ট্রাস্টি এবং কাস্টডিয়ান হিসেবে কাজ করছে যথাক্রমে সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসি।
ঢাকা/এনটি/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কাট্টলি টেক্সটাইলের আইপিওর ২৫ কোটি টাকা তছরুপ, তদন্তের জন্য দুদকে হস্তান্তর
প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ২৫ কোটি টাকা তছরুপ করেছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কাট্টলি টেক্সটাইল। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্তে এই তছরুপের ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। এ কারণে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে আইপিওর অর্থ তছরুপের বিষয়টি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিএসইসির গতকাল বুধবারের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিএসইসি জানিয়েছে, কাট্টলি টেক্সটাইল আইপিওর ২৫ কোটি ৪ লাখ টাকা তছরুপের বিষয়টি দুদকে প্রেরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে কমিশন সভায়।
বস্ত্র খাতের কোম্পানি কাট্টলি টেক্সটাইল ২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছর আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা এই অর্থ কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংকঋণ পরিশোধ, কর্মীদের আবাসনসুবিধাসহ নানা খাতে ব্যয় করার কথা ছিল। কিন্তু আইপিওর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের কয়েক বছর পরও সেই অর্থ যথাযথ খাতে ব্যবহার করেনি বলে বিএসইসির এক তদন্তে উঠে আসে। এমনকি আইপিওর অর্থের বড় অংশই তছরুপ হয় বলে তদন্তে জানা যায়। তারই ভিত্তিতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএসইসি বিষয়টি দুদকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শুধু অর্থ তছরুপের ঘটনাই নয়, কাট্টলি টেক্সটাইল তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) তালিকাভুক্তি মাশুল বা ফিও পরিশোধ করেনি। এ কারণে এক মাসের মধ্যে এই বকেয়া মাশুল ডিএসইকে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। যদি এক মাসের মধ্যে কোম্পানিটি ডিএসইকে তালিকাভুক্তি মাশুল পরিশোধ না করে, তাহলে কোম্পানিটির প্রত্যেক পরিচালককে (স্বতন্ত্র পরিচালক বাদে) ২ লাখ টাকা করে জরিমানা গুনতে হবে।
কাট্টলি টেক্সটাইল আইপিওতে ৩ কোটি ৪০ লাখ শেয়ার বিক্রি করেছিল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে বিক্রি করা হয়। তালিকাভুক্তির পর কয়েক বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিয়েছিল। এরপর ২০২২ ও ২০২৩ সালে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এ কারণে কোম্পানিটির শ্রেণি মানেরও অবনমন ঘটে। বর্তমানে এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ‘বি’ শ্রেণির কোম্পানি।
আইপিওতে আসার আগে ভালো মুনাফা দেখানো কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর কয়েক বছর না যেতেই লোকসানি কোম্পানিতে পরিণত হয়। সর্বশেষ গত বছরের জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ৮৪ পয়সা লোকসান করেছে। ওই বছর শেষে কোম্পানিটির লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি টাকা। লোকসান সত্ত্বেও গত বছর শেষে শ্রেণিমান ধরে রাখতে গত অর্থবছরের জন্য সাধারণ শেয়ারধারীদের নামমাত্র নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
এদিকে কাট্টলি টেক্সটাইলের আইপিও তছরুপের ঘটনা দুদকে হস্তান্তরের খবরেও আজ বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টায় কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৪০ পয়সা বা সোয়া ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৭০ পয়সায়। ১১৬ কোটি টাকার মূলধনের এই কোম্পানির শেয়ারের ৭০ শতাংশই রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। ফলে তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
কাট্টলি টেক্সটাইলকে শেয়ারবাজারে আনার অনুমতি দিয়েছিল বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। খায়রুল কমিশনের বিরুদ্ধে আইপিও অনিয়মেরই সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিল। তার সময়ে শেয়ারবাজারে আসা বেশির ভাগ কোম্পানি কয়েক বছর না যেতেই দুর্বল ও বন্ধ কোম্পানিতে পরিণত হয়।