কামরাঙ্গীরচরে গণপিটুনিতে ২ ‘চাঁদাবাজ’ নিহত
Published: 10th, April 2025 GMT
ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে ‘চাঁদাবাজি’ করতে গিয়ে গণপিটুনিতে দুই জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো একজন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কামরাঙ্গীরচর সিলেটি বাজার এলাকায় ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের দাবি, তারা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ ছিলেন।
নিহতরা হলেন- নাদিম (৩৫) ও মাসুদ (৩০)। আহত ব্যক্তির নাম সোহাগ (২৮)। চাঁদাবাজদের ছুরিকাঘাতে আহত হন নুর মোহাম্মদ (৩০) ও মনির হোসেন (৩৫)।
ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি আহত মনির হোসেন জানান, তিনি সিলেটি বাজারের বাবুলের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার তিনটি রিকশা রয়েছে। তিনি নিজেও রিকশা চালান। গত ৮ মার্চ মাসুদের নেতৃত্বে কয়েকজন চা-দোকানদার নুর মোহাম্মদের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় সেদিন নুর মোহাম্মদকে ছুরিকাঘাতে আহত করে। এ সময় তার স্ত্রী বাধা দিলে তাকেও ছুরিকাঘাতে আহত করে সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় নুর মোহাম্মদ কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেন। এর জের ধরে রাতে তারা আবার হামলা করেন। এতে তারা দুজন আহত হন। এ ঘটনায় সিলেটি বাজার এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে ঘিরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, এরা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ ছিল। এর আগে তাদের নামে মামলা করে এক ভুক্তভোগী। ধারণা করা হচ্ছে, মামলার জেরে কয়েকজন মামলার বাদীসহ দুজনকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তিন জনকে গণপিটুনি দেন। এতে মাসুদ নামের একজন ঘটনাস্থলে মারা যান। সোহাগ ও নাদিম নামের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে নাদিম সেখানে মারা যান।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক বলেন, নিহতদের মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ম হ ম মদ গণপ ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের
সবে সন্ধ্যা নেমেছে শহরের বুকে। খুলনা নগরের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে ছোট একটা দোকানের সামনে বেশ ভিড়। অর্ডার দিয়ে কেউ টুলে বসে আছেন, কেউ আবার প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন। বিক্রেতা দুজনের চার হাত যেন চলছে সমানতালে। একজন ছোট ছোট ফুচকা বানাচ্ছেন, তো আরেকজন ভেলপুরির প্লেট সাজাচ্ছেন। আবার কখনো একজন পেঁয়াজ–শসা কুচি করে নিচ্ছেন আর আরেকজন বিল রাখা বা টিস্যু এগিয়ে দেওয়ায় ব্যস্ত।
নগরের আহসান আহমেদ রোডের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের একটি ছোট ফুচকা ও ভেলপুরির ভ্রাম্যমাণ দোকানের চিত্র এটি। দোকানের নামটাও বেশ অন্য রকম। ‘ধৈর্য-সহ্য ছোট ফুচকা ও ভেলপুরি স্টোর’। দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান। এই দোকানের ছোট ফুচকা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গোলাম রসুলের বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের পুরাতন ঘোষগাতী গ্রামে। সাত ভাই–বোনের সংসারে রসুলের বড় ভাই ভাজাপোড়া খাবারের ব্যবসা করতেন। বুঝতে শেখার পর থেকেই তাই এতেই হাতেখড়ি হয় রসুলের। তবে তাতে ঠিক পোষাচ্ছিল না। তাই বছর ৩০ আগে কিছু করার আশায় খুলনা শহরে আসেন গোলাম রসুল। তবে এই শহরে পুরোপুরি থিতু হতে পারেননি। নানা টানাপোড়েনে কখনো খুলনা, কখনো মোল্লাহাট, আবার কখনো ঢাকায় কেটেছে তাঁর সময়। ৪৮ বছরের এই জীবনে নানা রকম কাজ করেছেন। ব্যবসাও করেছেন অনেক কিছুর। তবে সেসব ব্যবসায় কেবল লোকসানই হয়েছে তাঁর। অবশেষে ‘ছোট ফুচকায়’ তাঁর কপাল খুলেছে।
কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই কথা হয় গোলাম রসুলের সঙ্গে। রসুল বলেন, ‘আগে রিকশা চালাইছি। নানা রকম ব্যবসাও করছি। গ্রাম থেকে কিনে মাওয়া ফেরিঘাট আর ঢাকায় ডাব বেচছি। ওই ব্যবসায় অনেক মার খাইছি। মানুষ টাকা দেয় নাই। এখনো ৬০-৭০ হাজার টাকা পাব। ডাব ব্যবসায় মার খেয়ে দুই বছর আগে আবারও খুলনা শহরে আসি কিছু করা যায় কী না সেই জন্যি।’ খুলনা এসে আবারও রিকশার প্যাডেল ঘোরাতে থাকেন রসুল একই সঙ্গে মাথায় ঘুরতে থাকে চিন্তা। এরপর শীতের পিঠা বিক্রি শুরু করেন। শীত শেষ হতে আবারও অনিশ্চয়তা। এখন কী হবে!
গোলাম রসুল বলেন, ‘গরম চলে আসল, কী করব বুঝে পাচ্ছিলাম না। পরে খুলনার ৭ নম্বর ঘাট থেকে কিনে ভেলপুরি বেচছি। কিন্তু এতে হচ্ছিল না। এরপর চিন্তা করলাম আনকমন কিছু করা যায় কি না। গত বছরের কোরবানির ঈদের পর থেকে শুরু করি ছোট ফুচকা বিক্রি।’
দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান