সারাদেশে হামলা-লুটে জড়িত ৭২ জন গ্রেপ্তার, মামলা ১০
Published: 10th, April 2025 GMT
ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গতকাল বুধবার পর্যন্ত ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাদের আইনের আওতায় আনা হয়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০টি মামলা হয়েছে। পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
এদিকে সোমবারের হামলা-ভাঙচুরের পর খুলনা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ। তবে বেশির ভাগ স্থানে হামলার শিকার প্রতিষ্ঠানগুলোর শোরুম এখনও চালু হয়নি। সিলেটে বিএনপি নেতাদের মালিকানাধীন হোটেলে হামলা-ভাঙচুর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ সদরদপ্তর জানায়, হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় এ পর্যন্ত খুলনায় ৩৩, সিলেটে ১৯, চট্টগ্রামে ৫, গাজীপুরে ৪, নারায়ণগঞ্জে ৪, কুমিল্লায় ৩ ও কক্সবাজারে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনায় লুণ্ঠিত জুতা উদ্ধার
খুলনায় বাটার শোরুম থেকে লুণ্ঠিত পাঁচ জোড়া জুতা, নারীদের ব্যবহৃত হাতব্যাগসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে বাটা, কেএফসি ও ডোমিনোস পিৎজায় ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। ভাঙচুরের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনও চালু হয়নি ওই প্রতিষ্ঠানগুলো।
মঙ্গলবার রাতে বাটার ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ জনকে আসামি করে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। অজ্ঞাতপরিচয় সাত-আটশ ব্যক্তিকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন কেএফসির ব্যবস্থাপক সুজন মণ্ডল। এ ছাড়া ডোমিনোস পিৎজার ব্যবস্থাপক শামসুল আলম একই সংখ্যক অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো.
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সম্পৃক্ততা
চট্টগ্রাম নগরে প্রতিবাদ মিছিল থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আটজনের মধ্যে পাঁচজনই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কর্মী বলে দাবি তাদের। ভাঙচুরের ঘটনায় আরও তিনটি মামলায় হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে নগরের খুলশী থানায় একটি মামলা করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে খাইরুল, তামজিদ ও ইব্রাহিম ছাত্রলীগ এবং ইলিয়াস যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মঙ্গলবার নগরের চকবাজার থানায় এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার মা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী রয়ন জান্নাত।
সিলেটে বিএনপি নেতাদের হোটেল ভাঙচুর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত?
সিলেট নগরীর মীরবক্সটুলা এলাকায় সম্প্রতি চালু করা বহুতল হোটেল রয়েল মার্টের মালিক দুই বিএনপি নেতাসহ পাঁচ ব্যবসায়ী। হোটেল ভবনের দোতলায় ভাড়া নিয়ে রেস্টেুরেন্ট চালু করে কেএফসি। সোমবার বিকেলে নগরীতে কেএফসিতে প্রথমে হামলা হয়। ভাঙচুর করে চলে যায় মিছিলকারীরা। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে অভ্যর্থনা কক্ষসহ বিভিন্ন স্থানে আবারও ভাঙচুর করে।
হোটেল মার্টের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, কেএফসির প্রতি আক্রোশ থাকলে আমাদের হোটেলে হামলা করবে কেন?
সাবেক সিটি মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ভাঙচুর ও লুটপাটে জড়িতদের খুঁজে বের করতে হবে। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে মিছিল থেকে হোটেল ভাঙবে কেন? নিশ্চয় তদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল।
ভাঙচুর ও লুটপাটের পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই দাবি করে এসএমপির পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, ঘটনার পর থেকে ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়েছে।
এদিকে গতকাল বুধবার আরও তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এ নিয়ে দুই দিনে ২১ জনকে আটক করা হয়। তাদের অধিকাংশ বহিরাগত।
কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, দুটি মামলা হয়েছে। প্রতিটিতে ছয়-সাতশ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
ব্যবসায়ী অনন্ত মোহন পাল জানান, অর্ধশতাধিক দোকানে হানা দেওয়া হয়েছে। এটা লুটেরা শ্রেণির কাজ।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছে চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা ব্যুরো)
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ল টপ ট ব যবস ক এফস ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ষবরণ ও চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজন রবীন্দ্রসরোবরে
সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারা’র চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণের দুটি অনুষ্ঠানই হবে এবার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে। গতকাল শনিবার বিকেলে রবীন্দ্রসরোবরে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পীদের জন্য কয়েক ধাপে মঞ্চ তৈরি করছেন শ্রমিকেরা। বাঁশ, কাঠ, কাপড়ে তৈরি হচ্ছে চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণের মঞ্চ। গত বছর এই আয়োজন হয়েছিল চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে।
এবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘ইস্পাহানি চ্যানেল আই-সুরের ধারার বর্ষবরণ ১৪৩২’ শিরোনামে। ২০১২ সাল থেকে এ আয়োজন ‘সুরের ধারা চ্যানেল আই হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ’ শিরোনামে আয়োজিত হয়ে আসছিল।
সুরের ধারার ভাইস চেয়ারম্যান ও শিক্ষক স্বাতী সরকার প্রথম আলোকে গতকাল জানিয়েছেন, এবারের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে সুরের ধারার শিল্পীসহ সারা দেশের প্রায় সাড়ে তিন শ শিল্পী অংশ নেবেন। তিনি বলেন, ভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর শিল্পীরাও সংগীত পরিবেশন করবেন এবারের আয়োজনে। রাঙামাটির ১২ জন শিল্পী অংশ নেবেন পরিবেশনায়।
বর্ষবিদায় বা চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজনে অংশগ্রহণ করবেন আড়াই শ শিল্পী। আয়োজনটি সার্বিকভাবে সুরের ধারার। সুরের ধারার এবারের বর্ষবিদায়ের প্রতিপাদ্য ‘স্বদেশ’।
সুরের ধারার শিক্ষক ও আয়োজনের সহকারী কেশব সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এবারের আয়োজনে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণ দুটো অনুষ্ঠানই আগের মতো সরাসরি সম্প্রচারের কথা রয়েছে চ্যানেল আইয়ের। বর্ষবরণের আয়োজনে থাকছে পঞ্চকবির গান।
বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায়ের আয়োজনের মহড়া ঈদের আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানালেন সুরের ধারার শিক্ষকেরা। বাংলা নতুন বছর ১৪৩২-এর প্রথম দিন সকাল ছয়টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলবে। এর আগের দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে চৈত্রসংক্রান্তি বা বাংলা বছরকে বিদায়ের অনুষ্ঠান। বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার উদ্যোগে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সংগীতচর্চা প্রতিষ্ঠান সুরের ধারা।