এবার এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির আরও স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এই গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আরও ৬৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৬১ লাখ ৭ হাজার ২২১ টাকা।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.

জাকির হোসেন আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

দুদক লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছে, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন ছিলেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সচিব। এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট মর্জিনা আক্তার, সাদ্দাম হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ভুয়া ঋণ ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে হস্তান্তর করেছেন। এসব অর্থ হস্তান্তর হলে পরবর্তী সময়ে সেটি উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে যাবে বলে দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া এস আলম গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির নামে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদক আদালতকে জানিয়েছে, এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে–বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। এভাবে তাঁরা দেশে–বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। দুদক তার অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁদের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।

এর আগে গত ১০ মার্চ এস আলম গ্রুপের আরও স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নামে থাকা ৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। তিন দফায় সাইফুল আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নামে থাকা ১৬ হাজার কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ১৪ জানুয়ারি মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন জায়গায় থাকা জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, ভবনসহ ২০০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করারও আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এ ছাড়া গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১২৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। দুদকের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়েছিল, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক।

গত বছরের ৭ অক্টোবর মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এস আলম গ র প র

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইয়ের সামনে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আবদুল কাদের মিলন (৩৬) নামে যুবলীগের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মিলন চরহাজারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইসমাঈলের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্বজন জানান, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মিলন বাড়ি থেকে চলে যান। এর পর তিনি সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করেন। চার দিন আগে তিনি দেশে ফেরেন।

মিলনের ছোট ভাই আবদুর রহিম বলেন, ‘আমি অটোরিকশাচালক। রাতে অটোরিকশায় বড় ভাইকে ফেনীর দাগনভূঞা থেকে নিয়ে গ্রামে ফিরছিলাম। পথে রাত ৯টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের চরপার্বতী ইউনিয়নের চৌধুরীরহাট এলাকায় একটি মোটরসাইকেল আমাদের পিছু নেয়। একই ইউনিয়নের পোলের গোড়া এলাকায় পৌঁছলে মোটরসাইকেল আরোহীরা পথরোধ করে। পরে আমার ভাইকে অটোরিকশা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামায় তারা। সেখান থেকে মারতে মারতে পার্শ্ববর্তী এতিমখানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে আরও কয়েকজন মিলে তাঁকে পেটাতে থাকে। প্রত্যেকের হাতে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র ছিল। এ সময় ভাইকে উদ্ধার করতে গেলে আমাকেও মারধর করে তারা।’

আবদুর রহিম জানান, পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ৩টার দিকে মিলনের মৃত্যু হয়।
মিলনের স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর সঙ্গে এলাকার মেম্বার যুবদল নেতা সুমন ও মাঈন উদ্দিনের যোগাযোগ ছিল। তারা এলাকায় ফেরার আশ্বাস দেওয়ায় তিনি বাড়িতে আসেন। তাঁকে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির লোক হত্যা করেছে।’

উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির বেলায়েত হোসেনের দাবি, এ ঘটনায় জামায়াত কিংবা ছাত্রশিবিরের কেউ জড়িত নয়। অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন বলেন, এলাকার লোক মিলনকে হত্যা করেছে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, এ ঘটনায় মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ১ নম্বর সেক্টর থেকে গতকাল দেলোয়ার হোসেন নয়ন নামে একজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিন উপজেলার খৈসাইর এলাকায় এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুর সদরের পূর্ব চৌপল্লী এলাকায় সন্ত্রাসীর গুলিতে রুবেল হোসেন নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। রুবেল সদর উপজেলার আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ