কক্সবাজার মহেশখালীর মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্ট থেকে চুরি হওয়া প্রায় এক কোটি টাকার মালামাল উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাদক, সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে নৌবাহিনী দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাতারবাড়ী রাজঘাট দক্ষিণ পাড়ায় নৌকন্টিনজেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে চুরি হওয়া প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের মালামাল উদ্ধার করা হয়।

এতে বলা হয়, মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্ট মহেশখালী এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা। বিভিন্ন সময় পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্টের মালামাল চুরি হওয়ার অভিযোগে নৌবাহিনী বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় চুরি হওয়া নির্মাণসামগ্রী, অ্যাঙ্গেল বার, বিমবার ও স্ক্র্যাপসহ মালামাল উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা মালামাল পুলিশের উপস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের করা হয়েছে।

মাতারবাড়ীসহ দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে নৌবাহিনীর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ত রব ড় ম ত রব ড়

এছাড়াও পড়ুন:

গুলেন ব্যারি সিনড্রোম কেন হয়, চিকিৎসা কী

গুলেন ব্যারি সিনড্রোম বা সংক্ষেপে জিবিএস নামটি একটু অপরিচিত হলেও রোগটির প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে নেহাত কম নয়। যেকোনো বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে জীবাণু–প্রতিরোধী ইমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক আচরণের ফলে এ রোগের উৎপত্তি হয়।

‘ক্যাম্পাইলো ব্যাকটর জেজুনি’ নামের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত ডায়রিয়ার রোগী বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত সর্দি-জ্বরের রোগীরা ইমিউন সিস্টেমের জটিলতার কারণে পরবর্তী সময়ে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

কীভাবে বুঝবেন

ডায়রিয়া বা ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের প্রায় দুই সপ্তাহ পর রোগী হঠাৎ দুই পায়ে দুর্বলতা বোধ করেন। এ দুর্বলতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং একপর্যায়ে ওপরের দিকে বিস্তার লাভ করে মেরুদণ্ড, দুই হাত, বুকের মাংসপেশি, এমনকি মুখের মাংসপেশিতে ছড়িয়ে পড়ে। কখনো কখনো দুবলর্তা এত বেশি হয় যে রোগী হাত–পায়ের আঙুলও সামান্য পরিমাণ নাড়াতে পারেন না।

বুকের মাংসপেশির দুবর্লতার কারণে শ্বাসকষ্ট হলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালের আইসিইউ, অর্থাৎ নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে স্থানান্তর করতে হয়। না হলে রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে। জিবিএস রোগীর এত দুর্বলতা সত্ত্বেও সাধারণ অনুভূতি, স্মৃতিশক্তি, পায়খানা-প্রস্রাবের অবশ্য কোনো সমস্যা হয় না এবং রোগী কখনোই চেতনা হারান না।

চিকিৎসা কী

এ ধরনের রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হবে। নিউরোলজিস্ট বা স্নায়রোগবিশেষজ্ঞ রোগের উপসর্গ, শারীরিক পরীক্ষা, এনসিএস নামের স্নায়ুর পরীক্ষা ও মস্তিষ্কের রস বিশ্লেষণ করে রোগটি নির্ণয় করেন।

রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস, নাড়ির গতি, রক্তচাপ ইত্যাদি সব সময় লক্ষ্য রাখতে হয়। যদি শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, তবে তাৎক্ষণিক রোগীকে আইসিইউতে স্থানান্তর করতে হয়। নিয়মিত হাত-পায়ের ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা, রোগীকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে।

এ রোগের নির্দিষ্ট চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। প্লাজমাফেরোসিস বা আইভি ইমিউনো গ্লোবিন দিয়ে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়। কোনো কোনো রোগীর পুরোপুরি আরোগ্য পেতে প্রায় এক বছর লেগে যায়। উপসর্গ শুরুর দুই সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এরপর ইমিউনোগ্লোবিনের কর্যকারিতা থাকে না।

জিবিএসের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রায় ৮০ শতাংশ রোগী সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করেন। আর ৫-১০ শতাংশ রোগীর মধ্যে কিছু না কিছু শারীরিক দুর্বলতা স্থায়ীভাবে থেকে যায়। মৃত্যুর হার ৫-৬ শতাংশ। মনে রাখবেন, সাধারণত কোনো সংক্রমণ যেমন ডায়রিয়া বা শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের দু–তিন সপ্তাহ পর জিবিএসএর লক্ষণগুলো দেখা দেয়। কখনো কখনো টিকা দেওয়ার পরও এ রোগ হতে পারে।

আরও পড়ুনমস্তিষ্কের জটিল রোগ মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস কেন হয়, উপসর্গ ও চিকিৎসা কী২৭ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ