ঘুষের পাঁচ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার নৌ অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও শিপ সার্ভেয়ার এ কে এম ফখরুল ইসলামকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ রায় দেন।

দণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো দুই মাস কারাভোগ করতে হবে।

দুদক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর সাজার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, এদিন এ কে এম ফখরুল ইসলাম আদালতে হাজির ছিলেন। রায় শেষে জামিন বাতিল করে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

২০১৭ সালের ১৮ জুলাই মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে নিজের কার্যালয়ে বসে একটি জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় ফখরুলকে আটক করে দুদক। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।

মামলায় বলা হয়, বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস নামে একটি প্রতিষ্ঠান ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২২টি জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তরে আবেদন করে। কিন্তু জাহাজের আকারভেদে প্রতি নকশা অনুমোদনের জন্য বিভিন্ন সময়ে ৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন প্রকৌশলী একেএম ফখরুল ইসলাম। 

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল এমভি নওফেল লিহান জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন ফখরুল ইসলাম। ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বেঙ্গল মেরিন কর্তৃপক্ষ ওই বছর ১৮ জুলাই তাকে দাবিকৃত ঘুষ প্রদানে সম্মত হয়ে বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনকে অবহিত করে। 

বিষয়টি জানার পর দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে বিশেষ টিম সকাল থেকে ওই ভবনের চারদিকে অবস্থান নেয়। এরপর ওইদিন বেলা ২টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের অথরাইজড পারসন এএনএম বদরুল আলমের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার পর ওই টাকাসহ হাতে নাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু হয়।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফখর ল ইসল ম র ল ইসল ম ২০১৭ স ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই

বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের তুলনায় জাপানে আয়ের সুযোগ বেশি। জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিনা খরচে দেশটিতে যাওয়ার সুযোগ আছে। জাপানে ২০১৭ সাল থেকে কারিগরি শিক্ষানবিশ হিসেবে কর্মী যাচ্ছেন। নতুন করে বিনা খরচে আরও কর্মী পাঠাতে দেশটির বেসরকারি একটি কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশি কর্মীরা বিনা মূল্যে জাপানি ভাষা ও কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। প্রশিক্ষিত কর্মীরা বিনা অভিবাসন ব্যয়ে জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। জাপানে বেশি হারে কর্মী পাঠানোর সুযোগ তৈরি হবে।

কেয়ারগিভার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্যাকেজিং, প্লাস্টিক মোল্ডিং, রড বাইন্ডিং, স্ক্যাফোল্ডিং, কার পেইন্টিং, ওয়েল্ডিং ও অটোমোবাইল মেকানিক খাতে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন কর্মীরা। চুক্তি শেষে জাপান থেকে ফিরে আসা কর্মীরা দেশীয় শিল্প খাতে তাঁদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, গত সাত বছরে ৬৯৫ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন জাপানে গেছেন। নতুন এ সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে আরও বেশি কর্মীর জাপানে যাওয়ার সুযোগ হবে। নতুন এ সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।

সমঝোতা স্মারকে সই করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া ও জাপানের বেসরকারি কোম্পানি ওনোডেরা ইউজার রান ইনকরপোরেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট তাকাশি সুগেনো।

বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানে এই সমঝোতা স্মারককে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক আখ্যায়িত করে নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া বলেন, উন্নত দেশগুলোর চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনবল তৈরি ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে।

এর আগে ২০১৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল ম্যানপাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আইএম) জাপানের সঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারকের আওতায় সরকারিভাবে বর্তমানে দক্ষ শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে দেশটিতে। দেশের বিভিন্ন জেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে জাপানি ভাষার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।

আরও পড়ুন৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে চাকরির সুযোগ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চার মাস মেয়াদি জাপানি ভাষা শেখার এসব প্রশিক্ষণের পর পরীক্ষায় বসেন কর্মীরা। উত্তীর্ণ হলে আইএম জাপানের ব্যবস্থাপনায় আরও চার মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর শিক্ষানবিশ হিসেবে তাঁদের জাপানে নিয়ে যাওয়া হয়। জাপানে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত বেতন পান কর্মীরা।

জাপানের গড় আয়ু ৮৪ বছর। এসব বয়স্ক মানুষের সেবার জন্য দক্ষ জনবল দরকার। নির্মাণশিল্প, প্রযুক্তি, নার্সিং, কৃষি ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম খাতে কাজের সুযোগ আছে সেখানে। তবে বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে জাপান বরাবরই রক্ষণশীল। জাপানি ভাষা শিক্ষা ছাড়া দেশটিতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আরও পড়ুনবিনা খরচায় জাপান যেতে যা লাগবে০৬ জানুয়ারি ২০২০

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভাসানচর হাতিয়ার নাকি সন্দ্বীপের, কেন এই দ্বীপ নিয়ে বিরোধ
  • বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই