মদ খাওয়ার কথা লেখছেন, তোর হাড্ডি ভেঙে দেব, সাংবাদিককে বিএনপির নেতার হুমকি
Published: 9th, April 2025 GMT
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধরের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত সোমবার দৈনিক ইত্তেফাকে একটি সংবাদ প্রকাশের জেরে ওই দিন দুপুরে সিঙ্গাইর পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক নূরে আলম বাবুল তাঁর মোবাইল ফোন থেকে পত্রিকাটির সিঙ্গাইর উপজেলা প্রতিনিধি মানবেন্দ্র চক্রবর্তীকে ফোন করে সংবাদ প্রকাশের কারণ জানতে চান। এ সময় নূরে আলম বলেন, ‘যুবদলের মদ খাওয়ার কথা লেখছেন? তোর হাড্ডি ভেঙে দেব। ২০১৩ সালের কথা মনে নাই? তোর কোন বাপ আছে দেখিয়ে দেব। আওয়ামী লীগের আমলে পার পেয়ে গেছস। তোর কিছুই হয় নাই। এখন কথা কম। কুত্তার বাচ্চা। তুই গোবিন্দল গ্রাম সম্বন্ধে কিছুই জানস না। তোর কী অবস্থা করি দেখবি।’
সাংবাদিক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, থানায় মাতাল অবস্থায় গ্রেপ্তার দুই যুবদল নেতার সংবাদ ইত্তেফাকসহ অন্য সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। ইত্তেফাকে সংবাদ প্রকাশের কারণে নূরে আলম তাঁকে হুমকি দেন। ভবিষ্যতে নূরে আলম তাঁর বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারেন। এ নিয়ে তিনি আতঙ্কে রয়েছেন। তাই জিডি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিঙ্গাইর পৌর বিএনপি নেতা নূরে আলম বাবুল বলেন, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রভাব খাটিয়ে সাংবাদিক মানবেন্দ্র তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক মানবেন্দ্রকে কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা জিডি করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সাংবাদিককে হুমকির নিন্দা জানিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতা বলেন, থানায় মাতলামি করার কারণে যুবদলের দু’জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নূরে আলম বাবুল কেন সাংবাদিককে হুমকি দেবেন? অভিযোগের সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, নূরে আলমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানার ওসিকে বলা হয়েছে।
ওসি তৌফিক আজম বলেন, নূরে আলমের লোককে গ্রেপ্তার করায় থানার এক এসআইকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। গত ৫ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে স্টাফদের বলে দিয়েছেন নূরে আলম যেন থানায় ঢুকতে না পারেন। সাংবাদিকের জিডির বিষয়টি তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ ব এনপ আলম ব ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা
কিশোরগঞ্জ শহরের আলোচিত পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে বর্তমানে আছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা। সর্বশেষ শনিবার দান বাক্সের টাকা রূপালী ব্যাংকে জমার পর পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিাটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রতি তিন মাস বা তার কিছু বেশি সময় পরপর মসজিদের দান বাক্সগুলো খোলা হয়। তাতে প্রতিবারই কয়েক কোটি টাকা পাওয়া যায়। সর্বশেষ শনিবার ১১টি দান বাক্স খুলে মিলেছে ২৮ বস্তা টাকা। গণনা শেষে পাওয়া গেছে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার।
সেনা সদস্য, পুলিশ ও আনসারের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলে মোট ৩৯৪ জন মানুষ টাকা গণনায় অংশ নেন। সব টাকা রূপালী ব্যাংকের হিসাবে জমা করা হয়েছে। বিদেশি মুদ্রা আর অলংকারের মূল্য নির্ধারণ করে সেসব টাকাও ব্যাংকে রাখা হবে।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেছেন, দান বাক্সে পাওয়া টাকার লভ্যাংশ থেকে অসহায় জটিল রোগীদের অনুদান দেওয়া হয়। মসজিদ কমপ্লেক্স মাদ্রাসার এতিম ছাত্রের সব খরচ, আনসার সদস্যদের বেতনসহ মসজিদ পরিচালনার যাবতীয় খরচও মেটানো হয়। জমানো টাকা থেকে পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের আরও দুটি শেড নির্মাণ করা হবে। এছাড়া একটি আধুনিক পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। ৬ তলা বিশিষ্ট নতুন মসজিদ কমপ্লেক্সে একসঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ৫ হাজার নারী মুসল্লির জন্যও পৃথক ব্যবস্থা থাকবে।
কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম দিকে নরসুন্দা নদীর দক্ষিণ তীরে হারুয়া এলাকায় প্রায় পৌনে দুইশ’ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ১৯৭৯ সাল থেকে। তখন থেকে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হন। সাধারণত পৌর মেয়ররা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।