শিক্ষা সংস্কার কমিশন চায় অভিভাবক ফোরাম
Published: 10th, April 2025 GMT
শিক্ষা খাতে সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। সারাদেশে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য মহামারি আকার ধারণ করেছে জানিয়ে কোচিং বাণিজ্য নিষিদ্ধের দাবি ও একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতিমুক্ত পরিচালনা পর্ষদ চান তারা। গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু।
সংগঠন সভাপতি শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও অনিয়ম, দুর্নীতি রোধকল্পে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ– এই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের প্রেষণে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের দাবি জানান। সিভিল প্রশাসকের চেয়ে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করলে দুর্নীতি, ভর্তি বাণিজ্য কমবে বলে মনে করেন তিনি।
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি স্থগিত করে অ্যাডহক কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটিতে আগের মতোই রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রভাব বিস্তার করছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে পরিচালনা পর্ষদ থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।
জিয়াউল কবির দুলু বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কমিশন গঠন করছে। কিন্তু শিক্ষার ভয়াবহ অবনতি হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠিত হয়নি। দেশের জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তি, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকের সমন্বয়ে পরামর্শক কমিটি গঠন করে কিছু সুপারিশ নিয়ে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করার দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে শিক্ষার বিভিন্ন অধিদপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে তাদের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শক্তিশালী জবাবদিহিমূলক মনিটরিং সেল গঠন করে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক কর্মকাণ্ড ও অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান তিনি। শিক্ষাকে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা জাতীয়করণ হলে শিক্ষকদের বিদ্যমান সমস্যা ৯৫ শতাংশ থাকবে না। ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিতে গ্র্যাজুয়েটের নিচে কোনো সদস্য থাকতে পারবেন না– এমন প্রজ্ঞাপন জারি এবং কমিটির নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো প্রচার করতে না পারার বিধান করারও দাবি জানান অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি।
এসব দাবি আদায়ে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে– শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান, জনমত গঠনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাবি-দাওয়া সংবলিত লিফলেট বিতরণ ও আগামী ৩ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম উদ্দিন আহমেদ, আহছান উল্লাহ মানিক, দিলারা আক্তার প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
সাত বছর ধরে হেলিকপ্টার বানাচ্ছেন রাজমিস্ত্রী আরিফুল, তিন সপ্তাহের মধ্যে আকাশে ওড়ানোর স্বপ্ন
শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামের রাজমিস্ত্রী আরিফুল ইসলাম হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। সাত বছর ধরে একটি হেলিকপ্টার তৈরি করায় এ নিয়ে এলাকায় তাঁকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে হেলিকপ্টার তৈরির কাজ শেষ করে তা আকাশে ওড়াতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।
আরিফুল মাটিয়ান গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ছেলে। বাড়িতে ছোট্ট একটি ঘরের মধ্যে তৈরি হচ্ছে হেলিকপ্টার। আশেপাশে পড়ে রয়েছে নানা সরঞ্জাম। হেলিকপ্টার তৈরির স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ২০১৮ সাল থেকে সাত বছর ধরে দৈনিক আয়ের কিছু অংশ থেকে সরঞ্জাম কিনে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন তিনি। এ পর্যন্ত তাঁর প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বাঁকি কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও ৫০ হাজার টাকার দরকার বলে জানান তিনি। টাকার ব্যবস্থা হলে আগামী ২০ দিনের মধ্যে অবশিষ্ট কাজ শেষ করে হেলিকপ্টারটি আকাশে উড়াতে সক্ষম হবেন বলে জানান তিনি।
মাটিয়ান গ্রামের জাকারিয়া জুয়েল বলেন, ছোটবেলা থেকে আরিফুল অনেক কিছু তৈরি করতেন। দরিদ্র আরিফুল তাঁর উপার্জনের টাকা দিয়ে সরঞ্জাম কিনে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু তৈরি করতে পারবেন।
আরিফুলের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, এক মেয়েকে নিয়ে অতি কষ্টে আমরা জীবনযাপন করি। আমার স্বামী তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে উপার্জনের টাকা ব্যয় করে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। এতে আমাদের কষ্ট হলেও আমরা খুশি।
কিচক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বলেন, হেলিকপ্টার তৈরির বিষয়টি আমি জেনেছি। আমরা তাঁর উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, হেলিকপ্টার তৈরি করায় আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই। এ কাজে উৎসাহ যোগাতে প্রয়োজনে তাঁকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে। হেলিকপ্টার দেখার জন্য প্রতিদিন তাঁর বাড়িতে শতশত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে।