বিয়ের সাত মাসের মাথায় গাছের ডালে দম্পতির ঝুলন্ত লাশ
Published: 10th, April 2025 GMT
নেত্রকোনার মদনে নিজ বসতবাড়ির সামনে গাছের ডালের সঙ্গে ঝুলন্ত দম্পতির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে নায়েকপুর ইউনিয়নের বাঁশরী কান্দাপাড়া গ্রাম থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন– নায়েকপুর ইউনিয়নের বাঁশরী কান্দাপাড়া গ্রামের মাজু মিয়ার ছেলে আজিজুল ইসলাম (২২) ও তাঁর স্ত্রী মদন পৌরসভার এমদাদপুর গ্রামের চাঁন মিয়ার মেয়ে লিমা আক্তার (১৮)।
জানা গেছে, প্রায় ৭ মাস আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন আজিজুল ইসলাম ও লিমা আক্তার। পরে দু’জনেই চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিকের কাজ নেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে এসেছিলেন তারা। বুধবার চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য বাসের টিকিটও সংগ্রহ করেন। রাতে চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিকেলে বাড়ির পেছনে রেইনট্রি গাছে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান প্রতিবেশী লোকজন। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে।
আজিজুলের মা আদিনা আক্তার বলেন, ‘ঘরে এসে বৌমাকে না পেয়ে বাড়িতে খোঁজাখুঁজির পরে বাড়ির সামনে পুকুর পাড়ে গিয়ে দেখি গাছের ডালের সঙ্গে আমার ছেলে-ছেলের বউ ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে। আমার ডাক-চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এসে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।’
মদন থানার ওসি নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসানের ভাষ্য, আত্মহত্যা বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।