ফ্রান্সের ফুটবল–সমর্থকদের মধ্যে সবচেয়ে অজনপ্রিয় ফুটবলারদের তালিকা করলে ওপরের দিকেই থাকবে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের নাম। ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনালে ও ফাইনালের পর এই আর্জেন্টাইন গোলকিপারের বিভিন্ন আচরণে ক্ষুব্ধ ছিলেন ফরাসিরা। এ নিয়ে কথা চালাচালি গড়িয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও।

সেসব ঘটনার পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো থামেনি ‘এমিলিয়ানো মার্তিনেজ–ফ্রান্স লড়াই’। এবার যেমন ফরাসি দর্শকদের খোঁচা দিতে আর্জেন্টিনার ক্যাপ পরে প্যারিসে গেছেন মার্তিনেজ। একজন আর্জেন্টাইন হিসেবে জাতীয় দলের ক্যাপ তিনি পরতেই পারেন। কিন্তু মার্তিনেজ এবার প্যারিসে গেছেন অ্যাস্টন ভিলার হয়ে, পিএসজির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলতে। তবে ক্লাবের হয়ে খেলতে এলেও মার্তিনেজ শুরুতেই বুঝিয়ে দিলেন—‘আমি আর্জেন্টাইন, আমার চারটা ট্রফি আছে।’

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ফরাসিদের কাছে খলনায়ক হয়ে ওঠা মার্তিনেজ ফ্রান্সে সর্বশেষ গিয়েছিলেন গত বছর। ইউরোপা কনফারেন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ভিলার প্রতিপক্ষ ছিল লিল। ম্যাচের সময় ভিলার গোলপোস্টে দাঁড়ানো মার্তিনেজকে অনবরত খেপিয়ে গেছেন লিলের দর্শকেরা।

গত মাসে সেই ম্যাচের স্মৃতিচারণা করে মার্তিনেজ বলেছিলেন, ‘পুরো ম্যাচে ওরা আমাকে অপমান করে গেছে। আমার পুরো জীবনে কখনো এত অপমানের শিকার হইনি। ওরা যা পেরেছে করেছে, কিন্তু ১২০ মিনিটে আমি ওদের কিছুই করি নাই।’

৩২ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন গোলকিপারের কথায় স্পষ্ট, ফরাসি দর্শকদের ওপর তাঁর ক্ষোভও কম নয়। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির বিপক্ষে মাঠে নামলেও একই আচরণের শিকার হতে হবে—এমনই হয়তো ধরে নিয়েছেন।

আরও পড়ুনমার্তিনেজ ‘উগ্র’, ফার্নান্দেজের গান ‘জঘন্য’, বললেন ফরাসি ডিফেন্ডার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ম্যাচের সময় একজন খেলোয়াড়ের কিছু করার সুযোগ নেই বলেই হয়তো ফ্রান্সে পা রাখার মুহূর্তটিকেই ‘আগাম আক্রমণের’ জন্য কাজে লাগিয়েছেন মার্তিনেজ। দলের অন্যরা অ্যাস্টন ভিলার জার্সি পরে প্যারিসে গেলেও মার্তিনেজকে বিমানবন্দরে দেখা গেছে আর্জেন্টিনার ক্যাপ মাথায়। ক্যাপের সামনের অংশে আর্জেন্টিনার পতাকা, সঙ্গে খচিত ফিফা বিশ্বকাপ, দুটি কোপা আমেরিকা ও ফিনালিসিমা ট্রফির ছবি। মার্তিনেজের বার্তা স্পষ্ট, ‘আমি আর্জেন্টাইন, যার চারটা ট্রফি আছে।’

ভিলার হয়ে আসা মার্তিনেজের আর্জেন্টাইন উপস্থিতি ফরাসিদের কেমন তাঁতিয়ে দেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে পিএসজি–অ্যাস্টন ভিলা মুখোমুখি হচ্ছে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।

আরও পড়ুনমার্তিনেজ, অর্ধেক মানুষ তুমি অর্ধেক ‘জন্তু’০৫ জুলাই ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলিদের বাকিংহাম প্যালেসে কেন ঢুকতে দিতেন না রানি এলিজাবেথ

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদন সারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লেমি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লন্ডনে তাঁরা গোপনে এ বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ডেভিড লেমির নিন্দা করেছেন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদেরা। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ রাজনীতিকদের এ অবস্থান নতুন নয়। প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথও ইসরায়েলকে পছন্দ করতেন না।

ইসরায়েলের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন নিজেই এ কথা স্বীকার করেছেন। বেশ কয়েক মাস আগে লন্ডনে হাইফা টেকনিয়ন ইনস্টিটিউটের একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, প্রয়াত রানি মনে করতেন প্রত্যেক ইসরায়েলি ‘একজন সন্ত্রাসী নয়তো সন্ত্রাসীর সন্তান।’ শুধু তা–ই নয়, তিনি বাকিংহাম প্যালেসে কোনো ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে ঢুকতেও দিতেন না।

যুক্তরাজ্যের বাকিংহাম প্যালেসে রাজা বা রানিসহ রাজপরিবারের সদস্যরা থাকেন। বর্তমানে রাজা তৃতীয় চার্লস রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে এখানেই থাকেন।

ইসরায়েলের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেছিলেন, ‘রানি এলিজাবেথ ও আমাদের (ইসরায়েল) মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা জটিল ছিল।’

রিভলিন ইসরায়েলের দশম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অন্যদিকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ২০২২ সালে মারা যান।

সাবেক এই ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তিনি (রানি এলিজাবেথ) আন্তর্জাতিক কোনো অনুষ্ঠান ছাড়া প্যালেসের (বাকিংহাম) ভেতরে কোনো ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে ঢুকতে দিতেন না।’

মাঝেমধ্যেই মনে করা হতো, রানি এলিজাবেথের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল।

রানি এলিজাবেথ ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে মারা যান। ৭০ বছর সিংহাসনে থাকাকালে তিনি ১২০টির বেশি দেশ ঘুরেছেন। জীবদ্দশায় লাখ লাখ মাইল ভ্রমণ করলেও কখনো ইসরায়েলে যাননি।

আরও পড়ুনদ্বিতীয় এলিজাবেথ যেভাবে ব্রিটেনের রানি হয়ে উঠলেন০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রানির মৃত্যুর পর প্রভাবশালী কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইসরায়েল গ্রুপের অনারারি প্রেসিডেন্ট স্টুয়ার্ট পলক দাবি করেছিলেন, ‘রাজপরিবারের সদস্যদের ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।’

রানি এলিজাবেথের ইসরায়েল সফর না করা নিয়ে ২০১২ সালে লিখেছিলেন দেশটির প্রভাবশালী সংবাদপত্র হারেৎজের সাবেক এডিটর–ইন–চিফ ডেভিড লানদাও। তিনি লিখেছিলেন, ‘যদি তিনি (রানি) ইহুদি রাষ্ট্র সফর করতে চাইতেন অথবা তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠ কেউ সেখানে যেতে চাইতেন, তাহলে তিনি জোর করে তা করতে পারতেন এবং নিজের ইচ্ছাপূরণ করতে পারতেন।’

কারও কারও ধারণা, ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণার আগে ১৯৪০-এর দশকে ফিলিস্তিনে যুক্তরাজ্যের ম্যান্ডেটের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংস বিদ্রোহের কারণে ইসরায়েলের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণে করতেন রানি এলিজাবেথ।

১৯৮৪ সালে জর্ডান সফর করেন রানি এলিজাবেথ। এ সময় ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান দখলকৃত পশ্চিম তীরের আকাশে উড়ে যেতে দেখে ‘কতটা ভীতিকর’ ছিলেন তা নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনরানি প্রথম এলিজাবেথের ছিল বিশাল গুপ্তচর বাহিনী ০১ জুলাই ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামাজিক অপরাধ কমছে না কেন
  • সেলিম মাহমুদসহ রবিনটেক্সের গ্রেপ্তার শ্রমিকদের মুক্তি দাবি
  • টিপকাণ্ডে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত কনস্টেবলের মামলা
  • টিপকাণ্ড: লতা সমাদ্দার, সুবর্ণা মোস্তফাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
  • অল্প বয়সেই সন্তান জেদী হয়ে উঠেছে?
  • পবিপ্রবির শিক্ষার্থীর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, বলছেন চিকিৎসকরা
  • ইসরায়েলিদের বাকিংহাম প্যালেসে কেন ঢুকতে দিতেন না রানি এলিজাবেথ
  • বন্ধু কি আপনাকে ঈর্ষা করেন? যেভাবে বুঝবেন
  • মনে হচ্ছে মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না, এ অবস্থায় নির্বাচন সম্ভব নয়: নাহিদ ইসলাম 
  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের প্রতিবাদে কুবিতে মানববন্ধন