মেয়ের গায়ে হাত দিলে ভদ্র বাপও জংলি হয়া যায়...
Published: 10th, April 2025 GMT
শিশুসন্তানের সঙ্গে মা–বাবার সম্পর্ক নিয়ে ঢাকাই সিনেমায় সাম্প্রতিক সময়ে খুব একটা কাজ হয়নি। হলে মা-বাবার সঙ্গে সিনেমা দেখতে আসা সন্তানদের কথা বেশির ভাগ নির্মাতাই ভাবেননি। এ চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন এম রহিম। এবার ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে তাঁর পরিচালিত সিনেমা ‘জংলি’।
একনজরেসিনেমা: ‘জংলি’
ধরন: ড্রামা
পরিচালক: এম রাহিম
গল্প: আজাদ খান
চিত্রনাট্য: মেহেদী হাসান, সুকৃতি সাহা
অভিনয়: সিয়াম আহমেদ, নৈঋতা হাসিন রৌদ্রময়ী, শবনম বুবলী, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, রাশেদ মামুন অপু
সংগীত পরিচালনা: প্রিন্স মাহমুদ
রানটাইম: ২ ঘণ্টা ৩১ মিনিট
জনি ভার্সিটিতে পড়ে। ভার্সিটিতে মারামারি করার জন্য তার দুর্নাম আছে। বাবা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সেই বিবেচনায় তাকে ছাড় দেওয়া হয় বারবার। তবে জনির এই বেপরোয়া আচরণের পেছনে রয়েছে তার বাবার সঙ্গে দূরত্ব। দুর্ঘটনায় মায়ের মৃত্যুর জন্য তাকেই দায়ী করে বাবা। তারই ভার্সিটিতে পড়া নূপুরকে ভালোবাসে জনি। তাকে আঁকড়ে ধরে নতুন করে বাঁচতে চায়। কিন্তু বিধি বাম! অপ্রত্যাশিতভাবে একদিন অন্যদিকে মোড় নেয় সে সম্পর্ক। সবকিছু ছেড়ে তাই সে বের হয়ে যায়, হয়ে ওঠে সত্যিকার অর্থেই ‘জংলি’, কোনো কিছুই যাকে আর ছুঁতে পারে না। সেই জংলির জীবনে উড়ে এসে জুড়ে বসে এক ছোট্ট মেয়ে, পাখি। কিন্তু পাখিকে তার জীবনে চায় না জংলি। শেষ পর্যন্ত পাখি কি পারে জংলির মন বদলাতে? নাকি জংলি জংলিই থেকে যায়?
‘জংলি’ বাবা-মেয়ের গল্প। বলা ভালো, এক যুবকের বাবা হয়ে ওঠার গল্প। জনি থেকে জংলি হয়ে ওঠা চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ। সিনেমার প্রথমার্ধে সিয়ামকে সেই চিরায়ত ‘চকলেট বয়’ লুকে দেখা গেলেও পরে তাঁর লুক ও অভিনয় ছিল আগের কাজগুলোর চেয়ে একেবারেই আলাদা। পর্দায় এবার তিনি পাশের বাড়ির ছেলে নন; বরং বখে যাওয়া এক জংলি। পর্দায় তিনি সত্যিই জংলি হয়ে উঠেছিলেন। এটিকে এখন পর্যন্ত তাঁর সবচেয়ে মনে রাখার মতো কাজ বললেও ভুল হবে না।
‘জংলি’তে বুবলী। ভিডিও থেকে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজ চৈত্র সংক্রান্তি
চৈত্র সংক্রান্তি বা চৈত্র মাসের শেষদিন আজ। বাংলা মাসের সর্বশেষ দিনটিকে সংক্রান্তির দিন বলা হয়। এছাড়াও আগামীকাল সোমবার পহেলা বৈশাখ, নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩২।
আবহমান বাংলার চিরায়িত বিভিন্ন ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে এই চৈত্র সংক্রান্তি। বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন। মনে করা হয়, চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই চৈত্র সংক্রান্তি হচ্ছে বাঙালির আরেক বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব।
চৈত্র সংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে থাকেন। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।
এছাড়াও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়। হালখাতার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি।
চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। চড়ক গাজন উৎসবের একটি প্রধান অঙ্গ। এ উপলক্ষে গ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য গ্রামের শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে।
চৈত্র সংক্রান্তির মাধ্যমে পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে সোমবার সফলতা ও সমৃদ্ধির প্রত্যাশায় দেখা দেবে নতুন ভোর। পুরনো বছরের সব জরাজীর্ণতা মুছে ফেলে বাঙালি মিলিত হবে পহেলা বৈশাখের সর্বজনীন উৎসবে। জরাজীর্ণতা, ক্লেশ ও বেদনার সব কিছুকে বিদায় জানানোর পাশাপাশি সব অন্ধকারকে বিদায় জানিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার থাকবে গোটা জাতির।