নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত
Published: 9th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডের গ্রীন গার্ডেন রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতি, দলের কর্মকাণ্ড, সংগঠনের উন্নয়ন এবং আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, আমাদের দল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। দলকে আরও শক্তিশালী করতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
এসময় নেতাকর্মীরা তাদের বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন এবং দলীয় কর্মকাণ্ড আরও ত্বরান্বিত করার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংহতি বৃদ্ধির পাশাপাশি দলের কর্মকাণ্ডের আরও উন্নতি সাধনের আশ্বাস দিয়ে তারা ভবিষ্যতে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক, দিপু ভুইয়া, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসিকুল ইসলাম রাজিব, আজহারুল ইসলাম মান্মান, মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, শহিদুল ইসলাম টিটু, বাছির উদ্দিন বাচ্চু, মজিবুর রহমান ভূইয়া, আশরাফুল হক রিপন, আনোয়ার সাদাত সায়েম, ইউসুব আলী ভূইয়া, জুয়েল আহমেদ, রিয়াদ মুহাম্মাদ চৌধুরী, সেলিম হক রুমি, মোতাকুর আহমেদ, একরামুল কবির মামুন, নাদিম হাসান মিঠু, রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, অকিল উদ্দিন ভূইয়া, শামসুল হক খান, তাশিকুল ইসলাম তাশকিন, শাজাহান মেম্বারসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সকল সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ মার্চ বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচবি রুহুল কবির রিজভী নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৫ সদস্যদের আহ্বায়ক কমিটিকে ৩৩ সদস্যে উন্নতি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন। এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি।
জানাগেছে, ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। আর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় অতিসত্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র কমিটি ঘোষণা করা হবে।
আর গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের এই কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আসতে থাকে।
অভিযোগ তদন্তে একটা কমিটি গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। সেই কমিটির সুপারিশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হল।
তার আগে, ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে আহ্বায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
পরে ২০২৩ সালের ১৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল এলাকায় দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন সভাপতি ও গোলাম ফারুক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল ম হ ম মদ গ য় স ব এনপ র স ল ইসল ম কম ট র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের সাবেক নেতা জাকির কারামুক্ত, গাড়িবহর নিয়ে অনুসারীদের বরণ
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান সাজার মেয়াদ শেষে কারামুক্ত হয়েছেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তিনি।
এদিকে জাকির খানকে বরণ করে নিতে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। এতে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ফোরকান ওয়াহিদ জানান, ১৯৯৪ সালের সন্ত্রাস দমন আইনের একটি মামলার রায়ে জাকির খানের ১৪ বছরের সাজা হয়েছিল। আপিল করার পর উচ্চ আদালতে সাজা কমিয়ে আট বছর করা হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ আবেদনে তাঁর সাজা কমে পাঁচ বছর করা হয়। পাঁচ বছরের সাজার মেয়াদ শেষে আজ রোববার সকালে জাকির খানকে কারামুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের মুক্তির খবরে আজ সকাল থেকে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকলে ও প্রাইভেট কারের বহর নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। নেতা-কর্মীরা ট্রাকে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে মোটরসাইকেলের বহর বের করেন। জেলা কারাগারের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড় হয়। এতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগার থেকে বের হন জাকির খান। এ সময় তাঁর অনুসারীরা তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে তিনি হুডখোলা গাড়িতে চড়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে দেওভোগের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম খন্দকার হত্যাসহ ৪টি হত্যাসহ মোট ৩৩টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন সময় কারাগারে ছিলেন তিনি। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জাকির খান আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। শহরের দেওভোগ এলাকায় জাকির খান তাঁর বিশাল বাহিনী গড়ে তোলেন। দেওভোগ এলাকার সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে হত্যা করে শহরে ত্রাস সৃষ্টি করেন। ২০০৩ সালে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে জাকির খান দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকার পর গোপনে দেশে ফিরে এসে রাজধানীর বসন্ধুরা আবাসিক এলাকায় পরিচয় গোপন করে সপরিবার বসবাস শুরু করেন। ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তলসহ জাকির খানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর পর থেকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে ছিলেন তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে জাকির খানসহ সব আসামি খালাস পান।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সাজা শেষে জাকির খান কারামুক্ত হয়েছেন। তিনি ২৬টি মামলায় খালাস পেয়েছেন। তিনটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, সেই মামলাগুলোতে তিনি জামিনে রয়েছেন।