ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্টের জেরে ছয় মাস আগে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল থানায় জমা দিয়েছেন মিঠুন বিশ্বাস (৪০) নামের এক হিন্দু কাঠমিস্ত্রি। তারপর থেকে সাধারণ ফোন ব্যবহার করছেন তিনি। তবুও বর্তমানে তার ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া হচ্ছে ইসলামবিরোধী নানা উস্কানিমূলক পোস্ট। যা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঐ কাঠমিস্ত্রি।

এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের তারাইল এলাকায়। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে গণঅধিকার পরিষদ টুঙ্গিপাড়া উপজেলা শাখা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে একথা জানান ঐ ব্যক্তি।

ভুক্তভোগী মিঠুন বিশ্বাস বলেন, “আমি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। শখের বশে প্রায় এক বছর আগে একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল কিনে একজনকে দিয়ে একটি ফেসবুক একাউন্ট খুলি। কিছুদিন পর আইডিটা হ্যাক করে কে বা কারা আমার আইডি থেকে ইসলামবিরোধী উস্কানিমূলক পোস্ট করতে থাকে। তখন ইউএনও, ওসি সাহেব এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জানালে তারা থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বলে। পরে গত ২০২৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর টুঙ্গিপাড়া থানায় জিডি করি। এছাড়া ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বারের কথায় মোবাইলটি থানায় জমা দিয়ে আসি। এরপর থেকে সাধারণ মোবাইল ব্যবহার করে আসছি।”

তিনি আরও বলেন, “তারপর থেকে কয়েকমাস বিরত থাকার পর হটাৎ ঈদের তিন দিন পর থেকে আমার নামের সেই ফেসবুক একাউন্ট থেকে ইসলামধর্ম নিয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট করতে থাকে। যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। পরে আবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ কিন্তু আমাকে ফাঁসাতে যারা এই কাজ করছে আমি তাদের বিচার চাই। এছাড়া এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”

এ বিষয়ে তারাইল এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মিজান শিকদার বলেন, “হিন্দু ছেলেটি সামান্য পড়াশোনা জানে, আর কাঠমিস্ত্রির কাজ করে। আগের ঝামেলার পর আমার পরামর্শে তার এন্ড্রয়েড ফোনটি থানায় জমা দেয়। কিন্তু তারপরেও নিরীহ ছেলেটিকে ফাঁসাতে কে বা কারা যেন ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট করে যাচ্ছে। এর আগেও ইউএনও, ওসি সহ এলাকার ইসলামধর্মের মুরব্বিদের নিয়ে বসার পর সে নির্দোষ প্রমাণিত হয়। ধর্ম নিয়ে উস্কানিমূলক
পোস্ট যে দিচ্ছে আইনের মাধ্যমে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন বলেন, “মিঠুন বিশ্বাস নামের কাঠমিস্ত্রির অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলটি কয়েকমাস ধরে থানায় জব্দ রয়েছে। কিন্তু তারপরও তার নামের আইডি থেকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট করছে কেউ। এ ঘটনায় তিনি দুইবার সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টির তদন্ত চলমান রয়েছে।”

ঢাকা/বাদল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর থ ক ফ সব ক র আইড

এছাড়াও পড়ুন:

জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের

সবে সন্ধ্যা নেমেছে শহরের বুকে। খুলনা নগরের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে ছোট একটা দোকানের সামনে বেশ ভিড়। অর্ডার দিয়ে কেউ টুলে বসে আছেন, কেউ আবার প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন। বিক্রেতা দুজনের চার হাত যেন চলছে সমানতালে। একজন ছোট ছোট ফুচকা বানাচ্ছেন, তো আরেকজন ভেলপুরির প্লেট সাজাচ্ছেন। আবার কখনো একজন পেঁয়াজ–শসা কুচি করে নিচ্ছেন আর আরেকজন বিল রাখা বা টিস্যু এগিয়ে দেওয়ায় ব্যস্ত।

নগরের আহসান আহমেদ রোডের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের একটি ছোট ফুচকা ও ভেলপুরির ভ্রাম্যমাণ দোকানের চিত্র এটি। দোকানের নামটাও বেশ অন্য রকম। ‘ধৈর্য-সহ্য ছোট ফুচকা ও ভেলপুরি স্টোর’। দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান। এই দোকানের ছোট ফুচকা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

গোলাম রসুলের বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের পুরাতন ঘোষগাতী গ্রামে। সাত ভাই–বোনের সংসারে রসুলের বড় ভাই ভাজাপোড়া খাবারের ব্যবসা করতেন। বুঝতে শেখার পর থেকেই তাই এতেই হাতেখড়ি হয় রসুলের। তবে তাতে ঠিক পোষাচ্ছিল না। তাই বছর ৩০ আগে কিছু করার আশায় খুলনা শহরে আসেন গোলাম রসুল। তবে এই শহরে পুরোপুরি থিতু হতে পারেননি। নানা টানাপোড়েনে কখনো খুলনা, কখনো মোল্লাহাট, আবার কখনো ঢাকায় কেটেছে তাঁর সময়। ৪৮ বছরের এই জীবনে নানা রকম কাজ করেছেন। ব্যবসাও করেছেন অনেক কিছুর। তবে সেসব ব্যবসায় কেবল লোকসানই হয়েছে তাঁর। অবশেষে ‘ছোট ফুচকায়’ তাঁর কপাল খুলেছে।

কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই কথা হয় গোলাম রসুলের সঙ্গে। রসুল বলেন, ‘আগে রিকশা চালাইছি। নানা রকম ব্যবসাও করছি। গ্রাম থেকে কিনে মাওয়া ফেরিঘাট আর ঢাকায় ডাব বেচছি। ওই ব্যবসায় অনেক মার খাইছি। মানুষ টাকা দেয় নাই। এখনো ৬০-৭০ হাজার টাকা পাব। ডাব ব্যবসায় মার খেয়ে দুই বছর আগে আবারও খুলনা শহরে আসি কিছু করা যায় কী না সেই জন্যি।’ খুলনা এসে আবারও রিকশার প্যাডেল ঘোরাতে থাকেন রসুল একই সঙ্গে মাথায় ঘুরতে থাকে চিন্তা। এরপর শীতের পিঠা বিক্রি শুরু করেন। শীত শেষ হতে আবারও অনিশ্চয়তা। এখন কী হবে!

গোলাম রসুল বলেন, ‘গরম চলে আসল, কী করব বুঝে পাচ্ছিলাম না। পরে খুলনার ৭ নম্বর ঘাট থেকে কিনে ভেলপুরি বেচছি। কিন্তু এতে হচ্ছিল না। এরপর চিন্তা করলাম আনকমন কিছু করা যায় কি না। গত বছরের কোরবানির ঈদের পর থেকে শুরু করি ছোট ফুচকা বিক্রি।’

দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজার জন্য সমব্যথী নারী
  • তৃণমূলের একজন কর্মীকেও হারাতে দেয়া যাবে না : রিয়াদ চৌধুরী
  • শেখ হাসিনার সন্ধান চেয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
  • কক্সবাজারের মেয়েটি
  • নড়াইলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত
  • আত্মপ্রকাশ করল নতুন দল গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি
  • ওল্ড ইজ গোল্ড, আবেগতাড়িত ভক্ত-অনুরাগীরা
  • আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের পর মা-বাবা জানলেন ভ্রূণটি অন্যের ছিল
  • বিলাসপুরে কারা–কীভাবে–কোথায় ককটেল বানান, কত টাকা পান
  • জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের