মার্কিন ও সৌদি দূতাবাস অভিমুখে কাল লংমার্চ করবেন জগন্নাথের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা
Published: 9th, April 2025 GMT
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পালন করবেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দূতাবাসের উদ্দেশে এ পদযাত্রা করবেন তাঁরা।
আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, ‘ইসরায়েলের নৃশংস হামলা ও বিশ্ব মানবতাকে জাগ্রত করতে আমাদের এই উদ্যোগ। ফিলিস্তিনের প্রতি ন্যায়বিচার ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে আমাদের এ আয়োজন। বিশ্ববাসীকে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে বার্তা দেব এবং শান্তিপূর্ণভাবে দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান করব।’
শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেহেতু অনেক শিক্ষার্থী দীর্ঘ পথ হেঁটে অংশগ্রহণ করবে, তাই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছি। তিন স্তরের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। পুলিশ বাহিনী, ছাত্রসংগঠন, স্বেচ্ছাসেবক (বিএনসিসি, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার ইউনিট) আমাদের সঙ্গে থাকবে।’
স্মারকলিপিগুলো বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় লেখা হয়েছে জানিয়ে এই শিক্ষক বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মার্কিন দূতাবাস ও সৌদি আরবের দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
গত সোমবার দুপুর ১২টায় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’র প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংহতি সমাবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাইব্যুনালে ৩৩৯ অভিযোগ, ২২ মামলায় গ্রেপ্তার ৫৪
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ৩৩৯টি অভিযোগ জমা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৪১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭০ বেসামরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৬২ ও ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন। ইতোমধ্যে ৫৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা, আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো, চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ড ও রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা ব্যক্তিকে গুলি করা মামলায় তদন্ত শেষ পর্যায়ে। শিগগির এগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এক হাজারের বেশি মানুষের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। পরোয়ানা জারির পরও ৮৭ আসামি পলাতক।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড, সুপিরিয়র কমান্ড, সরাসরি সম্পৃক্ত এবং যাদের কারণে রাষ্ট্র এমন হয়েছে, তাদের আগে বিচার করতে চাই। আমরা ভুক্তভোগীদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিচার কার্যক্রমে গতি আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বেশ কিছু ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটি হতে পারে। যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। কবে নাগাদ বিচার শুরু করা যাবে– প্রশ্নে তিনি বলেন, সময় বেঁধে দিয়ে বিচার করা যাবে না। সেটি যুক্তিযুক্তও নয়।
মতবিনিময়ের শুরুতে তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেড়-দুই হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। ২৫ হাজারের মতো ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। সব ঘটনার জলজ্যান্ত প্রমাণ রয়েছে। ট্রাইব্যুনালে আমরা সেটি প্রমাণ করতে সক্ষম হবো এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোপন বন্দিশালা থেকে টাইম বোমা উদ্ধার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমিসহ গুমের মামলার তদন্তে যাওয়া দলের সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে টাইমার বোমা রাখা হয়েছিল। তবে ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত যেন ফাঁস না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, গুমের বিষয়ে আমরা উত্তরায় একটা বড় বন্দিশালায় তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক কিছু আমরা আবিষ্কার করেছি। টাইমার বোমা দেখেছি। হয়তো এ বোমা রাখা হয়েছিল তদন্তকারী দলকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে। আমাদের পরিদর্শনের ঠিক দু’দিন পর সেখানে প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শন করার কথা ছিল। তিনি অন্য জায়গায় গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন।
মতবিনিময় সভায় প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।