মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধরের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত সোমবার দৈনিক ইত্তেফাকে একটি সংবাদ প্রকাশের জেরে ওই দিন দুপুরে সিঙ্গাইর পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক নূরে আলম বাবুল তাঁর মোবাইল ফোন থেকে পত্রিকাটির সিঙ্গাইর উপজেলা প্রতিনিধি মানবেন্দ্র চক্রবর্তীকে ফোন করে সংবাদ প্রকাশের কারণ জানতে চান। এ সময় নূরে আলম বলেন, ‘যুবদলের মদ খাওয়ার কথা লেখছেন? তোর হাড্ডি ভেঙে দেব। ২০১৩ সালের কথা মনে নাই? তোর কোন বাপ আছে দেখিয়ে দেব। আওয়ামী লীগের আমলে পার পেয়ে গেছস। তোর কিছুই হয় নাই। এখন কথা কম। কুত্তার বাচ্চা। তুই গোবিন্দল গ্রাম সম্বন্ধে কিছুই জানস না। তোর কী অবস্থা করি দেখবি।’
 
সাংবাদিক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, থানায় মাতাল অবস্থায় গ্রেপ্তার দুই যুবদল নেতার সংবাদ ইত্তেফাকসহ অন্য সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। ইত্তেফাকে সংবাদ প্রকাশের কারণে নূরে আলম তাঁকে হুমকি দেন। ভবিষ্যতে নূরে আলম তাঁর বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারেন। এ নিয়ে তিনি আতঙ্কে রয়েছেন। তাই জিডি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে সিঙ্গাইর পৌর বিএনপি নেতা নূরে আলম বাবুল বলেন, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রভাব খাটিয়ে সাংবাদিক মানবেন্দ্র তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক মানবেন্দ্রকে কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা জিডি করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সাংবাদিককে হুমকির নিন্দা জানিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতা বলেন, থানায় মাতলামি করার কারণে যুবদলের দু’জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নূরে আলম বাবুল কেন সাংবাদিককে হুমকি দেবেন? অভিযোগের সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, নূরে আলমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানার ওসিকে বলা হয়েছে।
 
ওসি তৌফিক আজম বলেন, নূরে আলমের লোককে গ্রেপ্তার করায় থানার এক এসআইকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। গত ৫ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে স্টাফদের বলে দিয়েছেন নূরে আলম যেন থানায় ঢুকতে না পারেন।  সাংবাদিকের জিডির বিষয়টি তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ ব এনপ ব এনপ আলম ব

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের জন্য লজ্জায় পড়েছেন ফ্রান্স সফররত মার্কিন পর্যটকেরা

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের তুইলেরিস উদ্যানের পরিচ্ছন্ন নুড়িপাথরের ওপর দিয়ে ঝলমলে রোদে হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন বারবারা ও রিক উইলসন দম্পতি। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহর থেকে প্রথমবারের মতো ফ্রান্স ভ্রমণে এসেছেন। মার্কিন পর্যটক হিসেবে ভ্রমণে এলেও তাঁরা ঠিক ছদ্মবেশ ধারণ করেননি। তবে ৭৪ বছর বয়সী রিক সাতসকালেই বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করেছিলেন।

বারবারা ও রিক উইলসন প্যারিসের একটি হোটেলে উঠেছেন। হোটেল থেকে বের হওয়ার আগে ছোট্ট একটি কালো টেপ দিয়ে মাথার সাদা–কালো বেসবল ক্যাপে থাকা তারকাখচিত ও ডোরাকাটা মার্কিন পতাকা ঢেকে দিয়েছেন।

বারবারা ও রিক উইলসন প্যারিসের একটি হোটেলে উঠেছেন। হোটেল থেকে বের হওয়ার আগে ছোট্ট একটি কালো টেপ দিয়ে মাথার সাদা-কালো বেসবল ক্যাপে থাকা তারকাখচিত ও ডোরাকাটা মার্কিন পতাকা ঢেকে দিয়েছেন।

বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আকস্মিক পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণায় মার্কিন নাগরিক হিসেবে যে লজ্জা ও বিব্রতকর অনুভূতি অনুভব করছেন, তা নিয়ে ভাবছিলেন এই দম্পতি। রিক বলেন, ‘বিষয়টি (শুল্ক) নিয়ে আমাদের খারাপ লাগছে। এটা ভয়ানক। শুধুই আতঙ্কের।’

শুধু রিক নন, ৭০ বছর বয়সী বারবারাও তাঁর পকেটে একটি কানাডীয় ল্যাপেল পিন রেখে দিয়েছেন। আরেকজন পর্যটক তাঁকে এটি উপহার দিয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, ফ্রান্স ভ্রমণে কিছু আড়াল করার দরকার হলে এটি কাজে লাগাতে পারবেন।

বিষয়টি (ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপ) নিয়ে আমাদের খারাপ লাগছে। এটা ভয়ানক। শুধুই আতঙ্কের।রিক উইলসন, ফ্রান্স ভ্রমণে যাওয়া মার্কিন পর্যটক

বারবারা বলেন, ‘আমাদের দেশ নিয়ে আমি হতাশ। শুল্ক নিয়ে আমরা বিরক্ত।’
কয়েক গজ দূরে বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘরের সামনে মানুষের জটলা দেখা গেল। সেখানে আরেক মার্কিন দম্পতি নিজেদের পরিচয় কিছুটা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলেন; যেমনটা সাধারণত দেখা যায় না। কথা হয় ক্রিস এপসের (৫৬) সঙ্গে। তিনি নিউইয়র্কে অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করেন। এবারের ফ্রান্স সফরে তিনি একটু ভিন্ন পোশাক পরবেন বলে ঠিক করেছিলেন।

ক্রিস এপস বলেন, ‘(আমার সঙ্গে) নিউইয়র্কের কোনো ইয়াঙ্কি হ্যাট নেই। সেটি হোটেলে রেখে এসেছি। (হ্যাট দেখে) মানুষ আমাদের আলাদা মনে করতে পারে।’

খোলাখুলি বলে রাখা ভালো, ফ্রান্সে মার্কিনদের আগের চেয়ে কম অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে, এমন কোনো লক্ষণ নেই। ট্রাম্প তাঁর নতুন শুল্ক ঘোষণা স্থগিত করার আগে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে কিছু পর্যটকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল।

কথা হয় ফিলিপ গ্লোয়াগুয়েন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। ফ্রান্সের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রাভেল গাইড লে গাইড দু রুতার্দের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। গ্লোয়াগুয়েন প্যারিসে একটি ডেস্কে বসে ছিলেন। তিনি জানান, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তাঁর লেখা বইয়ের ফরমাশ ২৫ শতাংশ কমে গেছে। ‘এটা একটা বড় পতন,’ বলেন তিনি।

মার্কিনরা তাঁদের সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া থেকে বহু দূরে রয়েছেন। তাঁদের মনোভাবে যে পরিবর্তন ঘটছে, সেটির সপক্ষে বেশির ভাগ প্রমাণই কল্পনাপ্রসূত। তবে ইতিমধ্যে ভ্রমণ, পর্যটন, শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার বিষয়টি বোধগম্য হয়ে উঠেছে।

কথা হয় ফিলিপ গ্লোয়াগুয়েন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। ফ্রান্সের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রাভেল গাইড লে গাইড দু রুতার্দের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। গ্লোয়াগুয়েন প্যারিসে একটি ডেস্কে বসে ছিলেন। তিনি জানান, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তাঁর লেখা বইয়ের ফরমাশ ২৫ শতাংশ কমে গেছে। ‘এটা একটা বড় পতন,’ বলেন তিনি।

ল্যুভর জাদুঘরের সামনে পর্যটকদের ভিড়

সম্পর্কিত নিবন্ধ