মেসি–জাদুতে ২ গোলে পিছিয়ে পড়েও সেমিফাইনালে মায়ামি
Published: 10th, April 2025 GMT
কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির (এলএএফসি) কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল ইন্টার মায়ামি। লিওনেল মেসির দল বাংলাদেশ সময় আজ সকালে দ্বিতীয় লেগের ৯ মিনিটেই খেয়ে বসে আরেকটি গোল। তবে দুই লেগ মিলিয়ে ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া এলএএফসি নয়, কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালে উঠল মায়ামিই।
কারণ, মায়ামির আছে একজন মেসি। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের জোড়া গোলে প্রত্যাবর্তনের দুর্দান্ত গল্প লিখে দ্বিতীয় লেগটা ৩-১ গোলে জিতে শেষ চারে উঠে গেছে মায়ামি। দুই লেগ মিলিয়ে মেসিরা জিতলেন ৩-২ গোলে।
২০২২ কাতার বিশ্বকাপে যে গোলরক্ষকের বিপক্ষে টাইব্রেকারসহ ২ গোল করেছিলেন, সেই উগো লরিসকে আজও দুবার পরাস্ত করলেন মেসি। ফ্রান্স গোলরক্ষক যে এখন এলএএফসির গোলবার সামলান। কিন্তু এবারও মেসিকে সামলাতে পারলেন না লরিস।
আজ ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগে মেসি প্রথম গোলটি করেন ৩৫ মিনিটে। পেনাল্টি বক্সের মাথা থেকে তাঁর বাঁ পায়ের আরেকটি ‘চিরায়ত মেসি’ গোলে ব্যবধান কমায় মায়ামি। মেসিরা সমতায় ফেরে ৬১ মিনিটে। নোয়াহ অ্যালেনের গোলটা অবশ্য তালেগোলেই পেয়ে যায় মায়ামি। অ্যালেন বক্সের ভেতরে ফেদেরিকো রেদোনদোকে লক্ষ্য করে চিপ করেছিলেন। রেদোনদো শট নেবেন মনে করে লরিস লাইন ছেড়ে সামনে এগিয়ে আসেন। কিন্তু বলটি মাটিতে পড়ে লাফিয়ে উঠে রেদোনদো ও লরিস, দুজনকেই ফাঁকি দিয়ে ঢুকে যায় জালে।
দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ সমতা থাকলেও, অ্যাওয়ে গোল নিয়মের কারণে তখনো কার্যত এগিয়ে ছিল এলএএফসি। এমন সময়ে ৬৭ মিনিটে মেসির পাস থেকে লুইস সুয়ারেজের হেডে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোল হিসেবে গণ্য হয়নি।
হতাশ না হয়ে মায়ামি এরপর আক্রমণের পর আক্রমণ শাণিয়ে গেছে। চাপে পড়ে যাওয়া এলএএফসির ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় মারলন হাতে বল লাগিয়ে সর্বনাশ ডেকে আনেন। ভিএআর পেনাল্টির রায় দেওয়ার পর মেসি যখন গোল করে দলকে এগিয়ে দিলেন, ম্যাচের তখন ৮৪ মিনিট।
এরপর মেসিদের হয়ে শেষ কাজটি করে দেন গোলরক্ষক অস্কার উস্তারি। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক শেষ দিকে দুটি দারুণ সেভ করে দলকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান।
যে সেমিফাইনালে মেসিদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ মেক্সিকান ক্লাব পুমাস অথবা এমএলএসের কানাডিয়ান ক্লাব ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস। এ মাসের ২২, ২৩ অথবা ২৪ তারিখে হতে পারে প্রথম লেগ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
১০ ছক্কায় অভিষেকের রেকর্ড গড়া ১৪১, এরপর চিঠি রহস্য
ব্যক্তিগত ২৮ রানের সময় আউট হয়েও বেঁচে গেলেন নো বলের কল্যাণে। একেই মনে হয় বলে চ্যাম্পিয়ন্স লাক! এরপর অভিষেক শর্মা আইপিএলকে উপহার দিলেন এক স্মরণীয় রাত। মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর ৫৫ বলে খেললেন অবিশ্বাস্য ১৪১ রানের এক ইনিংস। যা আইপিএলের ইতিহাসে কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানের আইপিএলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস।
অভিষেকের বিস্ফোরক ইনিংসের কল্যাণে পাঞ্জাব কিংসের ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে করা ২৪৫ রানকে মামুলি মনে হলো। প্রায় আড়াইশ ছুঁইছুঁই রান তাড়া করতে নেমে ১৫ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (২৪৭/২)। যা আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড। গত মৌসুমে (২৬ এপ্রিল, ২০২৪) ক্লকাতা নাইট রাইডার্সের দেওয়া ২৬১ রানের ইনিংস তাড়া করতে নেমে ৮ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে পাঙজাব জিতেছিল, যা আইপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।
আরো পড়ুন:
চেন্নাই প্লে’অফ খেলবে, দাবি ব্যাটিং কোচের
ধোনির অধিনায়কত্বেও ভাগ্য বদলালো না চেন্নাইর
গতরাতে রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ঝড় তোলেন পাঞ্জাবের দুই ওপেনার প্রিয়াংশ আর্য ও প্রভসিমরন সিং। দুজন মিলে করেন ৬৬ রান। ১৩ বলে ৩৬ রান করে আউট হন প্রিয়াংশ। এরপর দলীয় ৯১ রানে ফেরেন প্রভসিমরন। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ৪২। তবে পাঞ্জাবের হয়ে আসল ঝড়টা তোলেন শ্রেয়াস আইয়ার। ৩৬ বলে ৬ চার ও ৬ ছক্কায় করেন ৮২ রান। আর শেষ দিকে ১১ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করেন মার্কাস স্টয়নিস।
জবাব দিতে নেমে অভিষেকের এই মহাকাব্যিক ইনিংস যেন এক রূপকথার মত প্রত্যাবর্তন। চলমান আসরে এই ২৪ বছর বয়সী ওপেনারের ব্যাট ঠিক হাসছিল না। তবে পাঞ্জাবের সাথে ঠিকই অভিষেক জানান দিলেন, হারিয়ে যাননি তিনি। ট্র্যাভিস হেডের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন। পাওয়ারপ্লে’র পর হেড যখন ছন্দে ব্যাট করছিলেন, তখন অভিষেক গিয়ার বদলে ঝড় তোলা শুরু করেন।
হেডের সঙ্গে ১৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন অভিষেক। যা হায়দরাবাদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ। হেডের ৩৭ বলে ৬৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর অভিষেক ব্যক্তিগত প্রথম আইপিএল শতরানটি করেন মাত্র ৪০ বলে, যা আইপিএলের ইতিহাসে ষষ্ঠ দ্রুততম সেঞ্চুরি। কিন্তু তখনো চমকের বাকী ছিল। শতরান পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, অভিষেক নিজের পকেট থেকে একটি সাদা কাগজ বের করে উপরে তুলে ধরেন, যেখানে হাতে লেখা ছিল, ‘এই ইনিংসটি কমলা আর্মিদের জন্য’। পাঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়াসও সেই মুহূর্তে কাছে চলে আসেন বার্তাটি পড়তে।
অভিষেক প্রায় ২৫৭ স্ট্রাইক রেটে ১৪ চার ও ১০টি ছক্কায় তাঁর ইনিংসটি সাজান।
হায়দরাবাদের হয়ে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটিই। এর আগে ডেভিড ওয়ার্নারের ১২৬ ছিল চূড়ায়। আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। কেবল ক্রিস গেইল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের আছেন সামনে।
টানা ৪ ম্যাচ হারার পর আসরে দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল হায়দরাবাদ। ৬ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে আছে প্যাট কামিন্সের দল।
ঢাকা/নাভিদ