বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংসতা ও সহিংসতার ঘটনা রাজনৈতিক কারণে বা সংবাদমাধ্যমের অতিরঞ্জন বলে নাকচ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল। বুধবার নয়াদিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘ব্যাংককে বৈঠকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ইস্যু উত্থাপন করা হয়েছিল। তাদের ওপর নৃশংসতা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে এবং সেগুলো উড়িয়ে দেওয়া যায় না অথবা রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে বা সংবাদমাধ্যমের অতিরঞ্জন বলে নাকচ করা যাবে না।’

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ৪ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হয়। অধ্যাপক ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের এটাই ছিল প্রথম বৈঠক।

রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ওই বৈঠকে বাংলাদেশের কাছে এই বার্তা দেওয়া হয় যে ঢাকার সঙ্গে একটি ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক চায় নয়াদিল্লি।

ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে, বাংলাদেশ উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে ভারতের ‘চিকেন নেক’ (শিলিগুড়ি করিডর)–এর কাছে একটি চীনা বিমানঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। জবাবে জয়সোয়াল বলেন, ‘আমাদের সীমান্তের কাছে যা কিছু ঘটছে, যেগুলো আমাদের নিরাপত্তার ওপর আঘাত হানতে পারে, সেগুলোর সবকিছুর ওপর আমরা নিবিড়ভাবে নজর রাখছি এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

ব্যাংককে বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তিস্তা ইস্যু উত্থাপন করেছিলেন। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে জয়সোয়াল বলেন, তিস্তার পানিবণ্টনের ইস্যুটি একটি দ্বিপক্ষীয় বিষয়। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে এবং এসব বিষয় দেখার জন্য যৌথ নদী কমিশন ও টেকনিক্যাল কমিটির মতো দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থা রয়েছে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পরদিন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক ছিল না। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান আমরা আগেই জানিয়েছি। নতুন করে বলার মতো কিছু আমার কাছে নেই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জয়স য় ল ব র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন

এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।

আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ