উখিয়ায় সংঘর্ষ, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৪
Published: 9th, April 2025 GMT
কক্সবাজারের উখিয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চারজনে। নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী ও দুইজন পুরুষ রয়েছে।
সর্বশেষ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মারা যান রওশন আরা (৪২)।
এর আগে রবিবার (৬ এপ্রিল) সকালে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে নিহত হন মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৫), আব্দুল মান্নান (৩৭) এবং শাহিনা বেগম (৪০)। নিহতরা সম্পর্কে চাচাতো ভাইবোন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন জানান, জমির সীমানা প্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাঁধে। উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়, এতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেই গুরুতর আহত হন।
আহতদের মধ্যে আব্দুল মান্নানের বোন পিংকি কক্সবাজার ডিজিটাল হাসপাতালে এবং মাওলানা মামুনের ছোট ভাই আব্দুল হামিদ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পিংকির অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিনের জমি বিরোধের জেরে এক সময়ের স্নেহের পারিবারিক সম্পর্ক এখন প্রাণঘাতী শত্রুতায় রূপ নিয়েছে। সংঘর্ষে দা, কুড়াল ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই এতে জড়িয়ে পড়েন, যা মর্মান্তিক।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
তিনি আরও বলেন, “একটি জটিল পারিবারিক বিরোধ থেকে ঘটনার সৃষ্টি। পুলিশ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
ঢাকা/তারেকুর/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলের কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছে। নিহত ফরিদ মোল্যা কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত সুরত মোল্যার ছেলে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদ মোল্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান।
এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে বশির মুন্সি নামে আরেকজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
জানা যায়, উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ইতোপূর্বে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে দু’পক্ষের মধ্যে। এ নিয়ে থানায় উভয়পক্ষের একাধিক মামলাও রয়েছে। ঈদের দিন থেকেই গ্রামটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। নিহত ফরিদ মোল্যা আফতাব মোল্যা গ্রুপের সমর্থক ছিলেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার রহমান নড়াইল আদালত থেকে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে একা পেয়ে আফতাব মোল্যার লোকজন মারপিট করে। এ ঘটনার জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মিলন মোল্যা পক্ষের লোকজন আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষ স্কুল মাঠে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘণ্টাব্যাপি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
আফতাব মোল্যা পক্ষের আহতদের মধ্যে রয়েছেন- করিম মুন্সি (৪৯), হুসাইন শেখ (১৮), আশরাফ মোল্যা (৫০), বশির মুন্সি (৪৫), করিম মুন্সী (৩৭), জালাল মুন্সি (৪৭), নাহিদ মোল্যা (২৫), করিম মোল্যা (১৬), সহিদ মুন্সি (৪০)।
মিলন মোল্যা পক্ষের দের মধ্যে রয়েছেন- তৌহিদ মোল্যা (৫০), আলমিস শেখ (৩৫) নিরব মোল্যা (১২), হাসিব মোল্যা (১৫), কিবরিয়া শেখ (২৮), ওসমান মোল্যা (১৫), কামাল কাজী (৪০), তরিক শেখ (২৪), জাকারিয়া শেখ (২৫) ও দিদার শেখ (১৮), হুমায়ন কাজী (৩৫), ওহাব কাজী (৪৫), পিয়ার মোল্যা (৩৪)।
ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কালিয়া থানায় হন্তান্তর করে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, “এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/শরিফুল/টিপু