আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হলো দুজনকে
Published: 9th, April 2025 GMT
রাজশাহীর দূর্গাপুরে পরকীয়ার অভিযোগ এনে এক যুগলকে আটক করে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে এলাকাবাসী। এ রিপোর্ট লেখার সময় বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তারা আমগাছের সঙ্গে বাঁধা ছিল। তবে আটক দুজনের বক্তব্যে ভিন্নতা পাওয়া গেছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের নান্দিগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দুজনকে বেঁধে রাখা হলেও মারধর করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আতিকুর রহমান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ছেলেটির নাম আহসান হাবীব। মেয়েটি তারই প্রতিবেশী। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তিনি বাড়ি ফেরার পথে আহসান হাবীবের ঘরের ভেতর থেকে অশালীন কথা শুনতে পান। কৌতূহলে জানালা দিয়ে উঁকি দিলে তিনি দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাদের ঘর থেকে বের করে এনে গাছের সঙ্গে আটকে রাখা হয়েছে।
আতিকুর বলেন, ‘‘আহসান হাবীব এলাকায় লম্পট হিসেবে পরিচিত। একাধিকবার তাকে নিয়ে নারী ঘটিত বিচার এলাকায় হয়েছে।’’
আহসান হাবীরের দাবি, স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে জোর করে আটকে রেখেছে। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। যদিও তার কথার সঙ্গে ভুক্তভোগী ওই নারীর কথার মিল পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, তিনি দুপুর বেলা পটলের খেত থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় আহসান হাবীব দুই হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। পরে স্থানীয়রা তাদের দুজনকে আটক করে।
বিকেল ৫টার সময় পাহারা দিতে দুজন গ্রামপুলিশকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়। তাদের একজন সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘চেয়ারম্যানের নিদের্শে পাহারা দিচ্ছি। চেয়ারম্যান ও মাতবর আসলে স্থানীয়ভাবে বিষয়টা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে।’’
এলাকায় সালিশ করেন আবু সাঈদ। এ প্রসঙ্গে তার কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘‘আমি এখনও দোকান বন্ধ রেখে ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি। এলাকাবাসী বারবার ফোন দিচ্ছে। আমি বলেছি, তোমরা তাদের আইনের হাতে তুলে দাও। কিন্তু তারা আমার কথা শুনছে না।’’
নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ আলী সরদার বলেন, ‘‘খবর পেয়ে আমি গ্রামপুলিশ পাঠিয়েছি। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। কারণ ধর্ষণের ঘটনার বিচার বা ফয়সালা করার অধিকার আমার নাই। আমি পুলিশে খবর দিতে বলেছি।’’
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরল হুদা বলেন, ‘‘বিষয়টা শুনেছি। কিন্তু এখনও অভিযোগ পাইনি। শুনেছি তারা বিয়ে করতে চায়। তাহলে আমাদের কিছু করার নাই।’’
কিন্তু তাদের তো বেঁধে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘‘তাদের কে বেঁধে রেখেছে? এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তাদের বেঁধে রাখা যাবে না। আমি দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
কেয়া//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহস ন হ ব ব দ জনক
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে ছুরিকাঘাত ও সংঘর্ষে দুই প্রাণহানি, আহত ৩০
নড়াইল সদরে ছুরিকাঘাতে বাসের সুপারভাইজার ও কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকালে নড়াইল শহরের নতুন বাস টার্মিনালে নড়াইল এক্সপ্রেস পরিবহনের সুপারভাইজারকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। আর কালিয়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের সময় হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুট করেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। পুলিশ ২০ জনকে আটক করেছে।
জানা যায়, নড়াইল এক্সপ্রেস পরিবহনের ওই সুপারভাইজারের নাম মোশারফ মুন্সী মুসা (৪৫)। গতকাল সকাল ৬টার দিকে তিনি নতুন বাস টার্মিনালে বসে ছিলেন। এ সময় কয়েক দুর্বৃত্ত এসে তাঁকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মুসা সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের দলজিৎপুর এলাকার শামসুর রহমান মুন্সীর ছেলে। নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, জড়িতদের শনাক্ত করতে চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, কালিয়ার কাঞ্চনপুরে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মিলন মোল্যার পক্ষের সানোয়ার মোল্যাকে মারধর করে আফতাব মোল্যার লোকজন। এর জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মিলন মোল্যার লোকজন আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। আহত ফরিদ মোল্যা (৫৭) রাত ৯টার দিকে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ২০টি বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন দেয় প্রতিপক্ষ। রাতেই যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে উভয় পক্ষের ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্য মোতায়েন রয়েছে।