হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় ৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড
Published: 9th, April 2025 GMT
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ছাবু মিয়া হত্যা মামলার চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে মামলার রায় ঘোষণা করেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক একেএম কামাল উদ্দিন। আদালতের পেশকার তপন শীল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আব্দুল মৌলার ছেলে আবুল, বার চান্দুরা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে এমরান, মারাজ মিয়ার ছেলে সোলেমান ও মৃত হরমুজ আলীর ছেলে জাহেদ।
আরো পড়ুন:
মহেশখালীতে জমি নিয়ে বিরোধে গুলি, নিহত ১
নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
মামলার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার বার চান্দুরা গ্রামের ছাবু মিয়ার প্রথম স্ত্রী রাশেদা বেগমকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ২০০৭ সালের মাঝামাঝি ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন প্রতিবেশী এমরান মিয়া। এরপর ছাবু মিয়াও আরেকটি বিয়ে করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।
এরই জেরে ২০০৯ সালের ১৩ এপ্রিল বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ছাবু মিয়াকে ডেকে নিয়ে যান এমরান, সোলেমান ও আবুল। এরপর থেকে ছাবু মিয়া নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন ১৪ এপ্রিল গ্রামের হাওরের ছাবু মিয়ার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাই হাফিজ মিয়া। পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আজ মামলার রায় দিলেন বিচারক।
আদালতের পেশকার তপন শীল বলেন, “মামলায় পাঁচজন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে। অপর আসামি মারাজ মিয়া মামলা চলাকালে মারা যান। এ কারণে মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক রায় দিয়েছেন।”
মামলার বাদী নিহত ছাবু মিয়ার ভাই হাফিজ মিয়া বলেন, “আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। দ্রুত আসামিদের সাজা কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি একেএম বজলুল আমীন বলেন, “আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। আমি মনে করি, এ রায় একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
ঢাকা/মামুন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাভারে দিনদুপুরে আবার চলন্ত বাসে নারী যাত্রীদের স্বর্ণালংকার ছিনতাই
ঢাকার অদূরে সাভারে দিনদুপুরে যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে চালককে জিম্মি করে আবার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এবার ছিনতাইকারীরা নারীদের টার্গেট করে বাসে স্বর্ণালংকার ছিনতাইয়ের পর বাস থেকে নেমে যায়।
আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সাভারের পুলিশ টাউন এলাকায় একটি সেতুর ওপর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে সাভার পরিবহন লিমিটেডের যাত্রীবাহী একটি বাসে এ ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীরা তিন নারীর স্বর্ণালংকার ছিনতাই করেন।
বাসের কয়েকজন যাত্রী জানান, আজ সকালে গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে ‘সাভার পরিবহন লিমিটেড’ নামের যাত্রীবাহী একটি বাস ঢাকার সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। দুপুর ১২টার দিকে বাসটি সাভারের পুলিশ টাউন এলাকার সেতুর ওপর পৌঁছালে বাসে যাত্রীবেশে থাকা তিন থেকে চারজন ছিনতাইকারী ধারালো ছুরি বের করে চালককে বাস থামাতে বাধ্য করেন। এরপর নারী যাত্রীদের কাছ থেকে ছিনতাই শুরু করেন। তাঁরা তিনজন নারী যাত্রীর সোনার চেইনসহ অন্যান্য অলংকার লুট করে দ্রুত বাস থেকে নেমে যান।
ব্যাংক টাউন এলাকার বাসিন্দা তায়েফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রীবেশে ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী ৩ থেকে ৪ জন ছিনতাইকারী ছিলেন। তাঁরা সম্ভবত ব্যাংক টাউন বাসস্ট্যান্ড (ঘটনাস্থলের অদূরে) থেকে বাসে উঠেছিলেন। বাসটি পুলিশ টাউন সেতুর ওপরে পৌঁছালে তাঁরা চালককে বাস থামাতে বাধ্য করেন। ছিনতাইকারীরা ছুরি বের করে বাসের নারী যাত্রীদের স্বর্ণালংকার ছিনতাই করে দ্রুত বাস থেকে নেমে যান। তাঁরা অন্য কারও কাছ থেকে মুঠোফোন বা অন্য কিছু নেননি। বাসে ২০ থেকে ২৫ জনের মতো যাত্রী ছিলেন।
আরও পড়ুনসাভারে দিনের বেলায় যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে ছিনতাই০৫ এপ্রিল ২০২৫তিনি বলেন, ছিনতাইকারীরা তাঁর স্ত্রীর গলায় থাকা একটি সোনার চেইনও ছিনিয়ে নিয়েছেন। পরে চালক বাসটি চালিয়ে গাবতলী পৌঁছালে যাত্রীরা চালককে মারধর করে একটি কাউন্টারে আটকে রাখেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুনসাভারে ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে দিনদুপুরে চলন্ত বাসে ডাকাতি০২ মার্চ ২০২৫এর আগে গত ২ মার্চ দুপুরে দিকে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় রাজধানী পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এরপর ৪ এপ্রিল একই এলাকায় ইতিহাস পরিবহনের আরেকটি চলন্ত বাসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
সম্প্রতি সাভারের মহাসড়ক ও চলন্ত বাসে ছিনতাই প্রতিরোধে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ছিনতাইপ্রবণ এলাকায় চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে ঢাকা জেলা পুলিশ। ৫ এপ্রিল থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে আজ পুলিশ টাউন এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল।
আরও পড়ুনঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সেনাবাহিনীর নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম০১ এপ্রিল ২০২৫